কোম্পানীগঞ্জের খাগাইল পয়েন্টে “স্বাগতম” দলইর গাঁও বিলবোর্ড চুরির নিন্দা
1 min readজাহিদ হাসান ইমাদ :: মূল বিষয় হলো গতকাল ২৬/১০/২০ইং রোজ সোমবার দলইর গাঁও ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে একটি বিলবোর্ড চার্ট তৈরি করে খাগাইল পয়েন্টে উন্মোচন করা হয়।
কিন্তু ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে যে, উক্ত “স্বাগতম” বিলবোর্ড চার্ট টি পরদিন অর্থাৎ ২৭/১০/২০ইং রোজ মঙ্গলবার সকালে বিলবোর্ড চার্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়ে যায় অর্থাৎ চুরি হয়ে যায়।
ইদানিং বেশ কিছু কুচক্রী মহলের কুসংস্কার মাখা অপরাধ আমারা দৃষ্টিপাত হচ্ছে, তার মধ্যে একটি জঘন্য অপরাধ হলো এই দলইর গাঁও “স্বাগতম” বিলবোর্ড চুরির ঘটনা। আসলে কথায় আছে, (therhould be a limit madness!) অর্থাৎপাগলামির একটা সীমা থাকাউচিত!
উক্ত বিলবোর্ডের মূল্য বেশি হলে এক হাজার টাকা হবে।
কিন্তু এই বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন প্রচারে বরাদ্দ রয়েছে অনেক শিক্ষিত সমাজের উচ্চ ভূমিকা চেতনা এবং হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা। অথচ তোমরা চোরচক্র সেই শিক্ষিত সমাজের ভূমিকা চেতনা এবং জাগ্রত ভালোবাসার দিকে অবলোকন না করে, বিলবোর্ড টি অবৈধ ভাবে চোরি করে নিজেদের আওতাভুক্ত করে নিলে!
সোতরাং আমি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, দলইর গাঁও এবং খাগাইল গ্রামের শিক্ষিত সমাজ ও জনসাধারণের সন্নিকটে আপনার এর প্রতিবাদ ও সঠিক তদন্ত করুন এবং চোরদের আতিথেয়তা না করে বিলবোর্ড উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যান।( নিশ্চয়ই আল্লাহ সহায়ক হবেন।
বি:দ্র: আমার দৃষ্টিপাতে যেহেতু খাগাইলের নিকটবর্তী বিলবোর্ড টি স্থাপিত হয়েছে এবং স্থাপিত স্থান থেকে বিলবোর্ড চুরি হয়েছে। বিধায় চোর সন্দেহে চক্র দলটিও আপনাদের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
তাই আপনারা খাগাইলবাসী সুনজরে নজরদারি করা আপনাদের জন্য আবশ্যকীয়।
কিছু কথা না বললে যেন, নিজের তৃপ্তি স্থান ফাঁকা শূন্য মরুভূমি মনে হয়। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বগ্রাসী পরিণতি নিয়ে স্বল্প তরে কিঞ্চিৎ প্রয়াস।
বাংলাদেশ সীমাহীন দুর্নীতির আবর্তে নিমজ্জিত। সে দুর্নীতির অবস্থান দেখা যায় সর্বত্র। ঋণ নিয়ে বেমালুম হজম করে ফেলা, সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করা, সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ করা, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস চুরি, আয়কর-বিক্রয়কর ও শুল্ক ফাঁকি দেওয়া, চাকরির নামে হায় হায় কোম্পানি খোলা, হীনস্বার্থে শেয়ার-বাজার কারচুপি, চোরাচালানি, কালোবাজারি, ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েস- দুর্নীতি কোথায় নেই? এমনকী দুঃস্থ মায়েদের জন্যে বরাদ্ধকৃত গম নিয়ে, এতিমখানার এতিমদের জন্যে বরাদ্দকৃত বস্ত্র নিয়ে, দুর্গত মানুষের জন্যে বরাদ্দকৃত ত্রাণের টিন নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষার হলেও দুর্নীতি আধিপত্য বিস্তার করছে। ভাবা যায় না, মেধা তালিকায় স্থান নির্ধারণেও চলে দুর্নীতি। সরকার দুর্নীতি দমন সংস্থা করেছেন দুর্নীতি সামাল দিতে। কিন্তু বিগত সরকারগুলোর আমলে দেখা যায়, দুর্নীতির ভূত সেখানেও আছর গেড়েছে। অসহায় মানুষ সেখানে