জামাত-হেফাজত নয়, তাদের লক্ষ্য ইসলাম - Shimanterahban24
March 29, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

জামাত-হেফাজত নয়, তাদের লক্ষ্য ইসলাম

1 min read

[আব্দুল বাসিত নুয়েদ]

২০১৩ সালের আগে কিন্তু আওয়ামিলীগের হেফাজত নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিলো না। তখনকার সময়ে একমাত্র মাথাব্যথা ছিলো, জামাতে ইসলাম।২০০৮’র নির্বাচনের পরবর্তী লক্ষই ছিলো জামাতে ইসলামকে নির্মূল করা। কারণ তারা ইসলামী দল বলতে একমাত্র জামাতে ইসলামকেই মনে করতো। সুতরাং জামাতে ইসলামকে নির্মূল করতে পারলেই ইসলামকে পঙ্গু করতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করতো। আর দেশকে নাস্তিক মুরতাদদের ঘাটি বানাতে তারা পূর্ণরূপে সফল হতো।

সেই থেকেই তারা তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এগোচ্ছে। প্রথম প্রথম তাদের মিশন গোপনীয় হলেও অতঃপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে প্রকাশ্যে জামাতের নেতাদের গ্রেপ্তার এবং ফাঁসি কর্যকর শুরু হলো। এমনকি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শুরু হলো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন। সরকারও আন্দোলকারীদের সাপোর্ট করলো পূর্ণ প্রটোকল দিয়েই। শুরু হলো জামাত নিধন। একের পর এক গ্রেপ্তার আর ফাঁসি কার্যকর।
যখন দেখলো তাদের দাবি বাস্তবায়িত হতে চলেছে, তখন তারা তৃপ্তির ঢেকুর তুললো। আর শুরু করলো ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক বিষোদগার। মনে করলো, এই তো- দেশ থেকে নির্মূল করতে পারলাম ইসলামকে। এখন আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই। আমরা ইচ্ছেমতো ইসলামকে নিয়ে উলঙ্গ মন্তব্য করতে পারবো।

কিন্তু তারা তখনও বেখবর ছিলো। কারণ আসল ঈমানদাররা তখনো ছিলো নিশ্চুপ। জামাতে ইসলামকে পরাস্ত করেই ভাবছে, পুরো ইসলামকেই কাবু করে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হলো ২০১৩’র হেফাজতের উত্থানের মাধ্যমে। যখন দেখলো, ওরা তো জামাতে ইসলামের চে আরও অনেক শক্তিশালী। যাদের মূল অস্ত্র ঈমান আর ইসলাম। অথচ আমরা এই ইসলামকেই দেশছাড়া করতে চাচ্ছি। কিন্তু হেফাজতের এই ঈমানী শক্তির বহিঃপ্রকাশ তাদের রাতের ঘুমকে হারাম করে দিলো। তাদের ইসলাম নিয়ে কটু মন্তব্য বাংলাদেশের প্রকৃত ঈমানদারেরা কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না। তাই দেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনগণ নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলো। আর কায়েম করেছিলো একটি ইতিহাস।

সেদিন অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে সাময়িক নিষ্কৃতি পেয়ে গেলেও তাদের মাথা ব্যথা কমেনি একটুও। জামাতের পর তাদের এখন টার্গেট হেফাজত।
জামাতের মতো হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উঠেপড়ে না লাগলেও গোপনে তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো বিরামহীনভাবে। আর জামাতের যুদ্ধাপরাধ নামক একটা কলঙ্ক ছিলো কিন্তু হেফাজতের এমন কোনো দুর্বলতা খুঁজে পায়নি তারা।
শুধু তাই নয়, দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরের মানুষ হেফজতের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলো আল্লাহ এবং তাঁর নবীর শানে বেয়াদবদের বিরুদ্ধে। তাই তারা জামাত বিরোধী আন্দোলনের মতো হেফাজতবিরোধী আন্দোলনে প্রকাশ্যে মাঠে নামে নি। কারণ তাদের ভয় ছিলো হাফাজতের জনশক্তি। সুতরাং হেফাজতের বিরুদ্ধ মাঠে না নেমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো কৌশলে। অবশেষে ইনিয়েবিনিয়ে হেফাজতের কিছু নেতাকর্মীদেরও তাদের কব্জা করে নেয়। ফলে হেফাজতকেও তাদের পোষ মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। এতো বড়ো একটা জনশক্তিকে নিজেকেদের কবলে নিয়ে রীতিমতো তারা সফলই ছিলো।
এখন আর তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই। যারা তাদের বিরুদ্ধে একমাত্র অপ্রতিরোধ্য শক্তি, তাদেরকে কব্জা করা তাদের একটি সফল মিশন ছিলো।এবং সেটা তারা খুব ভালোভাবেই করেছিলো।

এর পরে বেশ ভালোই চলছিলো তাদের। কিন্তু সমস্যা বেধে গেলো এই কয়েকদিন আগে। হেফাজতের নতুন কমিটি আবারও তাদের রাতের ঘুমকে হারাম করে দিলো। নেতৃবৃন্দের মধ্যে যাদেরকে এতো কৌশলে নিজেদের হস্তগত করলো,তাদের মধ্যে কেউওই হেফাজতের নতুন কমিটিতে নেই।
আবারও হেফাজত ফিরে গেলো তার নিজস্ব পরিচয়ে। হয়ে গেলো অপ্রতিরোধ্য।

সম্প্রতি মূর্তি ইস্যুতে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হকের বিভিন্ন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আবারও তাদের সেই লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে৷
সুতরাং জামাত বা হেফাজত নয়, তাদের লক্ষ্য একটাই, দেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলা।

মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করা হয়েছে। এখন আবার সেই সংবিধান থেকে ইসলামকেও মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য এটা ছিলো না। শেখ মুজিবের স্বপ্ন তা ছিলো না। যারা এক জীবন বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে আসলো। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে আনন্দ মিছিল বের করেছিলো, সেই তারাই আজকে নিজের সুবিধা আর স্বার্থের জন্য মুজিব প্রেমে ফেটে পড়ছে।

যারাই আজ মূর্তির পক্ষে কথা বলছে, তাদের একটারও রেকর্ড ভালো না। খোঁজ নিয়ে দেখবেন, সবাই লুটেরা আওয়ামিলীগ। প্রকৃত আওয়ামিলীগ আর মুজিবপ্রেমীরা কখনো তাঁর মূর্তি স্থাপন করতে চাইবে না। আর যারা এতোদিন আওয়ামিলীগকে পুঁজি বানিয়ে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে তারা নিশ্চয় জানে, একমাত্র হেফাজতই পারে তাদের বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে। তাদের সব অপকর্ম ফাঁস করে দিতে। সুতরাং সবকিছু ছেড়ে এখন তারা লেগেছে হেফাজত ও উলামাদের বিরুদ্ধে।

লেখক: শিক্ষার্থী, মারকাজুল হেদায়া, সিলেট। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.