৫দফা দাবি নিয়ে গোয়াইনঘাটে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের মানববন্ধন
1 min readআলী হোসেন, গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষ সমিতির নেতৃবৃন্দরা। মানববন্ধন শেষে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক নেতৃবৃন্দরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সব কার্যক্রমের দায়িত্বে রয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। নিয়োগ প্রত্যাশীরা আরোও বলেন, ১৫তম নিবন্ধনে প্রায় ৮লাখ ৭৬হাজার প্রার্থীর মধ্য থেকে ১১হাজার ২৩০জন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ নিয়ে একটি জাতীয় মেধা তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। তবে এখনো এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হওয়ায় তাঁরা হতাশ।
মানববন্ধনে নিয়োগ প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও গণবিজ্ঞপ্তি না হওয়ায় তাঁরা হতাশা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে দিন পার করছেন। অনেকের বয়স ৩৫ পার হয়ে যাওয়ায় তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদনের সুযোগ ও হারিয়েছেন। অনেকে টিউশনি করে চলছেন। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী করোনার করালগ্রাসে সমগ্র মহাবিশ্ব যখন থমকে গিয়েছিল সেই সময়ে তাঁরা ভয়াবহ কষ্টের মধ্যে দিনরাত অতিক্রম করেছেন। ৩য় গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষকরা বলেন, এনটিআরসিএ নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ। সবকিছু প্রস্তুত থাকার পরও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দেরি হচ্ছে কেন। বর্তমানে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। বিভিন্ন পরীক্ষা, ভাইভাসহ সকল কার্যক্রম চলছে। অথচ এনটিআরসিএ তাদের নিয়োগ ও গণবিজ্ঞপ্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে না। নিয়োগ প্রত্যাশীরা জানান, গণবিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়ে তাঁরা এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ বরাবরে স্মারকলিপি ও এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবু তাঁদের দাবি আদায় হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার ৫দফা দাবি লিখিত আকারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠিয়েছেন।
এ সময় বক্তারা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন স্কেল গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানান।
মানববন্ধনে কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মোঃ অলি উল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রায় পঞ্চাশ হাজার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী জাতি গঠনে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছি। এছাড়াও চরম বৈষম্যের মধ্যে আমাদের মানবেতর দিন কাটাতে হয়। জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতি গঠনের যুগোপযোগী শিক্ষা নীতির উপহার দিয়েছেন। এই শিক্ষানীতির আলোকে আমাদের দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত চাকুরী বিধিমালা ২০১২ জারি করা হয়। প্রণীত চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালনা পরিষদের কর্মচারীদের একজন সদস্য রাখার বিষয়টি অদ্যাবধি পর্যন্ত কার্যকর করা হয়নি। গভর্নিং বডিতে কর্মচারীদের সদস্য না রাখাসহ চাকুরী বিধিমালা যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়ে একাধিকবার জানানো হয়েছে। মহান জাতীয় সংসদে পাস কৃত আইন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুসরণ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় ও চতুর্থ/শ্রেণীর কর্মচারী চাকুরী বিধি প্রণয়নের আইনটি যদি প্রচলিত আইনের সাথে কোথাও সাংঘর্ষিক হয়ে থাকে তা সংশোধনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনোভাবেই তা আমাদের উপর বর্তায় না। চাকুরীতে যোগদানের তারিখ হতে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত ৩০ /৪০ বছরে আমাদের বেতন গ্রেডের কোনো পরিবর্তন হয়নি সারা জীবনে কোন পদোন্নতি ও নাই। চাকুরী বিধি অনুসরণ না করার কারণে আমাদের নেই কোন কর্মঘন্টা, নেই কোন ওভারটাইম। আমাদের দাবি উচ্চতর বেতন গ্রেডসহ পদের নাম পরিবর্তন করা। শিক্ষকদের ন্যায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, স্কেল পরিবর্তন, কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কম্পিউটারসহ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা এবং অনার্স-মাস্টার্স কলেজের প্রতি বিভাগে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের পদ সৃষ্টি করা। আলোচনার মাধ্যমে বর্ণিত দাবি অনতিবিলম্বে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ প্রায় ৫০হাজার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের
মানবেতর জীবন যাপনের অবসাদ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
মানববন্ধনে মোঃ ময়জুল হকের পরিচালনায় এবং মোঃ অলি উল্লাহ’র সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মাস্টার কবির আহমদ, মাস্টার আফতাব উদ্দিন, মাস্টার আবুল হোসেন, মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, মাস্টার আব্দুর রহমান, আরজু মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, দেলোয়ার হোসেন, আবদুস শুকুর, মনোয়ারা বেগম, রহুল আমিন, পারবেজ আহমদ প্রমূখ।