এক মায়ের উপদেশ (পর্ব- ২)
1 min read[চৌধুরী ক্বায়নাত]
তিনি বলেন; মনে রাখবে, অহংকার পতনের মূল। অহংকার করে কেউ কখনো কিছু করতে পারেনি। নিজের ক্ষতি করে গেছে শুধু। কখনো যদি তোমার মনে অহংকার চলে আসে।তাহলে মৃত্যুর কথা একবার স্মরণ করবে।এরপরেও যদি অহংকার থেকে মুক্তি না পাও, তাহলে নিজের হাতকে একবার আগুনে একটু পুড়িয়ে নেবে। কেননা অহংকারী ব্যক্তি জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে অনন্তকালের জন্য।
আমি বললাম; আমার হাত আগুনে পুড়িয়ে নেব,তাহলে তো আমি অনেক ব্যাথা পাবো অনেক কষ্ট হবে আমার।
তিনি বলেন; হ্যাঁ কষ্ট হবে জানি তোমার। কিন্তু অনন্তকাল যখন তুমি জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে, তখন তার থেকে অনেক বেশি কষ্ট হবে। এটা নাহয় তোমার নিজেকে পবিত্র করার জন্য একটু শিক্ষা বা একটু শাস্তির ধরন, যা তোমাকে বুঝতে সাহায্য করবে আগুনে পুড়ার কষ্ট কতোট যন্ত্রণা দায়ক।
★জেনে রাখ, তোমাকে অহংকার মুক্ত হয়ে পবিত্র অবস্থায় আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে।
আমি বললাম; ঠিক বলেছেন। তারপরে বলেন,
তিনি বলেন; কারো সাথে কখনো রুক্ষভাবে কথা বলবে না। এতে মানুষ মনে কষ্ট পায়। ‘মানুষের কিন্তু গায়েবি জানার শক্তি থাকে না। না বলার আগে মনের কথা বোঝার ক্ষমতা মানুষের নেই’। কাজেই তোমার রুক্ষ ব্যবহার অন্য মানুষের মনে কষ্ট দিতে পারে। একারণেই তোমার মনের অবস্থা যাই হোক না কেন! (মন খুব খারাপ, খুব খারাপ, খুবই খারাপ) তারপরেও মানুষের সাথে সুন্দর ভাবে হেসে কথা বলবে।
কেউ যদি রেগে গিয়ে তোমার সাথে খুব রুক্ষভাবে আচরণ করে বা কথা বলে। তখন তুমি মুচকি হেসে তার সামনে থেকে সরে আসবে। কেউ মিথ্যা অপবাদ দিলেও তাকে মন্দ কিছু না বলে মুচকি হাসিতে চেহারা সজ্জিত করে রাখবে। কারণ, তার অপবাদ তোমার অন্তরে ঘৃনার কালো দাগ ফেলতে পারে।মুচকি হাসলে তোমার মন শান্ত থাকবে, মন শান্ত থাকলে তোমার মনে ঘৃনার কালো দাগ পড়তে পারবেনা।
আমি বললাম; কিন্তু আমি তো মানুষ, এমন অহেতোক কথা বললে আমার তো রাগ উঠবে। আর আমার সম্পর্কে আমি যা নয় তা বললে, আমার তো আমার খারাপ লাগবেই। তখনো কি আমি মুচকি হাসতে পারবো? এটা কি সম্ভব!?
তিনি বললেন; হ্যাঁ,তুমিও মানুষ আর তোমার রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা সকলেই মানুষ। কেউই মানুষের ঊর্ধ্বে নয় বলেই, আমাদের প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক। বরং প্রতিক্রিয়া না হওয়াটাই অস্বাভাবিক।! তুমি কি জানো “তোমার পরীক্ষাটা ঠিক এই প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু হয়ে যায়”।রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। আর তোমাকে তোমার রাগকে দমন করতে জানতে হবে। নিজের জন্য এবং সেই ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ যেন শয়তান হতে তোমাদেরকে আশ্রয় দান করেন। তোমার উপর যেন শয়তান হাভি হতে না পারে। শয়তানের ইচ্ছা যেন শয়তান তোমাকে দিয়ে পরিপূর্ণ করতে না পারে।
তখন তোমাকে নিজেকে নিজের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। আর তোমাকে মনে রাখতে হবে, তুমি আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ট সৃষ্টি,আল্লাহ তায়ালার কাছে দাসত্ব স্বীকার করতে বাধ্য এবং তোমাকে আল্লাহ তায়ালার আদেশ মেনে চলতে হবে। কিন্তু শয়তানের কাছে দাসত্ব স্বীকার করতে তুমি বাধ্য নও।আর শয়তানের ইচ্ছে তুমি পুরন করতেই পারো না।সৃষ্টির শ্রেষ্ঠের উপর শয়তান কখনোই জয় লাভ করতে পারে না।
মনে রাখবে, পৃথিবীর কোন মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কোন অধিকার তোমার বা কোন মানুষের নেই কেননা এ পৃথিবীতে তোমার যতটুকু অধিকার তারও ঠিক ততটুকুই অধিকার তুমি যেমন আল্লাহর সৃষ্টি সেও তেমন আল্লাহর সৃষ্টি।তার ওপরে মনে কোন খোভ রাখবেনা, কারণ সে শয়তানের কবলে পড়ে গিয়েছে। সে নিজেই বিপদগ্রস্ত অবস্থায় আছে।
তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবে।সে যেন নিজে নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রন না হারিয়ে ফেলে। নিজেই যেন নিজের ক্ষতি করে না বসে।
আমি বল্লাম ; ঠিক আছে বুঝতে পেরেছি। তারপরে বলেন…
(পরের অংশ ৩য় পর্বে)