"বিসিবিকে এনামুল হক জুনিয়রের বার্তা" - Shimanterahban24
March 23, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

“বিসিবিকে এনামুল হক জুনিয়রের বার্তা”

1 min read

মোহাম্মদ আফজাল :: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল সব কিছু৷ সেখান থেকে ঘুরে দাড়াতে চেষ্টা করছে সবাই। সব কিছুতে ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে আসছে আগের মত। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনও ঘুরে দাড়াতে চেষ্টা করছে আগের মত। সেই পালে ঘা ভাসিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটও। এই মাসে দুদিনের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে মাঠের ক্রিকেট মাঠে ফেরায় বিসিবি। তারজন্য বিসিবিকে করতে হয়েছে ক্রিকেটারদের করোনা টেস্ট, খেলোয়াড়দের রাখতে হচ্ছে জৈব বলয়ে। বিসিবির এই পদক্ষেপ দেখে সিলেটের মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে প্রচেষ্টা চালায় সিলেট ক্রিকেটার্স এসোসিয়েশন, সব বাধাকে পিছনে ফেলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তারা আয়োজন করেছিল তিন দলের টি২০ টুর্নামেন্ট। যদিও বিসিবির মতো তারা খেলোয়াড়দেরকে জৈব বলয় রাখতে পারেনি, তারপরেও সতর্কতার সাথে ছিলেন সব ক্রিকেটার, ফলে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এই প্রতিযোগিতা। সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে যেকোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করেন এনামুল হক জুনিয়র।
গত ৯ই অক্টোবর তিন দল নিয়ে টি২০ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সিলেট ক্রিকেটারস এসোসিয়েশন। করোনা পরবর্তী ক্রিকেটের নিজেদের মানিয়ে নিতে এই প্রতিযোগিতায় আয়োজন করা হয়। সিলেট এক্সপ্রেস উইকে, সিলেট রেঞ্জার্স, সিলেট ওয়ারিয়র্স নামে তিনটি দল গঠন করা হয়েছিল, ৪২ জন ক্রিকেটার এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন।
৮ দিনের এই ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ফাইনাল ম্যাচ সহ মোট সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি দল দুইবার করে একে অন্যের মোকাবেলা করে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল সিলেট এক্সপ্রেস উইকে এবং সিলেট রেঞ্জার্স আজ শুক্রবার ফাইনাল মুখোমুখি হয়।
সকাল সাড়ে এগারো টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনাল ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অলক কাপালির সিলেট রেঞ্জার্স। ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে এনামুল হক জুনিয়রের দল সিলেট এক্সপ্রেস উইকে ইনিংসের ২০ তম ওভারে অলআউট হয় ১৬১ রানে। সিলেট এক্সপ্রেস উইকের ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসানের ব্যাট থেকে আসে অনবদ্য ৫৫ রান, সিলেট এক্সপ্রেসের মারকুটে এই ব্যাটসম্যান মাত্র ২৭ বলে ৬টি ছক্কা এবং ২টি চারের সাহায্যে তার এই ইনিংসটি সাজান। এছাড়াও তুষারের ব্যাট থেকে ৪৪ রান এবং সায়েম আলম রিজভী করেন ৩০ রান। সিলেট রেঞ্জার্সের পেস বোলার মেনন নেন ৪টি উইকেট এবং সফর আলী পান ২টি উইকেট।
সিলেট রেঞ্জার্স ১৬২ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পর পর দুই বলে দুই উইকেট হারায়। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেন রেঞ্জার্সের অধিনায়ক অলক কাপালি। উদ্বোধনীয় ব্যাটসম্যান সিয়ামকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেন কিন্তু সিয়াম বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি, তিনি ফিরেন ব্যাক্তিগত ২২ রানে, ১৯ বলে ২টি চার এবং ২টি ছক্কায় এই রান করেন সিয়াম। এরপরে একাই খেলছিলেন অলক কাপালি অন্য প্রান্ত থেকে তেমন ভাল সঙ্গ পাননি এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান। অলক কাপালি থামেন ৫৯ রানে, ৪৪ বলে এক চার এবং ছয় ছক্কায় এই ইনিংস সাজান রেঞ্জার্সের অধিনায়ক। অলক কাপালির ব্যাট হাসলেও আজ বাকি ব্যাটসম্যান ছিলেন ব্যর্থ। অলক কাপালির আউটের পর সেফ আনুষ্ঠানিকতাই শুধু বাকী ছিল। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে সিলেট রেঞ্জার্স ৫ উইকেটে ১৪৫ রান করতে সক্ষম হয়। ফলে ১৬ রানে ম্যাচ জিতে তিন দলের এই টি২০ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় এনামুল হক জুনিয়রের সিলেট এক্সপ্রেস উইকে। সিলেট এক্সপ্রেসের পেস বোলার ইমরান আলী এনাম ৩টি এবং এক্সপ্রেসের অধিনায়ক স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র নেন ২টি উইকেট।
ফাইনাল ম্যাচ শেষে পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট ক্রিকেটারস এসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক জুনিয়র। বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান, এই প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করেছেন। এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ক্রিকেটার থেকে শুরু সংগঠক, স্পনসর, সাংবাদিক এবং গ্রাউন্ডসম্যান সহ সবাইকে।

এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গিয়ে মাঠ পেতে বেগ পেতে হয়েছিল তাদের, সেই সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। মাঠের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জুনিয়র।
শুভেচছা বক্তব্যে এনামুল হক জুনিয়র সিলেট প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ যাতে শুষ্ক মৌসুমে আয়োজন করা হয় এই দাবি জানান। এনামুল হক জুনিয়র বলেন, “এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গিয়ে শেষ দিন পর্যন্ত মাঠ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলাম। নাদেল ভাই শেষ পর্যন্ত মাঠের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ধন্যবাদ নাদেল ভাইকে। স্পনসররা এগিয়ে না আসলে আমরা অনেক কাজ করতে পারতাম না ধন্যবাদ তাদেরকেও আমাদেরক সহযোগিতা করার জন্য। একটা ভাল মানের উইকেট মানে একটা ভাল প্লেয়ার বের হয়ে আসা, ধন্যবাদ গ্রাউন্ডসম্যানদেরও ভাল উইকেট তৈরি করে সহযোগিতা করার জন্য। এই টুর্নামেন্ট থেকে অনেক তরুণ ক্রিকেটার বের হয়েছে, যারা ভবিষ্যতে সিলেটকে রিপ্রেজেন্ট করবে। এখন একটি শুষ্ক মৌসুম যাচ্ছে, এই সময় যদি সিলেট প্রথম বিভাগ লিগটা আয়োজন করা যায় তাহলে অনেক ভাল হবে সিলেট ক্রিকেটের জন্য। আমাদের দাবি থাকবে সিলেট প্রথম বিভাগ এবং দ্বিতীয় বিভাগ লিগটা যে শুষ্ক মৌসুমে আয়োজন করা হয়।’
এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে বিসিবিকেও একটা বার্তা দিয়ে রাখতে চান এনামুল হক জুনিয়র। সফলতার সাথে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে তার সংগঠন। যেখানে ছিল না কোনো জৈব বলয়ের ব্যবস্থা, তারপরেও সবাই সুস্থ থেকে এই প্রতিযোগিতা অংশ গ্রহণ করতে পেরেছেন। তাই একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই যেকোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করেন এনামুল হক জুনিয়র। জুনিয়র বলেন, “আমাদের জৈব বলয়ের ব্যবস্থা ছিল না, তারপরও কেউ অসুস্থ হয়নি। সবাই সুস্থ ছিল, সবাই খেলায় অংশগ্রহণ করেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে সবাই জানতে চাচ্ছিল এই সময়ে কিভাবে আমরা খেলার আয়োজন করছি। করোনাকালীন সময়ে কিন্তু অন্য কোনো জেলায় ক্রিকেট খেলার আয়োজন করেনি, আমরাই প্রথম শুরু করেছি। এটার মাধ্যমে আমরা বিসিবিকে একটা বার্তা দিতে চাই যে, একটু সতর্কতা অবলম্বন করে চলাফেরা করলেই যেকোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব। ডিপিএলটা আটকে আছে। লিগটা শুরু করলে, আমরা যদি সেইফে চলি তাহলে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করি।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম সিলেট ক্রিকেটারস এসোসিয়েশনের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানান। এছাড়াও তিনি শুষ্ক মৌসুমে ক্রিকেট লিগ আয়োজন করার আশ্বাস দেন। সেজন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। হয়তোবা এই বছর নভেম্বরের শেষের দিকে মাঠে গড়াবে সিলেট প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিসিবি পরিচালনা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ফেরদৌস চৌধুরী রুহেল। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট দলের কোচ মাহমুদ ইমন, ম্যানেজার ফরহাদ কোরেশি, ওয়াহেদুজ্জামান অনি, সৈয়দ কাবী, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাশ সহ আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.