ভিপি নুরের ওপর হামলার নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আল্লামা কাসেমী
1 min read
ডাকসু ভবনে ঢুকে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। একইসঙ্গে তিনি অবিলম্বে হামলাকারীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
আজ (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিবৃতে জমিয়ত মহাসচিব আরো বলেন, এই দেশে আজ কেউ নিরাপদ নন। মানুষের জান, মাল, ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। দেশের মানুষ আতংকজনক ও ভীতিকর এক পরিস্থিতির মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতায় সার্বক্ষণিক উদ্বেগের সাথে দিনাতিপাত করছে। বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। সরকার জনগণ ও দেশের স্বার্থ নয়, বরং গদি রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে ভিন্নমত দমন এবং সরকারের স্বপক্ষের বিদেশী বন্ধুদের স্বার্থ রক্ষা ও দাসত্ব করে চলেছে।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিরপেক্ষভাবে তদারক করা এবং সাধারণ জনগণের জানমালের উপর হুমকি তৈরি হলে সেটা প্রতিহত করা ও সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখা। অথচ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকার দলীয় কাজে এবং ভিন্নমত ও বিরোধী রাজনৈতিক মতকে দমন করে ক্ষমতা নিরাপদ রাখতে একচেটিয়া ব্যবহার করছে।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ভিপি নূরের উপর বার বার হামলার ঘটনা ঘটছে। সরকারের দায়িত্ব ছিল তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং চিহ্নিত হামলাকারীদেরকে গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা। অথচ, এর কোনটাই করা হয়নি। সরকারের এই নীরবতা প্রকারান্তরে হামলাকারীদেরকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন ও উৎসাহ যুগিয়েছে। সরকারের এই ভূমিকা নাগরিক মনে গভীর উদ্বেগ, হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি করেছে।
আল্লামা কাসেমী বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে চলমান আন্দোলন ও জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর সে দেশের পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ডাকসু ভিপি নুরের গত সপ্তাহের আহূত সংহতি ও প্রতিবাদ সমাবেশেও ছাত্রলী ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের লোকজন পৈশাচিক হামলা চালায়। আজকের হামলায়ও এই চক্রকেই দেখা যায়।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ক্রিয়াকলাপ আবরার ফাহাদ হত্যাকারীদের সাথে মিল দেখা যাচ্ছে। বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদে কলম ধরার কারণে খুনি চক্র নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল। আজকে ঢাকসু ভিপি নুরুল হক নুরুও বার বার আক্রান্ত হচ্ছেন ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ তোলার কারণে। এতে এটা স্পষ্ট হয় যে, কথিত এই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ভারতীয় আধিপত্য ও হিন্দুত্ববাদি আগ্রাসী নীতির এদেশীয় ক্রীড়নক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বিভিন্ন ধর্মমতের সুন্দর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অক্ষুণ্ণ ও নিরাপদ রাখতে হলে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে সকল দেশপ্রেমিক ও শান্তিবাদি নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, ভিপি নুর ও তার সঙ্গীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর হুমকি সৃষ্টিকারী অপশক্তির প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, আজ (২২ ডিসেম্বর) আবারও ডাকসু ভিপি নুরের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় নুরের সাথে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি কলেজের কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন। ঘটনার প্রায় ৪৫ মিনিট পর নুরসহ আহত ছাত্রদের ডাকসু ভবন থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। – বিজ্ঞপ্তি।
সূত্র- উম্মাহ নিউজ