জীবিকা হারানো সেন্টমার্টিনের ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিলো স্থানীয় ছাত্র ও যুবসমাজ - Shimanterahban24
June 8, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

জীবিকা হারানো সেন্টমার্টিনের ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিলো স্থানীয় ছাত্র ও যুবসমাজ

1 min read

মোঃ জাবেদ ইকবাল, টেকনাফ থেকে।। 

২ এপ্রিল তারিখে বিবিসির এক প্রতিবেদনের তথ্যে জানা যায়, আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলে মধ্যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে ধারণ করতে পারে এবং প্রায় কয়েক লক্ষাধীক মানুষ করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার অনেক সচেতন এবং দেশের চলমান পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন।

কিন্তু দেশের সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ সেন্টমার্টিনের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ দ্বীপের মানুষ পাচ্ছে না কোনো সহায়তা। দ্বীপে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বাস। বেকার হয়ে পড়েছে সবাই। এ মাসের ৩ তারিখে নৌবাহিনীর উদ্যোগে মাত্র ২শ পরিবারকে চাল-ডাল বিতরণ করে। সবার একটাই কথা এ অল্প ত্রাণে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না।

বিছিন্ন দ্বীপে এ সময় পর্যটকে ঠাসা থাকতো। কিন্তু চারদিকে এখন সুনসান নীরবতা। নেই কোনো পর্যটক। ঘাটে নোঙর করা আছে যাত্রীবাহী ও মাছ ধরার ট্রলারগুলো। বন্ধ রয়েছে হোটেল, রেস্তোরা ও বার্মিজ দোকানগুলো।

দ্বীপের বাসিন্দা, যাদের জীবিকা পর্যটক নির্ভর তাদের চোখে শুধুই হতাশার ছাপ। তারা বলছেন, করোনার প্রভাবে কাজ নেই তাই খেয়ে না খেয়ে চলছে আমাদের সংসার।

এ দুর্যোগ মুহুর্তে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে জীবিকা হারানো সেন্টমার্টিনের মানুষের এ দুর্দশার দিনে “সবার সাথে সবার পাশে” ব্যানারে- তৈয়ব, জসিম, বেলাল, জাবেরের যৌথ উদ্যোগে দ্বীপের একঝাঁক ছাত্র ও যুবসমাজ অসহায় ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা করেন।

৬ এপ্রিল সোমবার সকাল ১০ টা থেকে দিনব্যাপী ত্রাণ বিতরণ চল। সেন্টমার্টিন বিএন স্কুল এন্ড কলেজ, জিনজিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ পাড়া প্রাইমারী স্কুলসহ তিনটি ইউনিটের মধ্য দিয়ে দ্বীপের অসহায় ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা হরা হয়। প্রতিটি বস্তায় চাল-৫ কেজি, ডাল ১ কেজি, ছোলা ১ কেজি, নবণ ১ কেজি, আলো ২ কেজি, তৈল ১ লিটার, পেয়াজ ১ কেজি, ১ টি আইস সাবান, ৩ টি খাবার স্যালাইন, ১ পাতা নাফা প্যারাসিটালম, ১টি মাস্কসহ মোট ১১টি পণ্য রয়েছে।

ত্রাণ বিতরণে তিনটি ইউনিটে দ্বীপের ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, ব্যবসায়ীসহ দ্বীপের সর্বস্থরের জনগণ দায়িত্ব পালন করেন।

সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, মাহবুব উল্লাহ, ডাক্তার মুতালেব, মোঃ নাছির উদ্দিন, মোঃ ইসহাক,আলী হায়দার, জিয়াউল হক জিয়া এবং জয়নাল আবেদিন।

এসময় ত্রাণ সহায়তার কাজে দায়িত্ব পালনে ছিলেন,আবদুল্লাহ অমি,আলমগীর আকাশ, ফেরদাউস, আজিজুল হক, ফাহাদ, জাহিদ, রিয়াজ, আবছার, রবি আলম, আমিন, আবদুল্লাহ, কামাল, আয়ুব, ফায়সাল, সাদ্দাম, আয়াজ, হেলাল, বাপ্পী, আয়াছ, তৌহিদ, ওসমান, জয়নাল, শেফা উদ্দীন, ফারুক, আবদুল্লাহ দেওয়ান, শোয়াইব, নূর, মুজিব, আবছারসহ দ্বীপের অসংখ্য ছাত্র ও যুব সমাজ।

ত্রাণের বস্তা হাতে দক্ষিণ পাড়ার দিনমজুর আবুল বশর বলেন, “কি করোনা ভাইরাস ওগ্গা অ্যাঁইস্সে দেশত হুনিলাম ঘরত্তুন বাইর অই নপারির, হাম-হরজও নাই, টিয়া-পয়সাও ইনকাম নাই। বাজার-আজারতও যায় নপারির, বেশি হষ্টত আছি, এনডইল্লা অইলে আরা নহায় মরি যাইয়ুম বয়, সরকার অত্তুন অ্যারা খাদ্য চাই”।

অর্থাৎ দিনমজুর আবুল বশর বলছেন, কি করোনা ভাইরাস একটা শুনলাম আসলো দেশে, ঘর থেকে বাহিরে যেতে পারছিনা, কাজকর্ম কিছু নাই, টাকা পয়সা ইনকালও নাই, বাজারও যেতে পারছিনা, খুব বেশি কষ্টে আছি, এরকম হলে আমরা না খেয়ে মরে যাবো, সরকার থেকে আমরা খাদ্য চাই।

ত্রাণ নিতে আসা ষাটোর্ধে বৃদ্ধা মহিলা ফরিজা খাতুন বলেন, ” গত ৪ দিন ধরি পাশর ঘরত্তুন চইল উধার গরি আনিআনি চলিদ্দি। হন বইত্তা হায় ন হায় ঘরঘান চলেদ্দে। অনরার দান ইন মা’র দুধের সমান অইবো, দোয়া করি অনরাল্লাই”।( গত ৪ দিন ধরে পাশের ঘর থেকে চাউল ধার করে চলতেছি। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে ঘরটা চলছে। আপনাদের এ দান মায়ের দুধের হবে। আপনাদের জন্য দোয়া আমি করি)।

“সবার সাথে সবার পাশে” উদ্যোগতা তৈয়ব উল্লাহ বলেন, করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আমাদের দ্বীপের প্রায় ১২ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা। একদিকে করোনা আতঙ্কে আবার অন্য দিকে সব যোগাযোগ ও আয় রোজগার বন্ধ। এসময় আমি, জসিম, বেলাল, জাবেরসহ আরো দ্বীপের সচেতন কয়েকজনকে নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করি দ্বীপের অসহায়দের ত্রাণ সহায়তা করার। আলহামদুলিল্লাহ আমরা দ্বীপের ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, ব্যবসায়ীসহ সবার অংশগ্রহণে ” সবার সাথে সবার পাশে” ব্যানারে ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা করেছি। ঠিক এভাবে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসা উচিৎ মনে করছি।

ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা মানবাধিকার কমিশন সেন্টমার্টিন পর্যটন শাখার সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী জিয়াউল হক জিয়া বলেন, সকলের সম্মেলিত প্রচেষ্টায় দ্বীপের অসহায়ত্ব দুর্দিনে ৩০০ পরিবারকে সহায়তা দিয়েছি এবং দেশের পরিস্থিতি দেখে আমরা প্রয়োজনে আবারো ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা দিবো ইনশাআল্লাহ।
এসময় ত্রাণ সহায়তা পাওয়া সবাই খুশি মনে ত্রাণের বস্তা হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.