গোয়াইনঘাটে প্রশাসন সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধের গণকবর অর্ধ শতবর্ষেও সংরক্ষিত হয়নি
1 min readবালু খেকোদের তান্ডবে তীলে তীলে বিলীন হচ্ছে
আহমদ উল কবির সাজু :: ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার শতাধিক মুক্তিযুদ্ধাদের গণকবর প্রশাসন সংলগ্ন থাকলেও অর্ধ শতবর্ষেও সংরক্ষিত না হওয়ায় বিলীন হতে চলেছে। বালু খেকোদের তান্ডবে গণকবরের সীমানা আজ হারিয়ে যাচ্ছে তীলে তীলে। প্রয়োজন স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত স্থানটি সংরক্ষণের।
গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের সন্নিকটে বর্তমান গোয়াইন ব্রীজের পূর্বপারে পূর্নানগর গ্রামের আঃ মতলিবের বাড়ির পশ্চিমে বাঁশঝাড় আর ঝোপের অরন্যে ঘেরা স্হানে পশ্চিমা হায়েনার দল আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে গণ কবর দেয়। সে সময় ঐ স্হানের আশেপাশে পূর্নানগর টুক নামে বস্হিও ছিল। ১৯৮৮ইং সালের ২৩ মে গোয়াইনঘাটবাসিদের অভূতপূর্বভাবে পাহাড়ি ঢল আঘাত হানলে গোয়াইনঘাটের মানচিত্রে অনেক স্থানের পরিবর্তন ঘটায়। টুকবাসিরাও সরে পড়েন অন্যত্র। সেই থেকে কালের পরিক্রমায় মহান স্বাধীনতায় আত্মদানকারী শত বীর শহীদের গণকবরের ঐ স্থানটি আরও অবেলায় নিপতিত হতে শরু করে। এই গণ কবরের সন্ধান নিতে দশের বিভিন্ন স্থরের লোকজন এসেছেন এলাকোর মানুষের নিকট থেকে নিয়েছেন তথ্য কিন্তু ঐ গণকবরে শায়িত বীর শহীদের স্থানটুকু রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসছেন না। গণকবর বিলীন হচ্ছে গ্রামের গুটিকয়েক বালুখকোদের বেলচা আর কোদালের আঘাতে। মহান শহীদরা নিরব আর্তনাদে জানাচ্ছেন আমাদের উত্তরসূরীরা কি শেষ অস্তিত্বটুকু রক্ষা করতে পারবে না? আমরাতো জীবন দিয়ে তোমাদের জন্য স্বাধীন একটি দেশ রেখে এসেছি। তোমরা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে আমাদের পাশ দিয়ে ফুলের তোড়া নিয়ে যখন অন্যান্য শহীদ ভাইদের প্রতি উৎসর্গ কর তখন আমরও শান্তনায় গর্বিত হই আর আফসোস করি আমরা এতোটা অরক্ষিত কেন? জানা যায় ব্রীজ সংলগ্ন ঐ গণ কবরের পাশে বালু উত্তোলনে মাস খানেক পূর্বে প্রশাসন অভিযান চালিয়েছেন তারপর থেমে নেই বালু উত্তোলন। উত্তোলিত বালুর স্তুপ এখনও রয়েছ যাহা কতৃপক্ষ গেলে দেখতে পাবেন এবং জব্দ করতেও পারেন। প্রতি বছর এই ভাবে গর্ত করায় নদী গর্বে৷ তীলে তীলে বিলীন হতে যাচ্ছে মহান মুক্তিযোদ্ধে স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানটি। এই ভাবে অরক্ষিত রয়েছে হাটগ্রাম ও কামাইদ গণকবর। গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সমরে অংশ নেয়া সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন পূর্নানগরের এই স্থানে একশত মুক্তিযুদ্ধাদের গণকবর। অনেক জ্ঞানী গুনীজনরা এখানে এসেছেন, সেনাবাহিনীর লোকেরাও এসেছেন স্থান দেখেছেন। আমি গত পাঁচটি বৎসর কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি কোন ব্যবস্থা হয়নি। র্ারহালও তমাবিল গনকবরে কাজ হয়ছে বাকি গনকবরগুলো সুরক্ষা করা অতীব জরুরী। এ ব্যাপারে ইউএনও নাজমুস সাকিব বলেন এটা অত্যান্ত জরুরী বিষয় বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত হলেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে ব্যাবস্থা করবো। ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েস বলেন বিষয়টি নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভাসহ সরকারী একাধীক সভায় তুলে ধরেছি সাবেক ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল ঐ স্থানে মাটি ভরাট করে ডিসেম্বরে ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি বদলি হওয়ায়র হয়নি। আমি চাই দেশের পিরস্থিতি শান্ত হলেই সংশ্লিষ্টরা যেন ব্যাবস্থা নেন।প্রায় হজারখানেক মুক্তিযোদ্ধা অধ্যুষিত গোয়াইনঘাট উপজেলার সকল গণকবর সংরক্ষিত হউক এটাই বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযুদ্ধা পরিবারসহ সচেতন মহলের প্রত্যাশা।