মায়ের জীবন বিষিয়ে তুলেছিল তারা; সেঁজুতি
1 min readফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা ইয়াসমিনের মৃত্যুতে আলোচনার ঝড় বইছে সিলেট জুড়ে। মৃত্যুর আগে তাঁর দেয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে ঘিরে এ আলোচার সূত্রপাত হয়। উক্ত ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন তিনজনকে? স্ট্যাটসটিতে সেলিনা ইয়াসমিন উল্লেখ করেন সমস্ত প্রমান তাঁর মেয়ের কাছে রয়েছে দাবী করেন। মৃত্যুর একদিন পর মেয়ে শনিবার সন্ধায় সেলিনার মেয়ে সেজুতি প্রতিবেদককে বলেন, আমার মায়ের ৪০ বছরের জীবনকাল পুরোটা বিষিয়ে তুলেছিল একটি পক্ষ। তাঁদেরর কারণে আমার মা শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারেননি। দুশ্চিন্তা আর হতাশাগ্রস্ত হয়ে তাকে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়। তবে কারা সেলিনা ইয়াসমিনের জীবন বিষিয়ে তুলেছিল এ বিষয়টি জানতে তিনি বলেন এখনো আমরা শোক কাটিয়ে উঠতে পারিনি তাই এখনি বিষয়টি নিয়ে গনমাধ্যমে কথা বলতে চাচ্ছি না।
এদিকে সেলিনা ইয়াসমিনের দেয়া ফেসবুকের স্ট্যাটাস নিয়ে কাজ করছে পুলিশের একটি দল। ইতোমধ্যে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। পুলিশের তদন্তে কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে। তবে প্রাপ্ততথ্য গুলো প্রাথমিক হওয়াতে সেগুলো যাচাই-বাছাই করতেছে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে এক আওয়ামী লীগ নেতা, এক প্রকৌশলীসহ তিনজনকে। তবে পুরো বিষয়টি খোলাসা হতে সময় লাগবে। কারণ বিষয়টি অনেক জটিল হয়ে গেছে। পুলিশ ধারণা করছে ওই তিনজনকে ইঙ্গিত করেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন সেলিনা ইয়াসমিন। তবে তার দাফন শেষ হওয়ার পর সেই তিন ব্যক্তির তথ্য সেলিনা ইয়াসমিনের মেয়ে সেঁজুতির কাছ থেকে জানতে চাইবে পুলিশ।
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি সাফায়েত হোসেন বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা ইয়াসমিন মৃত্যুর আগে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি তিন ব্যক্তির বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। পুরো বিষয়টি খোলাসা না করলেও তিনি সবতথ্য তার মেয়ের কাছে রয়েছে বলে ফেসবুকে লিখেন। পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।পুলিশ তার মেয়ের সাথে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলে তথ্য জানতে চাইবে।
জানা যায়, ৫ ডিসেম্বর স্ট্রোক করেন সেলিনা ইয়াসমিন। অসুস্থ হবার আগে ওইদিনই তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন সেলিনা ইয়াসমিন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি তার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে উল্লেখ করে বলেন-‘যদি আমার শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো ক্ষতি হয়, তার জন্য মাত্র তিনজন মানুষ দায়ী থাকবে। সমস্ত প্রমাণ আমার মেয়ের কাছে আছে। যথোপযুক্ত সময়ে আমার মেয়ে তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবে। মনে রাখবেন শুধু তিনজন মানুষ এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমার ও আমার মেয়ের জন্য সকলে দোয়া করবেন।’ফেসবুকে এটিই ছিলো তার শেষ স্ট্যাটাস। এর পরদিন তিনি সিলেট নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার এভারকেয়ার ভর্তি করা হয়।
সেলিনার স্বামী ইয়াসির ইয়ামিন বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনের জনপ্রিয় উপস্থাপক। তবে সেঁজুতি নামের ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জেই বেশীরভাগ সময় থাকতেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৪০ বছর। সেলিনা ইয়াসমিন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাদে দেইলি ঘিলাছড়া গ্রামের সাবেক সেনা কর্মকর্তা মৃত তাহির আহমদের মেয়ে ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আরফান আলীর নাতনি।