ধর্ষণের এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেননি: মাওলানা আফেন্দী
1 min readনূর হোসাইন সবুজ: দেশব্যাপী মহামারির আকার ধারণ করা ধর্ষণ, সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতন বন্ধে কার্যকর কঠোর পদক্ষপ গ্রহণ এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরী ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
আজ রবিবার (১১ অক্টোবর) বাদ আছর ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

প্রতিবাদ সমাবেশে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, আন্দোলনরত তৌহিদী জনতা, এদেশের জনগণ, এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা ধর্ষণের এই বাংলাদেশ দেখার জন্য দেশ স্বাধীন করেননি। আমার মা, আমার বোনের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে এই তামাশার বর্বরতা দেখার জন্য এই দেশ স্বাধীন হয়নি। মানুষরূপি পশুদের হিংস্রতা দেখার জন্য আমরা লাল-সবুজের পতাকা হাতে পাইনি।।
তিনি বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমার মা কিংবা বোন ধর্ষিত হয়নি, ধর্ষিত হয়েছে আমর স্বাধীনতা। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে যেই নারকীয় ঘটনা আমরা দেখেছি, সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীর উপর অত্যাচারের যে স্ট্রীম রোলার চালিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কালিমালেপন করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বলতে হচ্ছে, কোন দেশে যদি জবাবদেহিতা মূলক সরকার না থাকে, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক হতে পারে, তা আমরা আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
মাওলানা আফেন্দী বলেন, আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই ধর্ষক কুলাঙ্গারদেরকে অনতিবিলম্বে থামাতে হবে। যেই দেশে আমার মা, কন্যা, বোন, স্ত্রী নিরাপদে থাকতে পারে না, সেই দেশে কাফন নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছি না।
মাওলানা আফেন্দী আরো বলেন, একজন ঈমানদারের উপর সতর ঢাকা ফরজ। আর শয়তান এটার উপরই হামলা করেছে। আমাদের আব্বাজান হযরত আদম (আ.) এবং আম্মাজান হযরত হাওয়া (আ.)কে বিবস্ত্র করে জান্নাত থেকে বের করেছে। মানুষ এবং মানবতার চির শত্রু শয়তান ও শয়তানের দোসরেরা আজও মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্যে বেহায়াপনা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু ধর্ষণের বিচার নয়, জেনা ব্যভিচারের শাস্তিও এই দেশের মানুষ দেখতে চায়। নচেৎ আমরা কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। কঠিন এবং গরম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। প্লিজ আমাদেরকে বাধ্য করবেন না। মা-বোনদের ইজ্জত লুন্ঠিত হবে আর কেউ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করবে, আমরা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দিবো না।
ঢাকা মহানগর জমিয়তের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বশিরুল হাসান খাদিমানীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল আলম, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, মাওলানা নুরুল আলম ইসহাক্বী, মাওলানা হাফেজ ওমর আলী, মাওলানা হাসান আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নূর মোহাম্মাদ ও মহানগর যুব জমিয়তের সভাপতি মুফতী সাইফুদ্দীন ইউসুফ ফাহীম প্রমূখ।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বের হয়ে পল্টন মোড় হয়ে বিজয় নগর গিয়ে শেষ হয়।