দেশে করোনা সংক্রমণের 'পিক টাইম' এপ্রিল সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের - Shimanterahban24
June 5, 2023

Shimanterahban24

Online News Paper


Warning: sprintf(): Too few arguments in /home/shimante/public_html/wp-content/themes/newsphere/lib/breadcrumb-trail/inc/breadcrumbs.php on line 254

দেশে করোনা সংক্রমণের ‘পিক টাইম’ এপ্রিল সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

1 min read

কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধে গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ

  1. পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেশে এপ্রিল মাসকে ‘পিক টাইম’ (সর্বোচ্চ ব্যাপ্তির সময়) মনে করা হচ্ছে। দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিদেশফেরতদের দেশে আসার সময়ের ওপর নির্ভর করে এ আশঙ্কা করছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে এপ্রিলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। গবেষণাগারের প্রাপ্ত তথ্য উল্লেখ করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডাবিস্নউএইচও) এক প্রতিবেদন জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের বংশবিস্তারে সময় লাগে ৫ দশমিক ৫ দিন। আক্রান্ত হওয়ার ১২ দিনের মধ্যে মানুষের শরীরে এর লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। লক্ষণ দেখা যাক বা না যাক আক্রান্ত মানুষ ভাইরাসটির বিস্তার ঘটাতে সক্ষম। এর অর্থ হলো আক্রান্ত হওয়া থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি সংক্রমণের বিস্তার ঘটাতে পারে। দেশে ১৮ মার্চ থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ সময়ের পর আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। এর মধ্যে তাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে অনেকে। এই চক্রকে যদি ঠেকানো না যায় তাহলে এপ্রিলের মধ্যে দেশে মহামারী আকারে ছড়িয়ে

পড়তে পারে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। বিষয়টি ব্যখ্যা করে স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা মান্নান আহমেদ বলেন, প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। বাংলাদেশে এপ্রিলের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে অনেক বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছি। আমরা একটি সীমিত সম্পদের দেশ। তাই অল্প কয়েক হাজার আক্রান্ত রোগীও স্বাস্থ্যসেবার চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফেলতে পারে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুবার নেগেটিভ এলেই কেবল আক্রান্তরা বিচ্ছিন্নতা থেকে ছাড়া পেতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্ন থাকা কোনো ব্যক্তির লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাদের পরিবারের সদস্যদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। তাই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা মানা না হলে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কোনো মহামারীতে একজন আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে সরাসরি কতজন আক্রান্ত হতে পারে তা বেসিক রিপ্রোডাকশন নম্বর বা আর.ও নামে পরিচিত। কভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে এই আর.ও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ নতুন ধারার সংক্রামক রোগ সবাইকে সন্দেহভাজনের তালিকায় ফেলেছে।

এদিকে কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেশব্যাপী ১০ দিনের ছুটির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতিতে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জাহিদ হক। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষিতে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছেন।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা জাহিদ হক বলেন, ভাইরাসের বিস্তার হরাস করার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বকে বজায় রাখা সফল করতে সেনা মোতায়েন করাটা সরকারের আরেকটি বড় পদক্ষেপ।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস অ্যালায়েন্সের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একজন সিনিয়র অ্যাডভাইজার জাহিদ হক বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচার চালানো উচিত, এক্ষেত্রে বিএনসিসি ক্যাডেটস এবং রোভার স্কাউটদের ডাকা যেতে পারে।জাহিদ হক বলেন, কোভিড-১৯ রোগীকেও অন্য সাধারণ ফ্লু রোগীর মতো চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে, সবার কাছে অনুরোধ করছি, করোনাভাইরাস একটি ভাইরাল রোগ, তাই এর চিকিৎসায় কোনো অ্যান্টিবায়োটিক এবং ব্যাথানাশক ব্যবহার করবেন না।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভাইরাসটি পাঁচদিনের মধ্যে শরীরে বিকশিত (ডেভেলপ করে) হয়, এর লক্ষণগুলো দেখা দেয় সর্বোচ্চ ১৪ দিনের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা হলো, রোগীকে শুধুমাত্র আলাদা করে (আইসোলেটেড) রাখা।’

জাহিদ হক একজন স্বাস্থ্য পরামর্শক হিসেবে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাস কোনো বায়ুবাহিত রোগ নয়। তবে, এটি সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি ও কফ এবং তাকে স্পর্শ করা মাধ্যমে ছড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভাইরাস মাটিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে, সাধারণ জীবাণুনাশক একে মেরে ফেলতে পারে।’

এদিকে জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কভিড-১৯ এর আর.ও ২ দশমিক ৪৯ থেকে ২ দশমিক ৬৩ পর্যন্ত হতে পারে। এর অর্থ হলো একজন আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে ২ দশমিক ৫ জনেরও বেশি মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি ১০ জন বা ১০০ জনের মধ্যেও রোগটি ছড়িয়ে দিতে পারে। তাদের চরম সংক্রামক বলা হয়ে থাকে। চীন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রে এরকম চরম সংক্রামক থাকার প্রমাণ মিলেছে। তাই সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে ঘরে থাকাই হচ্ছে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর মহৌষধ।

ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড রিচার্চ (আইইডিসিআর) মতে, বাংলাদেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছে এবং ৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.