'বিজয়ের অর্ধ্ব শতাব্দি পূর্ণ হতে চললেও জনগণের স্বপ্ন ও আশা অধরাই রয়ে গেছে’ - Shimanterahban24
March 27, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

‘বিজয়ের অর্ধ্ব শতাব্দি পূর্ণ হতে চললেও জনগণের স্বপ্ন ও আশা অধরাই রয়ে গেছে’

1 min read

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সকল মানুষের আশা-আকাঙ্খা ছিল আমরা শান্তিতে বসবাস করব, আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে, আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি সংরক্ষিত থাকবে, আমাদের সবকিছুই নিরাপদ থাকবে। কিন্তু বিজয়ের অর্ধ্ব শতাব্দি পূর্ণ হতে চললেও জনগণের সেসব স্বপ্ন ও আশা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।

বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ৩টায় পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর জমিয়ত কর্তৃক আয়োজিত ৪৯তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান আলেঅচকের বক্তব্যে আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সর্বত্র হৈ হল্লা হতো যে, পশ্চিম পাকিস্তানের ২২ পরিবার সব লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা অর্থনীতিকে বিকেন্দ্রিকরণ করতে চাই। কিন্তু স্বাধীনতার পরে দেখা গেল, যারা পর্যায়ক্রমে দেশের দায়িত্ব নিয়েছে, তারা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেশ থেকে বের করে পাচার করেছে। ২২ পরিবার তো লুট করলেও টাকা দেশে রেখেছে। অথচ এখন মহল্লা মহল্লা তৈরি হয়ে গেছে নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কানাডায় বাংলাদেশীদের পাচার করা টাকায়।

বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জমিয়ত সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক। ছবি- উম্মাহ।

আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আজকে আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, কোন এক স্কুলের শিক্ষককে পুলিশ হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মারতে। তখন স্কুলের ছাত্ররা বলে উঠল, আমাদের শিক্ষককে পুলিশ কেন মারবে? আমাদের কি হাত-পা নেই? আমারা কি আমাদের শিক্ষককে মারতে পারব না? পুলিশ কেন মারবে, আমাদের শিক্ষককে আমরা মারব। আজকে আমাদের অবস্থাও এমন হয়েছে যে, পাকিস্তানের ২২ পরিবার কেন আমাদের অর্থ চুরি ও লুটপাট, করবে, আমরা কি লুটপাট-চুরি করা জানি না! উর্দূওয়ালা কেন করবে, আমরাই এটা করব।

আল্লামা ফারুক বলেন, আমাদের স্বাধীনতা আজ যেখানে গিয়ে ঠেকেছে, আমাদের শিক্ষা পরাধীন, বিবেক-বুদ্ধি পরাধীন, কৃষ্টি-কালচার পরাধীন, চাকুরিও পরাধীন, বিদেশিরা আজ চাকুরির সকল ক্ষেত্র দখল করে নিচ্ছে। রাজনীতি, অর্থনীতি সবকিছুই পরাধীন। একটু আগের বক্তব্যে মাওলানা বাহাউদ্দিন সাহেব সুন্দর বলেছেন যে, আমরা কেবল একটা পতাকা ও মানচিত্র পেয়েছি। আর কিছু পাইনি। সব জায়গাতেই আমাদের পরাধীনতা রয়ে গেছে।

আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবস, বিভিন্ন দিবস এবং পাতাকা নিয়ে চক্কর দেওয়া, আর কিছু নাচগান আর আলোচনা সভা সর্বস্ব এক স্বাধীনতা। মাছ ধরার পলোর ভিতরে মাথা আটকে যাওয়া বোয়াল মাছের লেজ নাড়ানোর মতো স্বাধীনতা ছাড়া আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতার কিছুই অর্জিত হয়নি।

তিনি বলেন, মরহুম কাসেমী সাহেব (রাহ.) বলতেন, এসব সঙ্কটের সমাধান করতে হবে রাজনৈতিকভাবে। এটাই বৈধ ও গ্রহণযোগ্য তরীক্বা। এখন আমরা পাঁচ বছর যাবত সরকারের বিরোধীতা করি। দেখা যায়, নির্বাচন আসলে একেক দল এক একভাবে সমঝোতা করে নেয়। তাহলে সরকারের এই বিরোধীতার কী মানে হল? সুতরাং নাগরিকদের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রুকে রক্ষা করার জন্য, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য সবচেয়ে জরুরী হল সাংগঠনিক শক্তিকে ব্যাপকতর করা। সংসদে দলের প্রতিনিধি পাঠানো এবং নির্বাচনে শরীক হওয়ার বাস্তবসম্মত প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করা। দেশ ও দেশের মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য এটাই হল বৈধ ও বাস্তবসম্মত পন্থা। সফল হতে পারলেন কি পারলেন না, সেই প্রশ্নের আগে জুলুম-নিপীড়ন ও লুটপাট বন্ধে কতটা বস্তুনিষ্ঠতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন, সেটা নিশ্চিত করাই সর্বাধিক গুরুত্ব।

আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, যদি রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সময় ব্যয় না করে মসজিদ-মাদ্রাসায় ও খানকায় নিজের সকল শ্রম ব্যয় করি। আর যদি দেশের রাজনীতিতে ও রাজপথে উলামায়ে কেরামের অংশীদারিত্ব না থাকে, তার মানে চোর-লুটেরাদের হাতে দেশকে ছেড়ে দিলেন আপনি। এটা কি কোন তাক্বওয়া হল? এটা কি দেশপ্রেম হল? মূলত: আমরা দেশ ও জাতির কল্যাণেও কাজ করে যাব, আবার ইলমে ওয়াহীকে যিন্দা রাখতেও শ্রম দিয়ে যাব। আমাদের আকাবিরদের দুইশত বছরের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা অনুসরণ করবো। এর বিকল্প নিজের তৈরি করা রাস্তায় হাঁটলে মসজিদ-মাদ্রাসাও রক্ষা করা যাবে না, বিদেশিদের যে আগ্রাসন চলছে, তাতে এই দেশের আইন-কানুন ক্রমান্বয়ে শেষ হয়ে যাবে, জাতীয়তা শেষ হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দেশ ও দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।

জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আল্লামা আবদুর রব ইউসুফী। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক।

অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, অর্থ-সম্পাদক মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, অফিস সম্পাদক মাওলানা আব্দুল গাফফার ছয়ঘরী, মহানগর জমিয়তের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, মুফতী মাহবুবুল আলম, মুফতী সলীমুল্লাহ, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম ও যুব জমিয়ত বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দীন ইউসুফ ফাহীম প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সাবেক মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.)এর মাগফিরাত ও দরজা বুলন্দির জন্য বিশেষ দোয়া-মুনাজাত করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মঞ্জুরুল ইলাম আফেন্দী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.