তোমার স্মৃতির আঙ্গিনায় (পর্ব- ২)
1 min read[চৌধুরী ক্বায়নাত]
গাড়ীতে বসে কয়েক ঘন্টা আগের কথা ভাবছিলাম।
কলেজ থেকে বাসায় ঢুকছিলাম তখনি মোবাইল টা বেজে উটল! কাস্টমার কেয়ারের কল মনে করে রিসিভ করিনি। পর পর ৩/৪বার রিং হওয়াতে মোবাইল হাতে নিয়ে যা দেখেছি তা দেখার জন্য আমি কখনো প্রস্তুত ছিলাম না। চোখ বড় বড় করে মোবাইল স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছি।
ইয়া আল্লাহ আমি কি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছি নাকি সত্যিই এই নাম্বার থেকে কল এসেছে?!!!!
এই যা……. কেটে গেল😞
আবার ও কল এসেছে এবার আর দেরিনা করে কল রিসিভ করেছি। ফোন কানে দিতে না দিতেই শুনতে পেলাম……….
— এই মেয়ে তুমি কার সাথে ডেটিং এ গেছ হুহহহ এতবার কল দেওয়ার পরেও রিসিভ করতে পারছনা! কলেজে গিয়েছ, নাকি ফাকি দিয়েছ?
., করো সাথে ডেটিং এ যাওয়ার মতো ফালতু কোন ইচ্ছা আমার নেই। আর আমি কখনো ক্লাস ফাকি দেই না।
– তাহলে দুপুরে একসাথে খাব।
.,এমনিতেই আতঙ্কে আছি। আবার ঝাটকা দিও না।
– কিসের আতঙ্ক মিমি!
., তুমি জাননা! যে মানুষটাকে আমি একমাস ফোন না করলে ও আমার খবর নেয়না। কলের কথা নাহয় বাদ দিলাম, মিস কল ও দেয়না। সে মানুষ টা আজ নিজ থেকে ফোন করেছে। এটা আতঙ্ক নয় তো কি! আবার একসাথে লাঞ্চ করার কথাও বলছে। আচ্ছা একটা কথা বলতো!।
– হুম বল কি কথা?
., তুমি কি মাথায় বারি খেয়েছ কোথাও, অনেক বেথা পেয়েছ তাই এসব বলছ!!!!!
— চুপ আর একটা কথাও বলবেনা,(চেচিয়ে বললো)
তুমি বিকেল ৩:৩০ মিনিটে জামে মসজিদের গেটে আসবে সেখান থেকে কফি খাওয়াতে নিয়ে যাব তোমাকে। ডাইনী তুমি ডায়েরি লিখ না, আজকের দিনটাও লিখে রেখো আজ আমাদের ১ম ডেট।
.,হুমম।
আমিতো পোরাই স্তব্ধ হয়ে আছি আমার মুখে কোন কথাই আসছেনা। কতক্ষণ একভাবে খাটে বসে থাকতাম জানি না, যদি না আম্মু খাওয়ার জন্য ডাকতে না আসতো।
মা একটা কথা বলি?
এই কথা কানে যেতেই ফিরে এলাম ভাবনার জগত থেকে। আরে ড্রাইভার বলেছে কথাটা,
., মামা কিছু বলবেন? আগে বলেন তো এটা কোন জায়গা। জায়গার নাম শুনে গাড়ি থামাতে বললাম।বেচারা ইরফানের আনেক কষ্ট হচ্ছে। একটু পড়েই এসে পড়বে। তখন গাড়িতে তুলে নিব।
মামা আপনি যেন কিছু বলছিলেন! একটু বয়স্ক ধরনের ওনি। খুব সাধা সিধে ভাব চেহারায়। ব্যবহার ও ভাল।দেখেয় বুঝা যায় এক জন সুখি মানুষ।
ড্রাইভার: ঐ ছেলেটারে অনেক আগের থেকে মসজিদের সিড়িতে বসে থাকতে দেখছি, আপনি আমার গাড়ির কাছে আসার আগে গিয়া পেপার পরতে নিছিল। হে আপনেরে অনেক মোহাব্বত করে।
., ওহহহ, ।আচ্ছা ঠিক আছে মামা। আমি ওনার জন্যই দাড়িয়েছি।
মামা আপনার বাড়িতে কেকে আছে?
— আমি আর আমার বউ।
., ওহহহ। ছেলে মেয়ে নেই?
—- না মা! আল্লাহ দেননি। তবে এটানিয়ে আমার আর আমার বউয়ের কোন দুঃখ নেই।
কিছুক্ষণ পরে ইরফান চলে এলো, খুব একটা জোর করতে হয়নি গাড়িতে ওঠে গেল।
তার দুইহাত দিয়ে খুব শক্ত করে আমার বা হাতটা ধরে রেখেছে।
হাত গুলোর সাথে আমার ডান হাতটা ও যুক্ত করে দিয়ে
কখনো ছেড়ে দিওনা। স্বাভাবিক কন্ঠ বলেছি।
কিছু বললোনা, শুধু চোখ বন্ধ করে নিল।
তাকিয়ে আছি ওর দিকে অপকহীন চোখে। কি নিষ্পাপ চেহারা আমার সমস্ত শান্তির ঠিকানা। কেন জানিনা কাথায় জেন একটা ভয় কাজ করছে। ইরফানের এমন নিরবতা যেন কোন ঝড়ের আগাম সংকেত। বুঝতে পারছিনা কিছু কেন এমন মনে হচ্ছে।
., ইরফান চোখ খোল এসে পড়েছি।
ভাড়া চুকিয়ে নেমে গেলাম, আমার সামনে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে,
— শাহজাদি আমি কি তোমার হাত ধরে হাটতে পারি?
.,, মুচকি হেসে, ডান হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে, হুমম পারতো।
একে অপরের হাতে হাত রেখে দুজন হাটছি। অন্য রকম এক অনুভুতি হচ্ছে, হাতে হালকা চাপ হতেই কেপে উঠে তাকিয়েছি তারদিকে, সে সামনে দেখে আছে। আমিও তার দৃষ্টি অনুসরণ করলাম।
একি!!!!!! পুরা রেষ্টুরেন্ট ফাকা…………
চলবে।