ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার বাড়িটি সরকারের: আপিল বিভাগ - Shimanterahban24
May 29, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper

ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার বাড়িটি সরকারের: আপিল বিভাগ

1 min read

পরিত্যক্ত সম্পত্তি

ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার বাড়িটি সরকারের: আপিল বিভাগ

রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়ি (তৎকালীন ১৩৯/এ) পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দিতে রায় দিয়েছিলেন কোর্ট অব সেটেলমেন্ট। তবে পরে ওই রায় বাতিল ঘোষণা করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের বিষয়ে করা আপিল আবেদনের ওপর আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার (১৫ মে) এস নেহাল আহমেদের করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার সেই বাড়িটির মালিক এখন সরকার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে মোরসেদ ও ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আর নেহালের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন নকিব সাইফুল ইসলাম।

এর আগে রোববার (১৪ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।

ওই বাড়ি নিয়ে পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ২১ নভেম্বর কোর্ট অব সেটেলমেন্টের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে নেহাল আহমেদ চলতি বছর লিভ টু আপিল করেন। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত শুনানিতে আপিল বিভাগ বাড়ি নিয়ে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে করা মূল মামলার রায়ের (পৃথক পৃথক রায়ের) রাষ্ট্রপক্ষকে দাখিল করতে বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষ আজ নথি দাখিল করে ও শুনানি হয়।

এর আগে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর রাজধানী ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি (তৎকালীন ১৩৯/এ) প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি সরকারের বলে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে বাড়িটির মালিকানা চেয়ে রিট করায় একজন সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।

এছাড়া ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দিতে কোর্ট অব সেটেলমেন্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বাতিলও ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মালিকানা দাবি করে দায়ের করা রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে দেন আদালত।

ওই বাড়ি নিয়ে করা পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ১৯৭২ সালে বাড়িটির তৎকালীন মালিক তা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সরকার ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত হিসেবে ঘোষণা করে। এই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে আবেদ খানসহ তার পরিবারের ৯ সদস্য ১৯৮৯ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে মামলা করেন। এই মামলায় ১৯৯২ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টের দেওয়া রায়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্তি সঠিক বলা হয়। এরপর বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদ খান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন।

অন্যদিকে, ১৯৮৭ সালের এক আবেদন দেখিয়ে এস নেহাল আহমেদ নামের এক ব্যক্তি একই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে ১৯৯৬ সালে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় ১৯৯৭ সালের ১৬ জুলাই রায় দেন। রায়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্ত করতে এবং নেহাল আহমেদ বাড়ির দখল পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়। এ রায়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সরকারের পক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে একটি রিট করে। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন।

পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে রায় দেওয়া হলো। আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। অপর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কাজী আকতার হামিদ, নকিব সাইফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নকিব সাইফুল ও মো. আবুল হাশেম।

রায়ের পর ওইদিন কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, বাড়িসহ ধানমন্ডির ওই জায়গার আয়তন এক বিঘা। হাইকোর্টের রায়ের ফলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বাড়িটি সরকারের মালিকায় থাকলো। ওই বাড়ি নিয়ে সাংবাদিকসহ তার পরিবারের ৯ সদস্য সেটেলমেন্ট কোর্টে একটি মামলা করে ১৯৯২ সালে হেরে যান। সেটেলমেন্ট কোর্টের রায় গোপন করে সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে আবেদ খান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.