আসামে মাদ্রাসা বন্ধের সিদ্ধান্ত বিজেপির মুসলিমবিদ্বেষী তৎপরতার অংশ: আল্লামা কাসেমী
1 min readনিজস্ব প্রতিনিধি :: জমিয়তে উলাময়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ভারতের আসাম রাজ্যের সকল সরকারি মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আজ (১৩ অক্টোবর) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভরতের হিন্দুত্ববাদি বিজেপি সরকার মুসলিমবিদ্বেষী ধারাবাহিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আসামের সরকারী মাদ্রাসাসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, বিজেপি সরকার শুরু থেকেই ভারতকে মুসলিম শূন্য করতে কাজ করে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবেই তারা এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন করেছে। শত শত বছরের পুরনো বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়ে তদস্থলে রামমন্দির তৈরি করছে। পাশাপাশি মুসলমানদের উপর হামলা, মামলা ও নিপীড়ন বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। মুসলমানদের নাগরিক ও মৌলিক মানবাধিকারে নতুন নতুন বাধা তৈরি করছে। ভারতবর্ষের ইতিহাস থেকে মুসলমানদের অবদানের পাঠ একে একে মুছে দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থাপনা ও স্থানের মুসলিম ঐতিহাসিক নামসমূহ দেব-দেবির নামে পরিবর্তন করে দিচ্ছে। বিয়ে, তালাক, সম্পদবণ্টন’সহ মুসলমানদের নিজস্ব পারিবারিক আইনে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
উচ্চ শিক্ষায় মুসলমানদের সুযোগ সংকোচিত করা হচ্ছে। মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগী, ধর্ম পালন এবং খাদ্যাভ্যাসের মতো সাধারণ বিষয়েও বিধিনিষেধ আরো করছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সাথে মুসলমানদের নাম উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ আসামে মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র মাদ্রাসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল। এসব কিছুর একটাই উদ্দেশ্য, বিজেপি নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদিরা চায় মুসলমানরা অতিষ্ঠ হয়ে হয় ধর্মত্যাগ করুক, আর না হয় ভারত ছেড়ে চলে যাক, অথবা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে থাকুক।
আল্লামা কাসেমী বলেন, মাদ্রাসাসমূহে সুস্থ সমাজ গড়ার শিক্ষা দেওয়া হয়। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থেকে সহনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার অনুশীলন করা হয়। মনের হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে মানুষে মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধির শিক্ষা দেওয়া হয়। আর বিজেপি চাচ্ছে, এসব কল্যাণকর শিক্ষা বন্ধ করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়িয়ে দিতে, ধর্মীয় মেরুকরণ করতে এবং মুসলমানদেরকে দাবিয়ে রাখতে।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদি বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িকতা ও বর্ণবাদের যে ঘৃণার চর্চা শুরু করেছে, তাতে বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি হবে। এতে বিপুল মুসলিম জনগোষ্ঠী দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং তাদের মনে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হবে। বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে জাতিসংঘ, ওআইসি ও বিশ্বসম্প্রদায়ের কর্তব্য, হিন্দুত্ববাদিদের সাম্প্রদায়িক ঘৃণা চর্চার লাগাম টেনে ধরতে পদক্ষেপ নেওয়া।