সম্মতি ছাড়া সহবাস করলেই কী বৈবাহিক ধর্ষণ?
1 min read
[কাকলী আক্তার মৌ]
গতকল্য রাতে আমার এক নিকট আত্মীয়
আমাকে ফোনে বলে যে, আপু, আমার জামাইয়ে আমার উপরে নির্যাতন করইন, কোনতা কইলেই রাগ করইন, রাত্রেও আমার খান্দাত আইয়া জোর কইরা সহবাস করইন। হুনছি বউ’র অনুমতি না লইয়া সহবাস করলে ধর্ষণ করা হয় না কিতা!
ইতার লাগি বুঝি জামাইর উপরে ধর্ষণের মামলা করন যাইবো?
আমি আমার জামাইর উপরে মামলা করতাম চাই।
আপনে তো আইনের কথা ভালা অই জানইন, আপনে আমারে সাহায্য করওক্কা।
আমি তার কথা শুনে বিষম খেয়ে বোকা হয়ে গেলাম, পাগলি বলে কি?
তাকে বললাম, “এমনটা আবার হয় নাকি?” তখন সে আমাকে বলল,দেশে তো হুনছি ইতার লাগি অই আইন হই’রো..ও…ও…
তখন তাকে বললাম, শোন; তুমি কিসের বা কোন আইনের কথা বলছ আমি তা জানি না, জানতেও চাই না। আমি এখন তোমাকে যা বলব তা মন দিয়ে শোন, সব ধর্মমে বিবাহ একটি বৈধ সম্পর্ক, মুসলিমদের জন্য সেটা ইবাদত। তাই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’, অর্থাৎ ‘ম্যারিটাল রেপ’ শব্দটা বেমানানই শুধু নয় একাধারে অশালীন, শুনতেও শব্দকটু। তুমি যখন তোমার স্বামীকে বিয়ে করেছ তখন তুমি মোহাম্মদী শর্ত মোতাবেক
কলিমা পড়ে, দেনমোহর মূলে জোর-জবরদস্তি ব্যাতিরেকে তোমার স্বেচ্ছা সম্মতিতে কবুল বলেছ,
আর ঐ কবুল বলার মধ্য দিয়ে তুমি তাকে শরীয়ত সম্মতভাবে তোমার সব কিছুর অনুমতি দিয়ে দিয়েছ। অতএব এখানে জোর-জবরদস্তির কোন বিষয়ই থাকতে পারে না,বার বার অনুমতি নেয়ারও
প্রয়োজন পড়ে না।
তুমি যদি তোমার মা-বাবা ও ভাই-বোনকে বাড়িতে গিয়ে বল যে, “আমার জামাইয়ে আমারে ধর্ষণ করইন”। তাহলে তোমাকে সবাই পাগল উপাধি দিবে, পিটুনিও খেতে পার। বন্ধু-বান্ধবীকে যদি বল তাহলে তারা বলবে “তুমি অসুস্থ, তোমার চিকিৎসার দরকার”।
তবে হ্যাঁ, এখানে উল্লেখ্য যে, তোমার শারীরিক অসুস্থতা, মাসিক জনিত কারণে যদি তুমি সহবাস করতে না পারো, তাহলে বিষয়টা তোমার স্বামীকে অবগত কর, প্রত্যেক স্বামীই মাসিকের বিষয়টা অবগত থাকে। আমি আজ পর্যন্ত শুনিনি যে, কোন স্বামী তার স্ত্রীর মাসিককালীন সময়ে জোর করে
সহবাস করেছে। অতএব পাগলামি না করে বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করো, নিজের ধর্মীয় রীতি মেনে চলার দিকে মনোনিবেশ করো। এমন কোন কাজ করতে যেও না; যেটা শুনলে বা দেখলে ধর্মীয় ও সামাজিক
দৃষ্টিকোণ থেকে অশালীন লাগে। আশা করি বিষয়টা বুঝতে পেরেছ।
তখন সে আমাকে বলে,
জি অয়,আপনার হকল কথা অই হুনরাম ও বুঝরাম।
পরিশেষে আমি রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণী মহলের
সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করব, সব ধর্মীয় বিধি মোতাবেক বিবাহ একটি বৈধ ও পবিত্র বন্ধন, যদি সত্যি সত্যি
‘বৈবাহিক ধর্ষণ,অর্থাৎ ‘ম্যারিটাল রেপ’ বিষয়ক
আইন কার্যকর করা হয়, তাহলে তা ধর্মীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে। এমনিতেই বর্তমান প্রজন্ম দিনে দিনে বিবাহের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সেখানে যদি এমন আইন কার্যকর হয় তাহলে বর্তমান প্রজন্ম বিবাহকে এড়িয়ে চলবে।
‘বৈবাহিক ধর্ষণ,অর্থাৎ ‘ম্যারিটাল রেপ’ বিষয়ক আইন কার্যকর করা হলে পুরুষ নির্যাতনের হার মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে যাবে। তালাকের পরিমাণও বেড়ে যাবে, পরকীয়া মাত্রা ছাড়াবে, অনেকের সাজানো সংসার ভেঙে তছ-নছ হয়ে যাবে। সন্তান হবে মা বাবা হারা।
এক পর্যায়ে নারী ও পুরুষ নিজেদের জৈবিক চাহিদা মিটাতে আদিমতায় ভেসে যাবে। তখন সমাজে অসামাজিকতা, ধর্ষণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকবে।এক পর্যায়ে সমাজ ভারসাম্যহীন হয়ে পরবে।
আশাকরি বিষয় গুলো নজরে নিয়ে জনকল্যাণকল্পে সিদ্ধান্ত নিবেন। সমাজিক ভারসাম্য রক্ষার্থে
যা অতি আবশ্যক তাই কার্যকর করবেন। এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
আমি ঘুমন্ত কবি,নির্বাক ছবি-
Iam sleeping poet,Silent picture-
Kakoli Akther Mou