ভাঙ্গুড়ায় নদীর মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে নেতাদের বিরুদ্ধে  - Shimanterahban24
June 9, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

ভাঙ্গুড়ায় নদীর মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে নেতাদের বিরুদ্ধে 

1 min read

রাজিবুল করিম রোমিও।।

পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা এলাকায় গুমাণী নদীর মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে।

প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত মাটি কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটের ভাটায়।


এতে করে এস্কেভেটর মেশিন ও ট্রাকের উচ্চ শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশ কয়েকজন নিজেদের নাম গোপন রাখার শর্তে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মোবাইলে অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, গত দেড় বছর আগে শত কোটি টাকা ব্যয়ে এই গুমানী নদী খনন করা হয়। সে সময় বিআইডব্লিটিএ এই এলাকায় দায়সারাভাবে নদী খনন কাজ শেষ করেন। তারা মাটি কেটে নদীর মধ্যেই রেখে দেন।

এরপর থেকে উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ দফায় দফায় নদীর মাটি বিক্রি করছেন। তার এই কাজে আরো জড়িত রয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন ও যুবলীগের সভাপতি মজির উদ্দিন।

তারা মাটি বিক্রির টাকা ভাগ যোগ করে নেন।

এর আগে মাটি কাটার সময় উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কয়েকবার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এরপর কিছুদিন মাটি কাটা বন্ধ রাখে তারা। পরে সুযোগ বুঝে আবার মাটি বিক্রি শুরু করে।

সর্বশেষ গত মাসের শুরুতে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে। এরপর সুযোগ বুঝে গত তিন-চার দিন হলো রাতের আঁধারে আবারো মাটি কাটা শুরু করেছে দুর্বৃত্তরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অষ্টমনিষা ও হরিহরপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে গুমাণী নদী থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। মাটি কেটে নেওয়ার পরই ওইসব স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে নদী এলাকা থেকে ট্রাকগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু পাশেই এস্কেভেটর মেশিন রাখা আছে।

এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে নদীতে মাটি কাটা হয়। ১০-১২টি ট্রাক দিয়ে এসব মাটি এই স্থান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে শাহনগর গ্রামে কল্লোল সরকারের ইটের ভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ অবস্থায় ট্রাক থেকে সড়কে মাটি পড়ে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিতে প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগেই এস্কেভেটর মেশিন ও ট্রাক নদী থেকে সরিয়ে নিয়ে অন্যত্রে রাখা হয়। এদিকে এস্কেভেটর মেশিন ও ট্রাকের তীব্র শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না বলে জানান তারা।

এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ আলী, যুবলীগের সভাপতি মজির উদ্দিন ও ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস না পারলেও গোপনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।

নদীর মাটি ক্রয় করা ইটভাটা মালিক কল্লোল সরকার সময়ের সংবাদ কে বলেন, আমি নদীর মাটি কিনি নাই। নদীতে পানি কম থাকায় মাটি কেটে আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহেদ ও যুবলীগ নেতা মজির আমার ইটের ভাটায় জমা রাখছে। পরে সুবিধামতো সময়ে সরিয়ে নেবে বলেছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অষ্টমনিষা গ্রামের একজন বাসিন্দা সময়ের সংবাদ কে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহেদ আলী দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির একজন মানুষ। এলাকায় যত অপকর্ম হয় সব তার ইঙ্গিতে হয়। কিন্তু কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। কারণ ওই নেতার সহযোগী যুবলীগ নেতা মজির উদ্দিন একাধিক হত্যা মামলার আসামি।

অভিযুক্ত অষ্টমনিষা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ আলী এবিষয়ে সময়ের সংবাদ কে বলেন, আমি পূর্বে নদীর মাটি কেটে বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার আমি মাটি কাটছি না। যুবলীগের সভাপতি মজির উদ্দিন কাটতে পারে।

তবে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মজির উদ্দিন এবিষয়ে সময়ের সংবাদ কে মুঠোফোনে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ আলী, ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ আলী, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ও আমি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে নদীর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছি।

তাহলে কোনো দপ্তরের অনুমতি নিয়ে এবং রাতের আঁধারে মাটি কাটছেন কেন প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে সময়ের সংবাদ কে অষ্টমনিষা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল বলেন, লকডাউনের কারণে গ্রামের লোকজন সারাদিন বাড়িতে বসে থাকে। এরওপর সারারাত ট্রাক এবং এস্কেভেটর মেশিনের শব্দে মানুষ ঘুমাতেও পারছে না। গ্রামবাসী আমার কাছে এসে প্রতিনিয়ত অভিযোগ দিচ্ছে। কিন্তু আমি কি করব। প্রশাসন বিষয়টি জানে। কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। তাহলে আমরা যাব কোথায়।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান সময়ের সংবাদ কে বলেন, একাধিকবার অভিযোগ পেয়ে নদীর মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। এরপর আবারও ওই দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে মাটি কাটা শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে নদীর মাটি কাটা বন্ধ করতে এবং অভিযুক্তদের আটক করতে নির্দেশ দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.