দ্যা স্টোরি অফ এ মুসলিম লিডার - Shimanterahban24
June 5, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

দ্যা স্টোরি অফ এ মুসলিম লিডার

1 min read

জন্ম: ১৯৪৫ সালের ১০ই জানুয়ারী মোতাবেক রোজ শুক্রবার বাদ জুমা কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার চড্ডা নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

নাম: নূর হোসাইন, উপাধি: বাংলার মাদানী, লকব: কাসেমী, ছাত্র সমাজে বাযী নামেও প্রসিদ্ধ।

শিক্ষা জীবন:
তিনি বাবা মায়ের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। পাড়ার অন্যান্য ছেলেদের সাথে তাকেও প্রথমে স্কুলে ভর্তি করানো হয়। চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত তিনি নিজ গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করেন। তারপর ভর্তি হন পার্শ্ববর্তী গ্রামের কাশিমপুর মাদ্রাসায়। এখানে পড়েন মুতাওয়াস-সিতাহ পর্যন্ত। তারপর বরুড়ার ঐতিহ্যবাহী জামিয়া দারুল উলুমে ভর্তি হন। সেখানে হেদায়া পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা সমাপ্ত করেন।

দারুল উলুম দেওবন্দে গমন:
বাবার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও তার অঘাত প্রতিভার ফলে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ব বিখ্যাত বিদ্যাপিঠ দারুল উলুম দেওবন্দে পাড়ি জমান। কিন্তু ভর্তির নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে না পারায় সাহারানপুর জেলার বেরিতাজপুর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে জালালাইন জামাত পড়েন। তারপর দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন ও ইলমি পিপাসাকে নিবারণের জন্য ভর্তি হন দারুল উলুম দেওবন্দে। দারুল উলুমে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আপন মেধা ও প্রতিভায় আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে অন্যান্য ছাত্রদের মধ্য হতে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করে নেন। সফলতা তার পদচুম্বন করতে থাকে। এখানে তৎকালীন শ্রেষ্ঠ আলেম আল্লামা সায়্যেদ ফখরুদ্দীন আহমদ মুরাদাবাদী রহঃ এর কাছে বোখারী শরিফ পড়েন। মুরাদাবাদী রহঃ এর অত্যন্ত নিকটতম ও স্নেহভাজন হিসেবে তিনি অল্প সময়ে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করে ছিলেন।তাকমিল জামাত পড়ার পর আরো তিন বছর বিভিন্ন বিষয়ের উপর ডিগ্রি অর্জনে নিমগ্ন থাকেন। এ সময় তাকমিলে আদব, তাকমিলে মাকুলাত, তাকমিলে উলুমুল আলিয়া সমাপ্ত করেন।

শিক্ষকবৃন্দ:
তার প্রসিদ্ধ কয়েকজন উস্তাদ হলেন, মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমদ মুরাদাবাদী রহঃ কারী তায়্যিব রহঃ ওয়াহিদুজ্জামান কিরানাভী রহঃ শাইখুল হাদিস যাকারিয়া রহঃ মাওলানা মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহী রহঃ মাওলানা শরীফুল হাসান রহঃ মাওলানা নাসির খান রহঃ মাওলানা আনযার শাহ রহঃ সহ আরো বিশ্ববরেণ্য উলামায়ে কেরাম।

কর্মজীবন:
মুরাদিয়া মাদ্রাসায়;
তিনি প্রথমে তার উস্তাদ মাওলানা আব্দুল আহাদ রহঃ এর পরামর্শে আল্লামা কাসেম নানুতুবী রহঃ এর প্রতিষ্ঠিত ভারতের মুযাফফারনগরে মুরাদিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। সেখানে একবছর শিক্ষকতা করেন।

মুহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসায়;
১৯৭৩ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে সর্বপ্রথম শরীয়তপুর জেলার মুহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসায় শাইখুল হাদিস ও মুহতামিম পদে যোগদান করেন।

ফরিদাবাদ মাদ্রাসায়;
১৯৭৮ সালে জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় যোগদান করেন। তিনি ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন যাবত দারুল ইকামার দায়িত্ব পালন করেন।

মালিবাগ মাদ্রাসায়;
১৯৮২ সালে চলে আসেন জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগে। এখানে তিরমিজি শরিফের দরস দেন। মালিবাগে ৬ বছর শিক্ষকতার করেন।

বারিধারা, সুবহানিয়া মাদ্রাসায়;
১৯৮৮ সাল থেকে অধ্যাবধি নিজের প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা এবং ১৯৯৮ সাল থেকে জামিয়া সুবহানিয়া মাদ্রাসায় শাইখুল হাদিস ও মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এছাড়াও তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই বিভিন্ন পদে থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ আঞ্জাম দিয়ে আসছেন, বর্তমানে তিনি বেফাকের সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন।
তিনি জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা এবং সুবহানিয়া ও চৌধুরীপাড়া মাদরাসা সহ দেশের কয়েকটি মাদরাসার শায়খুল হাদিস এবং অসংখ্য মাদরাসার মুরব্বি হিসেবে রয়েছেন।

আধ্যাত্নিক জীবন:
১৯৭৩ সালে শাইখুল হাদিস যাকারিয়া রহঃ এর কাছে প্রথমে বায়াআত হন। তার ইন্তেকালের পর মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহী রহঃ এর কাছে বায়আত হন।
১৯৯৫ সালে মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহী রহঃ বাংলাদেশে আসলে সেসময় তার কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন। বর্তমানে তিনি খানকায়ে মাহমুদিয়ার আমির।

রাজনৈতিক জীবন:
১৯৭৫ সালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে যোগদান করেন। তারপর ১৯৯০ সালে জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসেন।
২০১৫ সালের ৭ই নভেম্বর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে মহাসচিবের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। অধ্যাবধি তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়বে আমির এবং ঢাকা মহানগরীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
২০১৩ সালে হেফাজতের আন্দোলন থেকে শুরু করে অধ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রত্যেকটি আন্দোলনে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করে আসছেন।

পারিবার:
তিনি দুই ছেলে (যুবায়ের,জাবের) এবং দুই কন্যা সন্তানের জনক।

পরিশেষে বলবো:
হাদিসের মসনদে তিনি,
শায়খুল হিন্দের প্রতিচ্ছবি।
সিয়াসতের ময়দানে তিনি,
হুসাইন আহমাদ মাদানীর প্রতিচ্ছবি।
তাযকিয়ায়ে নফসের জগতে তিনি,
মাহমুদ গাংগুহির প্রতিচ্ছবি।
তিনি দেওবন্দের সন্তান, তিনিই দেওবন্দিয়্যাতের লালন কারি।

একবিংশ শতাব্দীর এই মুসলিম সাধক এখন বাংলাদেশের বিশ কোটি মানুষের কাছে আপোষহীন নেতা হিসেবে পরিচিত, তিনি হাজার হাজার ছাত্র গড়েছেন, তিনি তার সাহসিকতায় বাংলাদেশের ইসলাম প্রেমী তাওহিদী জনতার অন্তরের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছেন।

তিনি যেন হাজার বছর বেঁচে থাকেন।
আমরা যেন এই সাধকদের যথাযোগ্য কদর করতে পারি।

মাহমুদ আল হাবীব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.