ন্যায় বিচার আশা করে, সেই বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসনের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে দুর্নীতি। দুর্নীতির সর্বগ্রাসী রূপের জন্য সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের সারিতে। ব্যাপক দুর্নীতির জন্য দেশবাসীরেক উচ্চমূল্য দিয়ে বিপুল ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে দুর্নীতির ভয়াবহ ছোবলে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবন জর্জরিত। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রশাসন, বিচার বিভাগ সবকিছুকেই কলুষিত করেছে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মামলাবাজি, টোলবাজি ইত্যাদির মাধ্যমে দুর্নীতি নিয়েছে সন্ত্রাসী চরিত্র, যাকে বলা চলে সন্ত্রাসী দুর্নীতি।
মানুষের জীবনবোধের সঙ্গে নৈতিকতার একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কারণ মানুষ প্রাণীজগতের সদস্য হলেও পশু নয়। মানুষের সাধনা মনুষ্যত্ব অর্জনের সাধনা। সেই সাধনার লক্ষ্য এমন কিছু বিশেষ গুণাবলি অর্জন যা মানুষকে ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিত বিচার করার শক্তি দেয় এবং মন্দ, অন্যায় ও অনুচিত কাজকে পরিহার করে নৈতিক আদর্শের অনুবর্তী করে তোলে। এই নৈতিক মূল্যবোধের আশ্রয়েই গড়ে উঠেছে মানব সমাজ। মানুষের জীবনের ভালো-মন্দ, উৎকর্ষ-অপকর্ষ বিচারের মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে নৈতিক মূল্যবোধ।
তাই আমাদের বাড়িতে হবে নৈতিক মূল্যবোধের স্বরূপ ও গুরুত্ব নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের জীবনে অনুসরণযোগ্য এমন কিছু আচরণ বিধি, যা মানুষের জীবনব্যবস্থা ও জীবনপদ্ধতিকে করে তোলে সুন্দর, নির্মল ও রুচি স্নিগ্ধ। নৈতিকতা মানুষকে অন্যায়ের পতন-বন্ধুর পথের বিপদ থেকে বাঁচায়। স্বার্থপরতার প্রলুব্ধ কর আকর্ষণ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে আত্ম ত্যাগের মহামন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে। নৈতিক মূল্যবোধ মানুষকে দেয় প্রবল ও দৃঢ় মানসিক শক্তি যার বলে মানুষ যাবতীয় দুর্নীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে শেখে, অন্যায় ও অবৈধ পন্থা অবলম্বন সচেতনভাবে পরিহার করতে শেখে। কারণ নৈতিক মূল্যবোধ মানব চরিত্রকে করে তোলে সুষমামণ্ডিত। ধর্মের কল্যাণধর্মী মর্মবাণী অনুসরণ করা, মিথ্যাকে কায়মনোবাক্যে পরিহার করা, সত্য ও ন্যায়ের আদর্শে পরিচালিত হওয়া, সজ্ঞানে অন্যের ক্ষতি না করা, পরহিতব্রতে যথাসম্ভব নিজেকে সমর্পণ করা -এসবের মাধ্যমেই মানুষের জীবনে নৈতিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটে। নৈতিক মূল্যবোধে আলোকিত মানুষ সমাজে যতই বাড়ে ততই সমাজজীবন হয়ে ওঠে নিষ্কলুষ ও সৌন্দর্যবিভামণ্ডিত। তাই মানুষের আত্মিক সামাজিক উৎকর্ষের জন্যে এবং জাতীয় জীবনে উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্যে সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের লালন, চর্চা ও বিকাশের বিশেষ গুরুত্ব আছে। এই কারণে শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে মানবচিত্তে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা।
