আমাদের সমাজকে যেভাবে কলুষিত করছে পতিতালয় ও পতিতারা - Shimanterahban24
March 27, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

আমাদের সমাজকে যেভাবে কলুষিত করছে পতিতালয় ও পতিতারা

1 min read

[সালিম মাহমুদ বিন জহির]

হাদীসে দেহ ব্যাবসাকে অত্যন্ত নোংরা ও চরম ঘৃণিত পেশা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ নববী আদর্শ থেকে যোজন মাইল দূরে অবস্থান করায় মানবতা ক্রমেই পশুত্বে পরিণত হতে চলছে। গোটা দেশ ও শহর দখল করে নিচ্ছে দেহ ব্যাবসায়ীরা। পাপের ভয়াবহরূপ নির্দিষ্ট কোন স্থানে আবদ্ধ না থাকলে ও রাজধানীকে করছে বেশি বিষাক্ত। রাজধানী জুড়ে এখন বাস করছে ৪ ক্যাটাগরির কলগার্ল বা দেহব্যবসায়ী। কুরআন-হাদিসে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই জঘন্য পাপ থেকে বহুগুণ দূরে থাকার আদেশ করলেও বিভিন্ন নামে চলছে এবং চালানো হচ্ছে এই অপকর্ম। কেউ কেউ এটাকে পেশার মর্যাদা দিয়ে আরও ব্যাপকতা দিতে চাচ্ছে এই ঘৃণ্যতাকে। নেটওয়ার্কের এ জাল ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মুসলমান, বিশেষকরে যুবক ও তরুণ শ্রেণিকে অন্ধকার জগতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজধানীরর পতিতা নেটওয়ার্ক খুবই বিস্তৃতি লাভ করেছে। এরা প্রাচীন নামের খোলস ছেড়ে আধুনিক ও মডার্ন নামধারণ করে নিজেদের অপকর্মকে পেশার মর্যাদা দিতে মরিয়া। কলগার্লার পতিতালয় নির্ভর নয়। তারা চলমান এবং অদৃশ্য। দেখা যায় কিন্তু জানা যায় না। ঢাকার কলগার্ল বিজনেস খুবই সুসংগঠিত। এ পেশাটি যারা নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের নেটওয়ার্কও খুব শক্তিশালী। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে এরা ব্যাবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে। অথচ প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোব ব্যাবস্থা নেয় না। ঢাকা কলগার্লদের এই নেটওয়ার্কের এক অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকার এসকর্ট এজেন্সিগুলো। (Scort sarvice) আর বাকি অংশ নিয়ত্রিত হয়ে থাকে বিচ্ছিন্ন কলগার্ল এজেন্টদের মধ্যেমে। এজেন্ট আর ক্লায়েন্টের সম্পর্কটা এখানে ত্রিভূজের মতো। ক্লায়েন্ট-কলগার্ল এবং এজেন্ট একটা সূক্ষ্ম সম্পর্কে আবদ্ধ। সমস্ত লেনদেন হয় এজেন্টের মধ্যমে। এজেন্ট তার নিজের কলগার্লদের এবং ক্লায়েন্টের ডিমান্ট সম্পর্কে খুব সচেতন। এজেন্ট টারমনোলজিতে ডিমান্ডে অর্থ হচ্ছে কলগার্লটির ভ্যালুয়েশন।’ অর্থাৎ কলগার্লের সৌন্দর্য, সাস্থ্য, এবং গ্লামার ওয়াল্ডের সঙ্গে সংযোগের মোট মূল্য ( শহুরে, মাধ্যবিত্ত, উচ্চমাধ্যমবিত্ত, শিক্ষিত এবং সমাজের উঁচুতলার মানুষের সঙ্গে পিরিচিত) ‘এজেন্ট’ই অধিকাংশ সময় প্রোগ্রাম তৈরি করেন। ক্লায়েন্ট চাহিদা এবং টাকা খরচ করার সক্ষমতার ওপর নির্ধারিত হয় প্রোগ্রাম কেমন হবে। একটা প্রোগ্রাম আয়োজনের সময় এবং স্বান স্থির হয় ক্লায়েন্ট এবং কলগার্ল উভয়ের সুবিধা মতো। ঢাকার ধানমন্ডি, উত্তরা, গুলশান, বানানী, সেগুনবাগিচা এলাকায় ফ্লাট বাসা নিয়ে চলছে কলগার্ল বিজনেস। মডেল প্রোভাইডার হিসেবে পরিচিত অনেক প্রযোজক, পরিচালক এবং এক সময়ের নামি অভিনেত্রীরা এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সচরাচর কোন কলগার্লের বয়স বেশি হয়ে গেলে বা চাহিদা কমে আসলে তারা তখন এজেন্ট হিসাবে কাজ শুরু করেন। ঢাকার বলতে গেলে সব ক’টি নামিদামি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা এই পেশায় জড়িত। এরা কখনই নিজে কোন ক্লায়েন্টের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে প্রোগ্রামে অংশ নেয় না। কারণ হচ্ছে নিজেদের গোপনীয়িতা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার আশংকা। শুধু তাই নয়, এই জঘন্য পেশা বিস্তৃত করতে এরা আশ্রয় নিয়ে থাকে ইন্টারনেটের। এদের সেলফোন নম্বর ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। ওয়েবপেইজে তাদের পরিচিতিতে কলগার্ল কথাটির সাথে আবেদনময় আহ্বানও বিদ্যমান থাকে। এসব ওয়েবসাইট গুলোতে তাদের ছবিও আপলোড করা থাকে।
ঢাকায় এই কলগার্লরা কখনও কখনও বাইরে গিয়েও প্রোগ্রাম করে। ডিমান্ডেবল কলগার্লদের আন্তর্জাতিক চাহিদাও কম নায়। পত্রিকায় অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসকর্ট এজেন্সিগুলো সরাসরি একটা নেটওয়ার্ক হয়ে কাজ করে। ফলে অনেক সময় কলগার্লদের দেশের বাইরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
