তাওবা কী ও তার শর্ত কী
1 min read[সাইদুজ্জামান আল হায়দার]
তাওবা একটি ইসলামী পরিভাষা।তার শাব্দিক অর্থ পাপ থেকে ফিরে আসা,প্রত্যাবর্তন করা, প্রত্যাগমন করা ইত্যাদি।তাওবার পারিভাষিক সংঙ্ঘায় মুফতী আমীমুল এহসান রাহ.বলেন – অন্তর দ্বারা গোনাহ না করার সংকল্পের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা। অতঃপর প্রতিপালকের যাবতীয় বিধানকে পালন করা।তাওবা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে অতীব প্রিয় একটি বিপ্লবী আমল।কোরআনের বাণী”নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন”(সূরা বাকারা আয়াত নং ২২২)
তাওবার শর্তাবলী – তাওবা কেবল বিড়ালের মত মুখে উচ্চারিত একটি শব্দ নয় বরং তাওবার পর থেকে এমন আমল বিকাশ হওয়া উচিৎ যা তাওবাকারীর সত্যতার প্রতি নিরন্তর আহবান করে। তাই উলামায়ে কেরাম শরীয়তের আলোকে তাওবা কবুল হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত উল্লেখ করেছেন। গোনাহের দুই অবস্থা।
একটি হক্বকুল্লাহ তথা আল্লাহর হক নামাজ,রোজা ও জাকাত ইত্যাদি পরিত্যাগ করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে হক্বকুল আবদ তথা মানুষের হক নষ্ট করা যেমন ঋণ,চুরি ও অপবাদ ইত্যাদি দেয়া।
প্রথমটি অর্থাৎ হক্বকুল্লাহ বিষয়ক তাওবা কবুল হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। (১) এক-গোনাহটির মূলোৎপাটন করতে হবে। অর্থাৎ যে সব আসবাবের কারণে পাপ সংগঠিত হয় তা একেবারে নিঃশেষ করে দিতে হবে।যেমন কোন ব্যাক্তি গান -বাজনার দ্বারা গোনাহ করে তখন তার জন্য আবশ্যক হলো সে তাওবা করার সাথে সাথে গান -বাজনা করার সব যন্ত্রপাতি ও ধ্বংস করে দিতে হবে যা তার কাছে বিদ্যমান আছে। এরকম সর্বপ্রকার পাপ স্ব মূলেৎপাটন’ই তাওবা কবুলের শর্ত।
(২)দুই.কৃত গোনাহের উপর অবশ্যই অনুতপ্ত-লজ্জিত হতে হবে। (৩)তিন.ভবিষ্যতে আর কখনো এধরণের গোনাহ না করার পরিপক্ব সংকল্প করতে হবে।
উল্লেখিত কোন একটি শর্ত ছুটে গেলে তাওবা কবুল হয়নি বলে মেনে নিতে হবে।
আর গোনাহটি যদি দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থাৎ হক্বুল আবদ সম্পর্কিত হয়।তখন তাওবার জন্য চারটি শর্ত অপরিহার্য। উল্লেখিত তিনটি শর্ত আর চতুর্থ হচ্ছে যদি কোন বান্দার মাল আত্মসাৎ করে থাকে তাহলে তার মাল অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। যদি কোন বান্দাকে অন্যাভাবে অপবাদ দিয়ে থাকে আর এর জন্য হদ্দে কযফ আসে তাহলে তার সেই অপবাদ দূর করার উদ্যেগ অবশ্যই নিতে হবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর এসকল পাপ থেকে অাজীবনের জন্য ফিরে আসার দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। নিরন্তর আফসোসের বিষয় মুসলিম উম্মাহ বান্দার হকের ব্যাপারে সর্বোচ্চ উদাসীন। যদি ও টেলায় পড়ে তাওবা করেন।
লেখক – মুহাদ্দিস,রাজনীতিবিদ,সমাজসংস্কারক ও কলামিস্ট।