অভিমানের ১০ বছর
1 min read[যীশু আচার্য্য]
আমাদের বন্ধুত্বটা সেই ছোট্টবেলার, কত আড্ডা,কত খুনসুটি কত রাত জাগা, এক কথায় আমার মনের গোপন কথাগুলো জমার রাখার একটা নিরাপদ ব্যাংক।
সেই সময় মোবাইল কেবল নতুন বেরিয়েছে, সবার হাতে ফোন ছিলোনা, তবে তার ফোন ছিলো সেসময়, স্কুলে ছুটি পেলেই চলে যেতাম তার বাড়ি জাফলং। দুর্গাপূজাতে তো কথাই ছিলোনা, সারারাত জাফলং এর আশে পাশে সব পুজা মন্ডপ ঘুরতাম, মজা করতাম।
লেখাপড়ায় একসাথেই ছিলাম। সে এসএসসি পাশ করে গোয়াইনঘাট কলেজে ভর্তি হলো আমি মদন মোহন কলেজ ভর্তি হলাম। তবুও রোজ কথা হতো মাঝে মধ্যে শহরে দেখা হতো।
চলছিল বেশ ভালোই, মাঝখানে একদিন একটা উড়ো কথা নিয়ে একটা ভুল বুঝাবুঝি আমাদের দশ বছর আলাদা করে দিয়েছিলো।
আমি বারবারই ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমাকে দেখেলেই সে অন্যদিকে চলে যেতো। সেদিন বুঝেছিলাম বন্ধু যখন শত্রু হয় সেই মর্ম।
অনেক রাগ হতো তার শুন্যতা অনুভব করে।
দেখা হয়েছে ঠিক পথের বাঁকে হয়নি কথা কেনই হয়নি সে কথা এখনো আড়ালেই রয়ে গেছে।
মাঝখানে কেটে গেছে কতটা বছর তার শুন্যতা তিলেতিলে অনুভব করেছি।
তার জন্য জাতীয় দৈনিক খবরের কাগজেও ছাপিয়েছিলাম তার আমার গল্প…. ফেরানোর জন্য হ্নদয়স্পর্শী কত আর্তনাদ। সে পড়েছিল ঠিক তবুও থেকেছে আড়ালে।
ফেসবুকে কানেক্টেড থেকেও মেসেজ দিলে যখন সিন করেও উত্তর দিতোনা। আবার যখন কল দিলে কল ধরতো না। তখন আরও রাগ হতো বুঝাতে পারতাম না।
একদিন আমাকে আনফ্রেন্ড করে দেয় তখন কষ্টের মাত্রা আরো তীব্র হয়ে যায়।
তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল আমার বন্ধুত্বে কোন খাত ছিলো না একদিন মান অভিমান ভুলে তুই ফিরে আসবেই।
ফেসবুকে মেসেজ গুলো বছরের পর বছর মৃতপ্রায় থাকার পর গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ আবার নতুন করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেয়ার পরে কি ভেবে রিকোয়েস্ট টা এক্সেপ্ট করে। তখন আমি মেসেজ করলে প্রতিত্তোর দেয় এবং মান অভিমানের পালা শেষ হয়।
অতঃপর ২৭ ডিসেম্বর সে সিলেট এলে আমি কল দিয়ে দেখা করতে গেলে ওরে বুকে জড়িয়ে ধরে সেই অভিমানের অবসান হয় ফিরে যাই সেই ১০ বছর আগের দিনে। (সংক্ষেপিত)
লেখক : যীশু অাচার্য্য
সাংবাদিক, কলামিস্ট।