ভাস্কর্য কিংবা মূর্তি; তা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ
1 min read
[ইমাদ রায়হান]
ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকরা এবং তাদের দালাল মিডিয়া, এমনকি তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, মন্ত্রী এমপিরাও প্রতিমা, ভাস্কর্য ও মূর্তিকে আলাদা আলাদা বলতে চান। তারা বলেন- প্রতিমা হলো মানুষ যার আরাধনা উপাসনা করে, ইহকালে-পরকালে মঙ্গল চায়, ভুলের ক্ষমা চায় ইত্যাদি। ভাস্কর্য হলো মানুষসহ কোনো প্রাণী বা কোনো কিছুর মূর্তি, যাকে মানুষ রাখে সম্মান দেখাতে বা সৌন্দর্য বর্ধন করতে; মানুষ যার আরাধনা বা উপাসনা করে না। অর্থাৎ তাদের মতে মূর্তি, ভাস্কর্য ইসলামে নিষেধ নেই।
আরাধনা করলে সেটা হয় প্রতিমা আর না করলে হয় ভাস্কর্য। দ্বীন ইসলাম হলেন প্রতিমার বিরুদ্ধে; কিন্তু ভাস্কর্য ও মূর্তির বিরুদ্ধে নয়”। নাউযুবিল্লাহ!
তারা,ভাস্কর্য এবং মূর্তিকে আলাদা আলাদা করতে চেয়েছে অথচ এ কি শিখলেন যে এসব যে একই জিনিসের বিভিন্ন নাম অর্থাৎ সমার্থক তা বুঝলো না? ছবি, মূর্তি বা ভাস্কর্যের ইংরেজি হলো sculpture বা statue বা picture এসব শব্দ সমার্থক, যারা একই অর্থ বহন করে। সমার্থক শব্দসমূহ হলো –
১. Sculpture অর্থ ভাস্কর্য, মূর্তি।
২. Icon অর্থ মূর্তি, অঙ্কিত প্রতিমূর্তি, প্রতিমা, বিগ্রহ, অন্যভাবে নির্মিত প্রতিমূর্তি, খোদাই করা প্রতিমূর্তি।
৩. dummy অর্থ মূর্তি, পুতুল।
৪. form অর্থ ফর্ম, গঠন, আকার, আকৃতি, রুপ, মূর্তি।
৫. incarnation অর্থ অবতার, মূর্তি, আবির্ভাব, দেহধারণ, মূর্তিগ্রহণ, মূর্তিদান।
৬. shape অর্থ আকৃতি, আকার, গঠন, গড়ন, রুপ, মূর্তি।
৭. picture অর্থ ছবি, চিত্র, চলচ্চিত্র, চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন, মূর্তি
দেখা যাচ্ছে- ছবি, মূর্তি বা ভাস্কর্য একই জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন নাম। একটি নিষেধ মানে সবগুলোই নিষেধ। এই গ-মূর্খদের ন্যূনতম যে দুনিয়াবী ইলমও নাই তা এদের হাস্যকর মন্তব্য প্রমাণ করে।
ইসলামের র্দৃষ্টিতে মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই পরিত্যাজ্য। পবিত্র কুরআনে কারিম এবং হাদীছ শরীফের মধ্যে এ প্রসঙ্গে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে কারিমের স্পষ্ট নির্দেশ- “তোমরা ছবি বা মূর্তির অপবিত্রতা বেঁচে থাকো এবং মিথ্যা কথা বা (গান-বাজনা, নাটক-সিনেমা, কাল্পনিক, মনগড়া-বানোয়াটি কাজ) থেকে বেঁচে থাকো।”[ সূরা হজ্জ্ব আয়াত শরীফ ৩০]
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুদ ভক্ষণকারী ও সুদ প্রদানকারী, উল্কি অঙ্কণকারী ও উল্কি গ্রহণকারী এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীদের (ভাস্কর, চিত্রকরদের) উপর লা’নত করেছেন।” (বুখারী শরীফ)।
মূর্তি ও ভাস্কর্যের বেচাকেনাও পবিত্র হাদীছ শরীফে সম্পূর্ণ হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে।
অর্থাৎ মূর্তি হোক, প্রাণীর ছবি হোক, ভাস্কর্য হোক, আরাধনা করা হোক কিংবা না করা হোক সবই সম্পূর্ণরূপে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ফায়ছালায় নিষিদ্ধ ও হারাম। জায়িয ও হালাল বলা কুফরী ও মুরতাদ হওয়ার কারণ।
লেখক; সীমান্তের আহ্বানের গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি ও জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গায় তাকমিল ফিল হাদিসে অধ্যায়নরত।