করোনা আমাদেরকে কিয়ামতের ইয়া নাফসির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে
1 min read[মাহদী হাসান]
মহামারী এই করোনা ভাইরাসে থমকে গিয়েছে পুরো পৃথিবী। চঞ্চল জনপথ,ব্যাস্ত শহর,পর্যটন কেন্দ্র,প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, বাজার,সড়ক-মহাসড়ক সবকিছুতেই ছুয়ে গেছে নীরবতা। সর্বত্র বিরাজ করছে হাহাকার।
দূরে সরিয়ে দিচ্ছে প্রিয়জনদের। মা তার আদরের কলিজার টুকরো সন্তানকে প্রাণ উজার করে ভালোবাসে, সন্তানও তার মমতাময়ী মাকে হৃদয় উজার করে ভালোবাসে, কিন্তু মা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ছেলে মায়ের ধারে কাছেও যাচ্ছে না। বলছে মাগো তুমায় অনেক ভালোবাসি,তবে এখন তুমার চেয়ে নিজেকে বেশী ভালোবাসি। সন্তানের ভয় ‘ইয়া নাফসি, আমার কি হবে? যদি আমিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাই!
করোনায় আক্রান্ত ছোট্ট বাচ্চা, মা বাচ্চাকে সংস্পর্শ থেকে কাচের গ্লাসে রেখে দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে ছোট্ট বাচ্চাকে কেউ স্পর্শ করছে না। ছোট্ট বাচ্চা হাউ-মাউ কাঁদছে, যখনি দেখে মা গ্লাসের কাছে এসেছে, সন্তান বুক ভরা আশা নিয়ে ভাবে এক্ষনি বুঝি মা আমায় খোলে নিবে, সন্তান মায়ের দিকে আগায় কিন্তু মা বলে, খোকা তুমায় আমি আমার চেয়েও বেশী ভালোবাসি কিন্তু খোকা এখন আমি তুমায় খোলে নিতে পারবো না যদি আমার কিছু হয়ে যায়। ইয়া নাফসি নিজে বাঁচতে চাই।
স্বামী তার স্ত্রীকে, স্ত্রী তার স্বামীকে বাবা তার সন্তানকে, ছেলে তার বাবাকে, বোন তার ভাইকে, ভাই তার বোনকে, সবাই একে-অপরকে প্রচন্ডরকমের ভালোবাসে কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর কেউ কাউকে চিনেনা এমন ভাব করে! সবার মনেই “ইয়া নাফসি”আমার কি হবে?
এ যেনো কিয়ামতের দৃশ্য!
কিয়ামতের দিন সবাই “ইয়া নাফসি” “ইয়া নাফসি” বলে পালাতে থাকবে। পিতা-মাতা-পুত্র-কন্যা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী কোনো আত্মীয়-স্বজন অথবা একান্ত প্রিয় বন্ধু সেদিন পরিচয় দিবেনা এমনকি দেখা হয়ে গেলেও অপরিচিতের ভাণ করে কেটে পড়ার চেষ্টা করবে। সেদিন কেউ কারো বোঝা বহন করবেনা।
এযেনো আমার রবের পবিত্র বানীর বাস্তব চিত্র:
“সেদিন মানুষেরা তার নিজের ভাই, পিতা-মাতা ও স্ত্রী-সন্তান হতে পালিয়ে বেড়াবে। তাদের প্রত্যেকের উপর সেদিন এমন একটি সময় এসে পড়বে যখন নিজেকে ছাড়া আর কারো প্রতি লক্ষ্য রাখার অবস্থা থাকবেনা।”
[‘সূরা-আবাসা ৩৪-৩৭]
হে ভাই আমার দুনিয়ার সামান্য করোনার ভয়ে যদি সবাই নিজে বাঁচতে চায়, ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করতে থাকে তবে সেই মহাবিচার দিবস কিয়ামতের ময়দানে জাহান্নামের ভয়ে কি অবস্থা হবে? একটি বার চিন্তা করো ভাই। এ থেকে শিক্ষা নাও, গুনাহ থেকে ফিরে আসো, তাওবা করো মাবুদের কাছে।
লেখক: মুহাম্মাদ মাহদী হাসান
শিক্ষার্থী, জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা, সিলেট।