আর তারা এভাবে প্রতিটি দেশের প্রতিটি অঙ্গনে নোংরামির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে।
ঢাকার এসকর্ট এবং কলগার্ল এখন একে অপরের পরিপোরক শব্দ। শরীয়ত গর্হিত এই কাজের বৈধতার সনদ দেখিয়ে এরা প্রাকাশ্যে কলগার্ল বিজিনেস চালিয়া যাচ্ছে। ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে কলগার্ল যাবতীয় তথ্য, ছবি এবং কলগার্লের রেট দিয়ে দেয় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য অনলাইনে ছেড়ে দেয় এরা। দেশের বাইরে থেকেও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কলগার্ল বুকিং দেয়া যায় ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল এসব ওয়েবসাইটে তররুণীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রধানের কথা বলে নতুন নতুন কলগার্ল হওয়ার জন্য আহ্বান ও রয়েছে।সেই সাথে ক্লায়েন্ট এবং কলগার্লদের জন্য যাবতীয় নিরাপত্তা ও ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা বঝায় রাখার কথা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ঢাকার এসকর্ট এজেন্সিগুলোর প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব কলগার্ল বেটাবেজ। ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় ঢাকা এসকর্ট এজেন্সি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত।
ঢাকাভিত্তিক এইভাবে উন্মুক্ত কলগার্ল ব্যাবসাকে বৈধ বলে দাবি করে থাকে এসকর্ট কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা এসকরটের সাথে জড়িত এক ব্যাক্তি এক প্রশ্নের উত্তরে বলে, কলগার্লের এই বিজনেস প্রফেশনালি বৈধভাবে করে থাকে তারা।
ঢাকা এসকর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়,ফেড়ারেল লেবেয়িং রেকর্ড কিপিং ল’ ( ১৮ ইউএসসি ২২৫৫৭) অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম বৈধ এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত।’ কিন্তু একাধিক আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই আইনের দোহাই দিয়ে যৌন ব্যাবসা বৈধ করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসকর্ট এজেন্সিগুলো খুলে কলগার্ল ব্যাবসা সম্পূর্ণরুপে অবৈধ। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একেবারে প্রকাশ্যে এই ধরণের যৌন ব্যাবসা পরিচালিত হওয়ার ঘটনা মুসলমানদের চরম চারিত্রিক অধঃপতন ডেকে আনছে।
বস্তুত কলগার্ল হচ্ছে মুখোশের আড়ালে চালিয়ে যাওয়া এক অবৈধ পেশা। দেশে ঠিক কতজন কলগার্লে আছে, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। আর এটা এমন একটা অবৈধ পেশা যেখানে পেশাজীবী থাকেন আড়ালে, গোপনে। এখানে যেমন যৌনতাবাহি রোগের ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি জানাজানি হলে পারিবারিক ও সামাজিক অশান্তি ও অপেক্ষা করছে। ফলে সবার দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে প্রতিদিন কতজন নারী এই জঘন্য ও অবৈধ পেশায় নাম লেখাচ্ছেন তা স্পষ্ট নায়। নিঃসন্দেহে এটি ইসলাম, মুসলমান এবং সর্বোপরি মানবতার জন্য চরম হুমুকির কারণ। এতে মুখুশের আড়ালে হারিয়ে যাবে বিবেকের এবং চিরচেনা গর্বিত মুসলিম নারি। আর কেনইবা এই জঘন্যতম অবৈধ পেশায় লিপ্ত হবে?
ইসলামে রয়েছে তো- নারীকে মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং জীবিকা ও জীবন ধারণের ব্যাবস্থা করেছে; তাতে একজন নারী দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত অত্যন্ত সম্মানের সাথে জীবন কাটিয়ে যেতে পারবে। এমন ব্যাবস্থা করা হয়েছে যে,কখনও কর্মের হাত সম্প্রসারণ করলেও তাকে ক্ষুধা বা অনাহারে থাকতে হবে না। জন্মের পর বাবা, বিয়ের পর স্বামী, স্বামী মারা গেলে ছেলে মেয়ের ওপর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব বর্তানু হয়েছে। যদি এই তিন শ্রেণির কোথাও গিয়ে আটকে যায় তাহলে অন্যান্য নিকটাত্মীয় বা রাষ্ট্রপক্ষের কর্তব্য হয়ে যায় ওই নারীর সম্মানজনক আহার ও বাসস্থানের ব্যাবস্থা করা।
মোট কথা একজন নারীর কোন স্থর এমন নেই,যেখানে তার সম্মানজনক জীবিকার ব্যাবস্থা নেই। অতএব একজন নারীকে এমন একটি জঘন্য পেশা বেছে নেবে এবং ব্যভিচারের মাধ্যেম অর্থ উপার্জন করার কোন বৈধতা নেই। সুস্পষ্ট হারাম, সুস্পষ্ট হারাম।
ইমাম নববী (রাহি.) বলেন বিশ্বের সকল মুসলমানের ঐক্যমতে তা হারাম। শরহে নববী ২/১৯।

লেখক: সীমান্তের আহ্বানের জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা সিলেট-এর প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.