ঢাকা-ভোলা লঞ্চে যৌন হয়রানির শিকার কিশোরী, ধর্ষকদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি
1 min readএইচ এম মাসুদ: ঢাকা-ভোলার বেতুয়া নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ কর্ণফুলি-১৩ ষ্টাফদের যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন এক কিশোরী (১৬) যাত্রী।
৪ঠা জুলাই রোজ শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ঐ কিশোরী আত্নরক্ষায় মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেয়ার পর লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কিশোরীকে নদী থেকে উদ্ধার না করে ঢাকায় চলে যায়। পরে মাছ ধরার ট্রলারের মাঝিরা কিশোরীকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই কিশোরী তজুমদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে উপজেলার বিচ্ছিন্ন তেলিয়ার চরের মোঃ কবিরের মেয়ে।
আজ সন্ধ্যা ৭টায়(৫ই জুলাই ২০ইং) রবিবার ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ আবুল হাশেম ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন যৌথ বিবৃতিতে জেলা কার্যালয়ে এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ধর্ষকদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না হওয়ায় এরকম ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটে, তাই আমরা অনতিবিলম্বে ধর্ষণের উদ্দেশ্য কিশোরীকে যৌন হয়রানির দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, হাসপাতালে ভর্তি কিশোরী বলেন, কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তজুমদ্দিন স্লুইজগেট থেকে কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চে উঠে। লঞ্চে উঠার পর লঞ্চের ষ্টাফরা ঐ কিশোরীকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাবের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কিশোরীকে তাদের সাথে কেবিনে রাত্রি যাপন করতে টানাটানি করলে ইজ্জত রক্ষার্থে সে নদীতে ঝাঁপ দেন।
কিশোরী আরও জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করতে একটি বয়া ফেললেও পানির স্রোতে বয়া ধরতে পরেনি সে। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধারে অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান লঞ্চটি। পরে প্রায় ৩ ঘন্টা পর জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে কিশোরী তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
নেতৃদ্বয় আরোও বলেন,আমরা চাই দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করা হোক, কিশোরীকে উদ্ধার করা নৌকার জেলে রায়হান বলেন, সন্ধার সময় আমরা নদীতে মাছ ধরার জন্য নৌকা প্রস্তুত করছিলাম হঠাৎ নদীর মাঝে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে আমরা তাকে উদ্ধার করে দেখি মেয়ে। পরে তাকে মিজান তালুকদারসহ অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চের সুপারভাইজার মোঃ রুবেল বলেন, আমি লঞ্চের উপরে ছিলাম পরে শুনছি লঞ্চ থেকে একজন মহিলা পানিতে লাফ দিয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য আমরা একটি বয়া ফেলছি সে বয়া ধরতে পারেনি। আমরা ঢাকায় চলে যাই পরে কি হয়েছে জানি না।
তজুমদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ শামীম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঐ কিশোরীর সাথে কথা হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল বলেন, রোগীর ভাষ্যমতে তাকে লঞ্চের ষ্টার্ফরা অনৈতিক প্রস্তাব দিলে সে নদীতে ঝাপ দেয়ার সময় ডান হাতে আঘাত পায়। জেলেরা নদী থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনলে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা ভালো রয়েছে।