রেঙ্গা মাদরাসার সরপরস্ত শামসুল ইসলাম খলীলের খোলা চিঠি
1 min read
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
প্রিয় দেশবাসী ও প্রবাসী ভাই ও বোনেরা। আশা করি মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা যে যেখানে আছেন ভালোই আছেন। কামনা ও তাই। আমরাও আপনাদের নেক দোয়া ও আল্লাহর মেহেরবানীতে ভালো আছি।
পর কথা হলো প্রিয় ভাই ও বোনেরা।
বর্তমান পৃথিবীকে থমকে দেয়া এক ভয়াবহ মহামারীর নাম করোনা ভাইরাস। এশিয়া,আফ্রিকা, ইউরোপ,আমেরিকা সহ উপমহাদেশের প্রতিটি দেশ আজ এই ভাইরাসে জর্জরিত,লকডাউন হচ্ছে একের পর এক দেশ। মুসিবত দিন দিন কঠিন থেকে কঠিন হচ্ছে. চারদিক অন্ধকার হয়ে আছে. নতুন রোগীর সংখ্যা দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে.
মৃতের সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে! জাতির এই মহা দুর্দিনে আমরা আপনাদেরকে ভুলিনি। জামেয়া রেঙ্গার আসাতিযা, তালাবা ও আমি অধম.
সর্বদা সমস্ত জগৎবাসীর জন্য দোয়া করছি। রাব্বে কারীম যেন সবাইকে এই করোনাভাইরাস থেকে হেফাজত করেন। ঈমান ও আমল কে মজবুত করে তাওবা ও ইস্তেগফার এর মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার তাওফীক্ব দান করেন.আমীন।
★ নিম্মবর্ণিত সাবধানতা নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা জরুরি। যেমন: নিয়মিত হাত ধৌতকরণ, অযু সহকারে থাকা,কাঁশি ও হাঁচির সময় নাক মুখ ঢেকে রাখা, সর্দি, কাঁশি, হাঁচিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না যাওয়া, খাদ্য উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে চলুন. নিজ নিজ দেশের সরকারি বিধানগুলো গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করুন.
★ আযাব, গজব ও করোনা ভাইরাস থেকে বাচার জন্য করণীয় কিছু আমল ও দোয়া:
এক. গুনাহ বর্জন করে দিল থেকে তাওবা ও ইস্তেগফার করা। কারণ, যুগে যুগে আযাব, গজব মানুষের পাপের পরিনামেই এসেছে এবং তাওবার পরে অনেক সময় আসন্ন গজব উঠিয়ে নেয়াও হয়েছে। কুরআনে কারীমে বর্ণিত অনেক ঘটনায় যার প্রমাণ পাওয়া যায়।
দুই. ছোট বড় সমস্ত জুলুম ও অন্যায় আচরণ থেকে বিরত থাকা। কারণ, মজলুমের আর্তনাদ আল্লাহর কাছে দ্রুত পৌঁছে যায় ফলে জালিমের শাস্তি তিনি অবধারিত করে দেন। অতপর বিভিন্ন আযাব গজব রুপে সেই শাস্তি জালিমকে পাকড়াও করে থাকে।
তিন. সমস্ত ফরজ নামাজ যথাসময়ে আদায় করা। সাথে সাথে নফল নামাজ পড়েও আল্লাহর কাছে নিজের জন্য, আত্মীয় স্বজনের জন্য ও সকল মানুষের জন্য দোয়া করতে থাকা। কারণ, নামাজের পরে দোয়া কবুল হয় এবং অন্যের জন্যে দোয়া করলে নিজের হকেও তা কবুল হয়ে থাকে। যা বিভিন্ন হাদীস থেকে সুপ্রমাণিত।
চার. সবধরনের হারাম খাবার, সন্দেহযুক্ত খাবার এবং সতর্কতার জন্য বিদেশী খাবার বর্জন করা। কারণ, হারাম খাবার মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক এবং এই হারাম খাদ্য অনেক রোগ জীবাণুর উৎপত্তিস্থল।
পাঁচ. প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায় করে ভোরের নিরিবিলি বাতাস গ্রহণ করা এবং পবিত্র কুরআনুল কারীমের কিছু অংশ তেলাওয়াত করা, বিশেষ করে সূরা ফাতেহা তেলাওয়াত করে পানিতে ফু দিয়ে পানি পান করা। এটাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
ছয়. প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসী একবার পাঠ করা এবং পাঠ করে শরীরেও ফু দেয়া যেতে পারে।
সাত. প্রতি দিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সূরা এখলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাস তিন তিন বার পাঠ করে উভয় হাতে ফু দিয়ে সমগ্র শরীরে হাত বুলানো। রোগমুক্তির লক্ষ্যে এটা স্বয়ং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও আমল ছিলো।
আট. নিম্নের দোয়া গুলো বেশি বেশি পড়া। বিশেষ করে ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর তিন তিন বার করে পড়া।
* اَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّات مِن شَرِّ مَا خَلَقَ
. *اللّٰهُمَّ اِنِّي اَعُوذُبِكَ مِنَ البَرَصِ وَالجُنُونِ والجُذَامِ ومن سَيِّءِالاَسقَامِ
* بِسمِ اللّٰهِ الَّذِى لَايَضُرُّ مَعَ اسمِهٰ شَيءُٗ في الاَرضِ وَلَا في السَّمَاءِ وَهُوَالسَّمِيعُ العَلِيمُ
*اللّٰهمَّ صَلِّ علٰی مُحِمَّدِِبِعَدَدِ کُلِّ دَاءِِ وَدَوَاءِِ وبِعَدَدِ کُلِّ عِلَّةِِ و شِفَاءِِ
নয়. ُحَسبُنَا اللّٰهُ وَنِعمَ الوَکِیل দোয়াটি তিনশ তেরো বার পড়ে আল্লাহর কাছে মুসীবত থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং
لَاحَولَ ولَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللّٰه
বেশি বেশি পড়া।
দশ. বেশি বেশি করে নফল সদকা করা। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে ; সদকা মানুষের জীবনের বিভিন্ন মুসীবত দূর করে।
পরিশেষে আপনাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করে বিদায় নিলাম।
ইতি
শামসুল ইসলাম (খলীল)
সাহেব যাদায়ে শায়খে রেঙ্গা (রাহঃ)
সরপরস্ত জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা. দক্ষিণ সুরমা মোগলাবাজার সিলেট বাংলাদেশ।