সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে জমিয়ত ইতিবাচক বলিষ্ঠ ভূমিকা হাতে নিয়েছে: মাহমুদুর রহমান মান্না
1 min readশতবর্ষী ইসলামী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে গতকাল (২৩ নভেম্বর) সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে “সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের করণীয়” শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার মানে যদি ধর্মীয় বিষয় হয়, তাহলে তো বিভেদ বা সাম্প্রদায়িকতা থাকার কথা না।কারণ, ধর্ম মানুষকে সাম্প্রদায়িকতা শেখায় না। তাহলে এই সাম্প্রদায়িকতা আসে কোত্থেকে? তার মানে এর আড়ালে কোন কূটকৌশল বা অপরাজনীতি রয়েছে, এটা সকলকে বুঝতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী হুজুর এ বিষয়ে চমৎকার বলেছেন। আমি মনে করি এই সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করাটা আমাদের দেশে যারা ক্ষমতায় থাকে, তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার একটা হাতিয়ার। বাংলাদেশ বা অত্র অঞ্চলের হাজার বছরের ইতিহাস হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। কিন্তু সেই ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস থেকে অনেকগুলো বড় বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে সময়ে সময়ে। এই নিয়ে খুশবন্ত সিং একটা বই লিখেছে ‘ট্রেন টু পাকিস্তান’ নামে। পুরো ট্রেন শুধু লাশ আর লাশ, যারা সম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হয়েছিলেন। এটা ভারত বিভক্তির আগের কথা লিখেছেন। এই যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, এর পেছনে ক্ষমতাসীনরাই জড়িত।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না দাবি করে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছে ভারতীয়রা। আমার কাছে ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং ছিল এজন্য যে, ভারতের সাথে বর্তমান সরকারের এত সখ্যতা। সেই ভারতে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, দেখি আমাদের সরকার কি প্রতিক্রিয়া দেখায়। দেখা গেল, আমাদের সরকার এটা খবর হিসেবেই প্রচার করতে দিল না। কোন রেডিও, টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকায় এই খবর নাই।
তিনি বলেন, আমি অনেক বছর আওয়ামী লীগ করেছি। দলটির অনেক নেতার সাথে আমার কথা হয়, যোগাযোগ হয়। দেশের মাইনরিটি কম্যুনিটির যারা আছেন, বিশেষ করে হিন্দুদের অনেক নেতার সাথে আমার সখ্যতা ও পরিচয় আছে, কথা হয়। তাদের অনেকে আমাকে বলেছেন, গত ১২ বছরে মাইনরিটিদের অনেক মেয়ের সতিত্বে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু সেই আঘাত কারা হেনেছেন, সেটা তো খুলে বলবার কিছু নেই। যে দলের মধ্যে পাপিয়া হয়, জি কে শামীম হয়, সাবরিনা হয়, সাহেদ হয়, সেই দলের পক্ষে সবই সম্ভব।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জরুল ইসলাম আফেন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, মুসলিম লীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খয়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারিকুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।