কানাইঘাটে নজু মিয়ার দাফন সম্পন্ন; প্রকৃত আসামিদের শাস্তির দাবী আমজনতার
1 min readমীম সালমান :: কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পুর্ব ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া নজরুল ইসলাম নজু মিয়ার জানাযার ও দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ রবিবার বাদ আসর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইসলামিয়া মিফতাহুল উলুম লোহাজুরি মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার ইমামতি করেন নিহতের ছেলে মাওঃ জাকির হোসেন। জানাযার পুর্বে জনতার উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখেন নিহতের ছেলে আবুল হুসেন ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ডাক্তার ফয়াজ উদ্দিন। এসময় উপস্থিত জনতা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আর্তনাদ করতে থাকেন। জনতার আর্তনাদ শুনে ডাক্তার ফয়াজ উদ্দিন এই হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য শক্ত ভুমিকা নিতে ইউনিয়নবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পাওনা টাকা নিয়ে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহত নজরুল ইসলাম নজুর ছেলে দেলোয়ার হোসেন জানান, জমিজমা ও পাওনা টাকা নিয়ে তার পিতার সাথে আপন চাচা নুরুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই আলা উদ্দিনের বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোহাজুরী মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে নজরুল ইসলাম নজু তার ভাতিজা আলা উদ্দিনের কাছে পাওনা ১০ হাজার টাকা চাইলে আলা উদ্দিন তার চাচা নজরুল ইসলাম নজুকে তার বাড়ী মুছলিমপাড়া গ্রামে যেতে বলে।
আলাউদ্দিনের কথা মত রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে নজরুল ইসলাম নজু ভাতিজা আলা উদ্দিনের বাড়ীতে টাকা আনার জন্য গেলে সেখানে তাকে আটক করে রাখা হয়। একপর্যায়ে আপন বড় ভাই নুরুল ইসলাম, ভাতিজা আলা উদ্দিন ও ভাড়াটিয়া কয়েকজন লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি নজরুল ইসলাম নজুর দুই পায়ে একাধিক কোপসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করে লোহাজুরী-মুছলিমপাড়া গ্রামে রাস্তার কুটন মিয়ার বাড়ির পাশে মৃত ভেবে ফেলে যায়।
পরে পথযাত্রী লোকজনের আর্তচিৎকারে আশপাশ এলাকার লোক ও পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নজরুল ইসলাম নজু মিয়া।
এ হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে কানাইঘাট থানা পুলিশ এলাকায় ছুটে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে নিহতের ভাই নুরুল ইসলাম, ও মুছলিমপাড়া গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেলিম উদ্দিন এবং তার ভাই শাহীন আহমদ কে আটক করা হয়।
শনিবার হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম। তারা নজরুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে নিহতের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে দেলোয়ার হুসেন বাদী হয়ে শনিবার ১৪জনকে আসামি করে কানাইঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।