[মুফতি আমিনুর রশিদ গোয়াইনঘাটী]
ঈদের নামাযের নিয়্যাত সংক্রান্ত মাসআলা : (ক) মুখে উচ্চারণ করে নিয়্যাত করা জরুরী নয়। নিয়্যাতের হাক্বীকত এবং প্রকৃত অর্থ হল, ইচ্ছে করা, সংকল্প করা। আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামাতের উলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে নামাজের নিয়্যাত অন্তর দিয়ে করলেই যথেষ্ট হয়ে যাবে। যদিও সালাফীরা এ ব্যাপারে হানাফী উলামায়ে কেরামের ওপর অহেতুক মিথ্যে অপবাদ দিয়ে থাকে যে, হানাফী উলামায়ে কেরাম না কি বলে থাকেন, মুখে উচ্চারণ করে নামাজের নিয়্যাত করতে হবে।( দেখুন, সালাফীদের রচিত -সালাত অব দ্যা প্রুফেট পৃ: ১০)।
সুতরাং তাদের এ অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। (দুররুল মুখতার -সালাত অধ্যায়)
(খ) যদি কেউ ঈদের নামাযের ( অথবা অন্য কোন নামায, রোযা ইত্যাদি) নিয়্যাত অন্তর দিয়ে (যেমন -আমি ঈদুল ফিতরের দু’ রাকাত ওয়াজিব নামায ৬ তাকবীরের সাথে ইমাম সাহেবের পিছনে পড়ছি) করার সাথে সাথে (একাগ্রতার কারণে) মুখেও উচ্চারণ করে, তাহলে বেশ ভাল ( মুস্তাহাব)। এটাই নির্ভরযোগ্য মত। (আদ -দুররুল মুখতার-১/৩৯৪, কাযী খাঁন, হেদায়া -১/৯৬, শামী-১/৩৮৬) ।
(গ) তবে মুখে উচ্চারণ করে নিয়্যাত করতেই হবে, এমন বিশ্বাস রাখাটা বিদআত। সালাফীরা এখানে একটা বিভ্রান্তি ছড়ায়, তারা বলে বেড়ায়,’ নামাযে মুখে উচ্চারণ করে নামায পড়া বিদআত’ ( দেখুন, তাদের রচিত-সালাত অব দ্যা প্রুফেট-১০)। আসলে নামাযে মুখে উচ্চারণ করে নিয়্যাত করলেই বিদআত হয়ে যায় না বরং মুখে উচ্চারণ করে নিয়্যাত করাটা জরুরী মনে করা বিদআত। (ফাতাওয়া দারুল উলুম-২/১৮৪, আহসানুল ফাতাওয়া -৩/১৩)।
আল্লাহ তা’লা আমাদেরকে সালাফী ফিতনা থেকে হেফাজতে রাখুন এবং সঠিকভাবে মাসআলা বোঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। অা-মীন।।
লেখক: মুফতি, মুহাদ্দিস, খতিব ও কলামিস্ট।