পরিবেশ অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গালী; পটিয়ায় দেড়শ বছরের প্রাচীন পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ
1 min readপটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ;; চট্টগ্রামের সদরের দেড় শতাধিক বছরের প্রাচীন পুকুর ভরাট করে পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গালী দেখিয়ে স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি পটিয়া সদরের ছন্দা সিনেমা সংলগ্ন এলাকায় পুকুর ও হাজী আনোয়ার আলী চৌধুরী জামে মসজিদেও দেড় শতাধিক বছরের পুরানো পুকুরসহ দুটি পুকুর ভরাটের সত্যতা পেয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বও পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম পরিদর্শনেও গেছেন।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, পটিয়া সদরের ১নং ওয়ার্ডে আল্লাই এলাকার একটি বড় পুকুরের প্রায় অর্ধেক ভরাট করে সরকারি মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে পুকুরটির দৈঘ্য ২০০ ফুট, প্রস্থে ১০০ ফুট এবং উচ্চতায় ৭ ফুট মিলে ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গফুট ভরাট করার বিষয়টি নিশ্চিত হন। অন্যদিকে ৪নং ওয়ার্ডেও ছন্দা সিনেমা সংলগ্ন আরেকটি পুরোনো পুকুর ভরাট কওে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ফাইলিং চালিয়ে যাচ্ছেন মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি। মোজাম্মেল হক উপজেলার ছনহরার গুয়াতলী গ্রামের নুরুচ্ছফার ছেলে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পুকুরটির দৈঘ্য ৮০ ফুট, প্রস্থ ৩০ ফুট এবং উচ্চতায় ৫-৬ ফুট মিলে প্রায় ১২-১৩ হাজার বর্গফুট ভরাট করার বিষয়টি নিশ্চিত হন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।পরিদর্শনে নেতৃত্ব দেওয়া পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম জানিয়েছেন, পটিয়ার আল্লাই এলাকায় একটি পুকুর ভরাট করে একটি মডেল মসজিদের কাজ চালাচ্ছিল এআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গফুট পুকুর ভরাট করেছেন। অন্যদিকে মোজাম্মেল হক নামের আরেক ব্যক্তি ছন্দা সিনেমা সংলগ্ন একটি পুকুর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। তিনিও প্রায় ১২-১৩ হাজার বর্গফুট পুকুর ভরাট করেছেন। তিনি ওই জায়গা ভরাট অবস্থায় কিনছেন বলে দাবি করলেও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে ওই ব্যক্তি পুকুরটি কিনেই ভরাট করেছেন। আমি পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দিব। এরপর এআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মোজাম্মেল হককে নোটিশ করে শুনানিতে ডাকা হবে। মডেল মসজিদ যেখানে হচ্ছে সেখানে পুরানো মসজিদ ছিল সে মসজিদ ভেঙে মডেল মসজিদের স্থাপনা হচ্ছে। তবে মডেল মসজিদ যেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে সে জায়গাটি ওয়াকফ এস্টেইটের জায়গা, ওয়াকফ এস্টেইট এর জায়গা জোর পূর্বক অবৈধভাবে দখল করার বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রনালয় ও ওয়াকফ প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন মোতোয়ল্লীরর পক্ষ থেকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এম এম তরিকুল ইসলাম ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের স্বাক্ষরিত একটি পত্র গত ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান গত ৯ নভেম্বর সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইনামুল হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি এখনো পর্যন্ত সরেজমিন তদন্তে যেতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সপার তারিক রহমান জানান, আমরা মন্ত্রনালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর সরেজিমন গিয়ে ছিলাম, তবে ওয়াকফ এস্টেইট এর জায়গার পুকুর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে হাজী আনোয়ার আলী চৌধুরী জামে মসজিদের মোতোয়াল্লী সুলতান আহমদ চৌধুরীর ভাই আবু তাহের চৌধুরী জানান, মডেল মসজিদ নির্মাণ হউক আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের জায়গার উপর জোর করে ওয়াকফ এস্টেইট এর অনুমতি না নিয়ে এবং মসজিদের মোতায়াল্লিকে না জানিয়ে কিভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করছে আমার প্রশ্ন। আমার পূর্ব পুরুষের নামে দেড় শক বছরের প্রাচীন মসজিদ ভেঙ্গে মসজিদের নাম ও চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য একটি চক্র ষড়যন্ত্রে করছে। বিষয়টি নিয়ে আমি বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ করেছি। আমাদের পরিবার সরকারকে শত কোটি টাকার জায়গাও দিবে ? আমাদের স্মৃতি চিহ্নও থাকবে না, এটা কিভাবে হয়? বিষয়টি আমি পটিয়ার গণমানুষের অভিভাবক জাতীয় সংসদের হুইপ আলহাজ্ব শামসুল হক চৌধুরী এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।