March 20, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

বায়তুল্লাহকে চিত্র ও মূর্তি থেকে পবিত্র করার বিষয়ে নবী (সা.)এর পদক্ষেপ

1 min read

[সালিম মাহমুদ বিন জহির]

সহীহ হাদীস ও নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্যাদির মাধ্যমে এই বিষয়টা পেশ করব, ইনশা’আল্লাহ।
মক্কা বিজয়ের সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চারপাশ থেকে কত গুরুত্বের সাথে সকল ধরনের মূর্তি ও প্রাণীর প্রতিকৃতি অপসারণ করেছেন এবং কোন ব্যাতিক্রম ছাড়া কীভাবে সকল ছবি,মূর্তি ও ভাস্কর্য বিলুপ্ত করেছেন।

কা’বার যে তিনশত ষাটটি মূর্তি স্থাপিত ছিল সেগুলোর ক্ষেত্রে তো নবী (সা.)এর এই মু’জিযা প্রকাশ পেয়েছিল যে, তাঁর হাতের লাঠির শুধু ইশারার দ্বারাই সেগুলো ভূপতিত হয়ে যাচ্ছিল।
আর যে মূর্তিগুলো বিভিন্ন স্থানে রাখা ছিল তা তিনি বের করে ফেলার আদেশ দিয়েছিলেন।

কা’বার বিভিন্ন স্তম্ভে এবং ভিতরের ও বাইরের দেয়ালে যত ছবি অঙ্কিত ও খোদিত ছিল সব মুছে ফেলার আদেশ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একাধিক ব্যক্তিকে এই দায়িত্ত্বে নিয়োজিত করেছিলেন। তাঁর আদেশে সকল চিত্র মুছে ফেলা হয় এবং এ সংবাদ জানানোর পর তিনি বাইতুল্লাহর ভিতরে প্রবেশ করেন।কিন্তু বিভিন্ন স্থানে খোদিত ছবিগুলো মুছে ফেলার পর কিছু কিছু দৃষ্টিগোচর হচ্ছে দেখে পুনরায় ভালোভাবে মোছার আদেশ দিলেন।

সাহাবায়ে কেরাম (রা.)পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ডলে ডলে সমান করার চেষ্টা করলেন। এরপরও যা কিছু অবশিষ্ট ছিল সেগুলো জাফরানের রং লাগানো হলো।এই হচ্ছে সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
এব্যাপারে অনেক হাদীস রয়েছে-
(১) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নগরীতে প্রবেশ করলেন তখন বাইতুল্লাহর আশে পাশে তিনশত ষাটটি মূর্তি রাখা হয়েছিল। তিনি প্রত্যেক মূর্তির দিকে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন এবং বলছিলেন : সত্য এসেছে মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। সত্য আগমন করেছে আর মিথ্যা না পারে কোন কিছু সূচনা করতে, না পারে পুনরাবৃত্তি করতে।(সহীহ বুখারী, হাদিস নং, ২৪৭৮,৪২৮৭,৪৭২০ ; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৭৮১)।

(২) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর বর্ণনায় এসেছে যে লাঠির শুধু ইঙ্গিতের দ্বারাই মূর্তিগুলো ধরাশয়ী হচ্ছিল। (সীরাতে ইবনে হিশাম, খ:৭ পৃষ্টা ১১৪)
এই কথা হযরত জাবের (রা.) এর হাদীসেও এসেছে (মুসান্নাফে আবি শাইবা হাদীস নং ৩৮০৬)।

(৩) হযত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় এলেন তখন বায়তুল্লাহয় মিথ্যা উপাস্যদের থাকা অবস্থায় তাতে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানালেন। তাঁর আদেশে ওই মূর্তি ও প্রতিকৃতিগুলো বের করা হলো। এগুলোর মধ্যে ইব্রাহীম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) এরও প্রতিকৃতি ছিল।তাঁদের হাতে ছিল ভাগ্যনির্ধারণী শর!
নবী সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ ওদের ধ্বংস করুন, তাদের জানা ছিল যে, এই দুইজন কখন এ শর দ্বারা ভাগ্য গণনার চেষ্টা করেননি। (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৪২৮৮,১৬১৯, সুনানে আবু দাউদ, হা.নং২০২০)।
উল্লেখ্য, এই হাদীসে প্রতিকৃতিসমূহকে মিথ্যা উপাস্য বলা হয়েছে। ইবরাহীম (আ.) ও ইসমাঈল (আ.) এর প্রতিকৃতি পূজার জন্য ছিল না।
(৪) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাইতুল্লাহতে বিভিন্ন প্রতিকৃতি দেখলেন তখন তাতে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানালেন এবং সেগুলো বিলুপ্ত করার আদেশ দিলেন। তাঁর আদেশে সেগুলো মুছে দেওয়া হত। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৩৫২)
(৫) হযরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের সময় নবী (সা.) উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-কে আদেশ দিলেন, তিনি যেন, কা’বা ঘরের সব ছবি মুছে ফেলেন। সকল ছবি মোছার আগ পর্যন্ত তিনি কা’বায় প্রবেশ করেন নি (সুনানে আবু দাউদ ৪১৫৩)।
যে ছবিগূলো মোছার পরও কিছু কিছু দেখা যাচ্ছিল তার উপরও তিনি আপত্তি করেছেন এবং ভালোভাবে মোছার কাজে নিজেও অংশগ্রহণ করেছেন।

(৬) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহয় প্রবেশ করে ইবরাহীম (আ.) ও মরইয়াম (রা.) এর ছবি দেখলেন। তখন তিনি বললেন, এরা তো (যাদের চিত্র এই লোকেরা অঙ্কন করেছে) (আল্লাহর এই বিধান) জেনেছেন যে, ফেরেশতাগণ সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যাতে কোন চিত্র থাকে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৫১)
অর্থাৎ চিত্র সম্পর্কে এরা কখনও সম্মত থাকতে পারেন না। অথচ জাহেলরা তাঁদেরই প্রতিকৃতি তৈরি করেছে।

(৭) উসামা (রা.) বলেন আমি কা’বা ঘরের ভিতরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গেলাম। তখন কিছু চিত্র তার দৃষ্টিগোচর হলো। তিনি এক বালতি পানি আনতে বললেন।আমি পানি উপস্থিত করলাম। তিনি তখন ছবিগুলো মুছতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন -‘আল্লাহ তাদের বিনাশ করুক যারা এমন কিছুর ছবি অঙ্কন করে যা তারা সৃষ্টি করতে পারে না। (মুসনাদে আবু দাঈদ তুয়ালিসী পৃষ্টা:৮৭ ; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস নং৩৮০৬৫;।)

লেখক; সীমান্তের আহ্বানের রেঙ্গা মাদ্রাসা প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.