সরকারের কাজের উত্তর দিতে হবে, আর আমাকে প্রশ্ন করার অধিকার দিতে হবে: ডা. জাফরুল্লাহ
1 min readনিজস্ব প্রতিনিধি :: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপিতে যত মুক্তিযোদ্ধা আছেন, আওয়ামী লীগেও তত মুক্তিযোদ্ধা নেই। অথচ দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির কোথাও কোনো আন্দোলন নেই।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তাফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এনডিপি’র উদ্যোগে আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা আজ বিপর্যয়, নৈতিকতার অবক্ষয়, বিপন্ন মানবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হবে গণতন্ত্র ফেরানো। গণতন্ত্র ছাড়া কোনো কথা নেই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে ঢাকায় বসে থাকলে হবে না, ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। গণতন্ত্র আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া কিছু হবে না। গণতন্ত্রের মানে হলো সরকারের জবাবদিহিতা। সরকারের কাজের উত্তর দিতে হবে, আর আমাকে প্রশ্ন করার অধিকার দিতে হবে। মিটিং মিছিল করার অধিকার দিতে হবে।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহেরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীন, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ মাসুদ হোসেন, মাসিক মদিনার সম্পাদক ড. আহাম্মদ বদরুদ্দীন খান, বাংলাদেশ পেশাজীবী পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি‘র চেয়ারম্যান মাওলানা ওবায়দুল হক প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে এনডিপি’র চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে স্বপ্ন আর আকাঙ্খার মানসে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পর বারবার সরকার বদল, হত্যা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল, দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, যুবসমাজে সৃষ্ট হতাশা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ঘুষ, দুর্নীতি ইত্যাদি কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমাজে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি।
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে আন্তরিক পদক্ষেপ। এ লক্ষ্যে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণকর শাসনব্যবস্থা যেমন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত গৌরবগাঁথা আর আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যে আদর্শ, উদ্দেশ্য ও চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ তাদের তাজা প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে, ইজ্জত দিয়েছে হাজার হাজার মা-বোন, আমাদের সমাজ এবং জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের সেই আদর্শ ও চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে- এটিই আমাদের অঙ্গিকার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সফল করতে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তাই বর্তমানে এই স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়টা বাস্তবায়ন করতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। দেশের সকল জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, যেন তারা দেশের কোনো ক্ষতি করতে না পারে। দেশের সকল দেশপ্রেমিক,শিল্পপতি, চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী ও সকল কর্মকর্তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে সকল বিরোধের ঊর্ধ্বে থেকে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। দেশকে একটি দারিদ্রমুক্ত, সুশিক্ষিত উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।
এনডিপি চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের আরো বলেন, স্বাধীনতা যে মানুষের জন্মগত অধিকার, বাংলাদেশের মানুষ তা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম এই স্বাধীনতা।এর মাধ্যমে অবসান ঘটেছিল পাকিস্তানের প্রায় ২৪ বছরের শাসন,শোষণ ও নিপীড়নের। তবে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও আমরা এখনো সোনার বাংলা গড়তে পারিনি। স্বাধীন জাতি হয়েও স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ এখনো আমরা পাইনি। তাই সকল সংকটকে দূরে ঠেলে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের নিজেদেরকে দেশপ্রেম, কর্তব্যবোধ, ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই আমরা রক্ষা করতে পারব আমাদের স্বাধীনতাকে।
সভা পরিচালনা করেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এনডিপি‘র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোঃ মফিজুর রহমান লিটন।