মূল্যবোধের অবক্ষয় : দুঃখের বিষয় মানব সভ্যতা যখন একুশ শতকের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে তখন মানুষ মূল্যবোধের সংকটে পীড়িত। বিশ্বে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য-লালসা ও পরিভোগ-প্রবণতা মানুষকে লোভী ও স্বার্থান্বেয়ী করে তুলছে। মানবধ্বংসী মরণাস্ত্রের বিস্তার বিজ্ঞানের অনৈতিক ব্যবহারেরই মারাত্মক ফল। দুনিয়াজোড়া মাদক ব্যবসা, গণমাধ্যম করায়ত্ত করে স্থূল ভোগবাদী অপসংস্কৃতির প্রচারণা, হলুদ সাংবাদিকতা ইত্যাদি নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই বহিরপ্রকাশ।
আমাদের দেশেও নৈতিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবক্ষয়ের লক্ষণ আজ প্রকট। সীমাহীন দুর্নীতি সর্বস্তরে গ্রাস করেছে সমাজজীবনকে। নীতিহীন, বিবেকহীন মানুষ সদম্ভে সমাজে বিচরণ করছে এবং ন্যায়নীতির কণ্ঠরোধ করার জন্যে তারা উঠে-পড়ে লেগেছে। অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় বিত্তের পাহাড় গড়ছে লুটেরা ধনীরা। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজ জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও। এখন সমাজে অবৈধ পন্থায় ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ, প্রতিপত্তি, ভোট আদায়ের এক অনভিপ্রেত অস্থির প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এর জন্যে বল প্রয়োগও হয়ে গেছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ফলে নৈতিক অবক্ষয় সংক্রমক ভাইরাসের মতো সমাজ জীবনের সর্বত্র বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। এমন কি শিক্ষাঙ্গনে, চিকিৎসা সেবায়, বিচার ব্যবস্থায় পর্যন্ত দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ঘটেছে ব্যাপক বিস্তার। মূল্যবোধের এই অবক্ষয় এখন বিবেকবান সব লোককেই গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে।
অবক্ষয় রোধে পদক্ষেপ : এই নেতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়রোধ করা এখন আমাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কর্তব্য হসেবে উপস্থিত। এই অবক্ষয় রোধে প্রথম ও প্রধন গুরুত্ব পরিবারের। পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক অঙ্গনে নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে সমঝোতার পরিস্থিতি সৃষ্টি, সমাজ জীবনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা, শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক মূল্যবোধকে বিশেষ গুরুত্ব দান, নীতিবোধ সম্পন্ন দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলা ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তা আন্তরিকভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়ে আমাদের অগ্রসর হতে হবে।
পরিশেষে: আমাদের সামনে আজ একুশ শতকের পথচলা। নতুন শতকে আমাদের জীবন যেন সুন্দর ও মানবিক মূল্যবোধে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেজন্যে সবার আগে নজর দিতে হবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ওপর। শিক্ষার্থীদের সামনে রাখা চাই নৈতিক মূল্যবোধের আদর্শ। সত্য ন্যায় ও সুন্দরের প্রতি জাগাতে হবে তাদের ভালোবাসা। নৈতিক মূল্যবোধের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এখন আমাদের সবাইকে হবে হবে সচেতন, উদ্যোগী ও সক্রিয়। এর জন্যে প্রয়োজনে গড়ে তুলতে হবে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন। তা না হলে নৈতিক অধোগতির যে পিছুটান আমাদের জাপটে ধরেছে তার হাত থেকে আমরা নিস্তার পাব না।