পাঁচ কেজি করে চাল-আটা কিনতে দীর্ঘ অপেক্ষা! - Shimanterahban24
June 7, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper

পাঁচ কেজি করে চাল-আটা কিনতে দীর্ঘ অপেক্ষা!

1 min read

রাজধানীর কালশী কবরস্থানের সামনে প্রতি বুধবার সকাল ৯টায় হাজির হয় সরকার পরিচালিত ওএমএসের ট্রাক। ওই ট্রাক থেকে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি চাল, ২৪ টাকা দরে পাঁচ কেজি খোলা আটা কিনতে পারে একজন নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ। তবে গতকাল বৃষ্টির কারণে সকাল ১০টায় শুরু হয় এই কার্যক্রম।

কালশী কবরস্থানের সামনে ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে এসেছিলেন ওই এলাকার আব্দুল মান্নান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্যের যে দাম, তাতে খাবারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হয়েছে। ওএমএসের এই ট্রাক থেকে প্রতি বুধবার চাল আর আটা কিনি। বাজারে তো এ রকম সাশ্রয়ী মূল্যে চাল-আটা পাওয়া যায় না। এ কারণে বেশ আগেই এখানে চলে এসেছি, যাতে ভিড় হওয়ার আগেই কিনতে পারি।’ ওএমএসের ট্রাক থেকে স্বল্প মূল্যে চাল ও আটা কিনতে পেরে আব্দুল মান্নানের মতো লাইনে থাকা অনেকের মুখেই দেখা গেছে প্রশান্তির হাসি।

পাঁচ কেজি করে চাল-আটা কিনতে দীর্ঘ অপেক্ষা!

ওএমএস : খাদ্য অধিদপ্তর পরিচালিত ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল ও আটা কিনতে মানুষের লাইন। গতকাল রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকা থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ

গতকাল সকাল ১০টার দিকে কালশী কবরস্থানের সামনে ওএমএসের ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে শ্রমজীবী মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এক সারিতে পুরুষ, অন্য সারিতে দাঁড়ায় মহিলা। ট্রাকে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনজন। একজন টাকা নিয়ে নামের তালিকা করে দিচ্ছিলেন। অন্য দুজনের একজন মেপে দিচ্ছিলেন চাল আর অন্যজন আটা। একবার দেওয়া হচ্ছিল পুরুষদের অন্যবার মহিলাদের। এই ধীরগতির কারণে লাইনে ভিড় বেড়ে যায়। ফলে লাইনে দাঁড়ানো মানুষের মধ্যে বাড়তে থাকে পণ্য সংগ্রহের অপেক্ষা।

ওএমএসের চাল-আটায় স্বস্তি : ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে আসা বেশির ভাগ মানুষ জানায়, তারা দিনমজুরি করে। কেউ রিকশার গ্যারেজে, কেউ বা হকারি করে সংসার চালায়। প্রতিদিন যে আয় করে, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই ওএমএসের ট্রাক থেকে স্বল্প মূল্যে চাল-আটা কিনতে পেরে কিছুটা স্বস্তি বোধ করে তারা।

মিরপুর এলাকায় হকারি করেন নূরুল ইসলাম। তা থেকে যে আয় হয় সেটা দিয়ে চলে তাঁর সংসার। নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজার থেকে চাল কিনতে গেলে কেজি ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। শুধু চাল কিনলে তো হয় না, সঙ্গে আলু, পটোল, তেল-লবণসহ নিত্যপণ্য কিনতে হয়। এসব কিনতে দৈনিক ৩০০ টাকা লাগে। কিন্তু আয় তো বাড়েনি। ফলে ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল আর আটাটা কিনতে পারলে কিছু টাকা সাশ্রয় হয়। পাঁচ কেজি চাল  আর পাঁচ কেজি আটা দিয়ে ১০ দিন চলে আমার সংসার। এ কারণে এই ট্রাক থেকে চাল আর আটা কিনি।’

রিকশার গ্যারেজে কাজ করেন নূর হোসেন। তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম করেন বাসাবাড়ির কাজ। দুজনের আয় দিয়ে চলে তাঁদের পাঁচজনের সংসার। কিন্তু দুজনের যে আয় তা দিয়ে এখন পুরো মাস সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নূর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে যাওয়ার তো উপায় দেখি না। প্রতিটি পণ্যের এখন যে দাম, সাধারণ মানুষের কেনার কোনো রাস্তা নেই। ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল আর আটা কিনি। আর টুকিটাকি যা লাগে তা আমার স্ত্রী কিনে আনে। গ্যারেজে কাজ করে যা পাই, তা দিয়ে কোনোমতে চলতেছি।’

সূত্র : কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.