রামু কচ্ছপিয়ায় ফিল্ম স্টাইলে ভাতিজা কর্তৃক জেঠার বসত বাড়ির মালামাল লুটপাট ও ভাংচুর
1 min read
মোহাম্মদ ইউনুছ :: কক্সবাজারের রামুর কচ্ছপিয়াতে বসত বিটা বিরোধের জেরে ফিল্ম স্টাইলে আপন জেঠার বসত বাড়ির মালামাল লুটপাট ও ভাংচুর করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে ভাতিজারা। গত ১৭ নভেম্বর সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বিচারকদের কয়েক দফা বৈঠকের পর অসহায় কৃষক আবুল বশর বাদী হয়ে মঙ্গলবার ২৩ নভেম্বর রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক মেম্বার জাকের আহাম্মদ জানান আবুল বশর ও আবুল কাশেম তারা আপন ভাই। ছোট ভাই আবুল কাশেম আছেন সৌদি আরবে। দুই ভাইয়ের মধ্যে বসত বিটা নিয়ে বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এরই সূত্র ধরে আবুল কাশেমের ছেলেরা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে জেঠার বসত ঘরের মালামাল লুটপাট চালিয়ে কাঠের তৈরী পুরাতন বাড়িটি ভাংচুর করে রক্ষিত সম্পূর্ণ মালামাল ও আসবাবপত্র বিক্রি করে দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানান আবু ইউসুফ প্রকাশ শাহীন, মোঃ শামীম, শামসুন্নাহার, তৌহিদুল ইসলাম, আবদুল খালেক ও অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে এ লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়। রামু থানায় দায়ের করা অভিযোগ উল্লেখ্য বিবাদীগণ প্রতিবেশী ও ১-৪নং বিবাদীগণের আত্নীয়। আমরা একই ভিটায় আলাদা ভাবে আমরা কাঠের ঘরে এবং ১-৪নং বিবাদীগণ তাদের পাকা ঘরে এবং আলাদা ভাবে বসবাস করি। আমরা প্রতি বর্ষা মৌসুমে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থানাধীন সাপ মারা ঝিরি নামক স্থানে চাষাবাদ করি। উক্ত চাষাবাদের ধান কর্তন করতে যায় প্রতি বছর। চলতি ২০২০ ইং সনে আমাদের বসত ঘরে স্থিত আসবাবপত্র, মালামাল ইত্যাদি রাখিয়া ও ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করিয়া স্বপরিবারে এ বছরও বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি থানাধীন সাপ মারা ঝিরি নামক স্থানে রোপিত ধান কর্তন করে ঘরে তোলার উদ্দেশ্যে স্বপরিবারে খামার ঘরে চলিয়া যায়। এই সুযোগে গত ১৭ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখ সকাল ৭ টার দিকে উল্লেখিত বিবাদীগণ সহ তাদের দলীয় আরো অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জন ব্যক্তি পরস্পর যোগ সাজসে ও শলা পরামর্শে, পূর্ব প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা মতে হাতে দা, লোহার রড়, করাত মাস্ত্তল ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বেআইনী জনতা গঠন পূর্বক, সকলে একই উদ্দেশ্যে সিদ্ধিকল্পে আমার পূর্ব দোয়ারী, কাঠের বেড়া ও দরজা এবং টিনের চাউনি সম্বলিত বসত ঘরের কাঠের দরজার তালা ভাঙ্গিয়া ঘরে প্রবেশ করে বসত ঘর কাটিয়া ও ভাংচুর করিয়া সম্পূর্ণ মালামাল লুট ও পিক-আপ গাড়ি বোঝাই করিয়া নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা আমাদের বসত ভিটায় গেলে আমাদেরকে মারধর, খুন জখম করিবে, আমাদের রক্তে ভিটা ভাসাইয়া দিবে, আমাকে হত্যা করিয়া লাশ ঘুম করার হুমকি দেয়। তারা ঐদিন ভিটায় স্থিত আমার বাড়ি নির্মাণের জন্য আনা ইট, লোহার রড়, কংক্রিট, বালি ইত্যাদি লুটপাট করিয়া নিয়ে যায়। এর পর প্রাণ নাশের হুমকি, অপরাধ জনক ভীতি প্রদান করে। উল্লেখিত স্বাক্ষীগন সহ আরো লোকজন ঘটনা দেখে জানে ও শুনে। ঘটনার সংবাদ পাইয়া আমরা আমাদের বসত বাড়িতে আসিয়া ঘটনা জানিয়া ও যাচাই করিয়া নিশ্চিত হওয়ার ফলে বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগনকে অবহিত করিলে বিবাদীগণ ঘটনা স্থানীয় ভাবে আপোষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়া তালবাহানা ও কালক্ষেপণ করেন। তৎখানিক গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেয়ার পর কয়েক দফা বৈঠকে বসেন কচ্ছপিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, যুবলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম, হাইস্কুলে শিক্ষক নুরুল হাকিম ও মোঃ ইলিয়াছ, স্থানীয় বিচারকদের শাহীনগংরা ঘটনা আপোষ করিতে অস্বীকার করার ফলে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অসহায় কৃষক আবুল বশর। এবিষয়ে অভিযুক্ত আবু ইউসুফ প্রকাশ শাহীন গংরা পুরো ঘটনা পুলিশের আইসি, স্থানীয় বিচারক ও সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার সততা স্বীকার করেন। গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরহাদ আলী জানান তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা জানান এবং এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে এ সংবাদ লেখা কাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেছেন। এলাকাবাসী এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা আয়েমে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছেন বলে উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।