দারিদ্র বিমোচনে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম: আব্দুল আজিজ
1 min read
আবু তালহা তোফায়েল :: যাকাত ইসলামের ফরজ বিধান পাঁচ স্তম্ভের একটি। ধন-সম্পদের সঙ্গে আল্লাহপাক যেসব বিধি-বিধান রেখেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল যাকাত। দেহের সঙ্গে সম্পর্কিত ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নামাজ, আর সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল যাকাত। আর দারিদ্র বিমোচনে যাকাত আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
৩১শে মার্চ, গোয়াইনঘাট হোসাইনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা মিলনায়তনে- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ গোয়াইনঘাট উপজেলা শাখার “দারিদ্র বিমোচনে ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব শীর্ষক” আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল আজিজ কথাগুলো বলেন।
তিনি আরও বলেন, কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়ে গেলে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়। জনসাধারণ দরিদ্রতায় নিমজ্জত হয়। অভাবের কারণে মানুষের নৈতিক চরিত্রের বিপর্যয় ঘটে। এর ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়। পদে পদে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার প্রভাবে এক শ্রেণির মানুষ রাতারাতি সম্পদের পাহাড়ের মালিক হয়। আরেক শ্রেণির মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়। ধনীরা অতি ধনী আর গরীবরা অতি গরীব হয়।
ইসলামী অর্থব্যবস্থায় কেউ রাতারাতি অতি ধনী হওয়ার সুযোগ নেই। লুটপাট, ধোঁকা, প্রতারণা ও জলুমের মাধ্যমে সম্পদ উপার্জনের সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী অর্থব্যবস্থায় সম্পদ উপার্জিত হয় হালাল উপায়ে। অর্জিত সম্পদ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে যাকাত, সদকাতুল ফিতর ইত্যাদি আদায় করতে হয়। বিত্তবানদের মনে রাখতে হবে, সম্পদ এমনি এমনিতেই অর্জিত হয়নি। শ্রমিকের শ্রম, মেধা, ও মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় অর্জিত হয়েছে। অর্জিত সম্পদের মধ্যে সমাজের অন্যান্য অভাবী মানুষের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার সঠিকভাবে গ্রহীতার হাতে পৌঁছে দেওয়া ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। ধনীদের সম্পদ থেকে একটি নির্ধারিত অংশ আদায় করাকে ইসলামের পরিভাষায় যাকাত বলা হয়।
মুফতি আমির আহমদ বলেন, যাকাত এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, কোরআন মাজিদে যাকাতের কথা নামাজের পরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বার উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআনের প্রায় ৮০ জায়গায় নামাজের কথা এবং ৩২ জায়গায় যাকাতের কথা বলা হয়েছে। এ দু’টো আমল তরক করার শাস্তি অনেক কঠিন।
যাকাত না দেয়ার শাস্তি সম্পর্কে কোরআন শরীফে বলা হয়েছে যে, ‘যারা স্বর্ণ-রূপা বা টাকা-পয়সা সঞ্চয় করে রাখে, আল্লাহর রাস্তায় তা ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও।’
এক হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি সম্পদের যাকাত না দেয়, কেয়ামতের দিন তার সম্পদ বিষাক্ত সাপে রূপ নিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে থাকবে এবং দুই গালে দংশন করতে থাকবে, আর বলতে থাকবে আমি তোমার মাল, আমি তোমার সঞ্চয় করে রাখা সম্পদ।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েছের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন কয়েছ, আব্দুল মতিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন, রফিক আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদ, প্রচার সম্পাদক ডাক্তার আবুল খায়ের, ছাত্র বি. সম্পাদক হাফিজ জাকির, উপজেলা যুব জমিয়তের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসানাত, যুবনেতা মাসুক আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্র জমিয়তের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক আবু তালহা তোফায়েল, সদ্য বিদায়ী উপজেলা ছাত্রনেতা কাউসার বিন আনিছ, হাফিজ এহসান উল্লাহ, নিজাম বিন ফয়জুর রহমান, উপজেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি ইকরামুল হক জাবের, সহ-সভাপতি আব্বাস বিন মাহমুদ ও তোফায়েল আহমদ, প্রমুখ।