ইসলাম বিরোধী অপশক্তির ব্যাপারে সদা সোচ্চার থাকতে হবে; আল্লামা বাবুনগরী
1 min readহাটহাজারী প্রতিনিধি।।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন,সূচনালগ্ন থেকেই ইসলাম বিরোধী অপশক্তিরা ইসলামের আলোকোজ্জ্বল বাতিকে চিরতরে নিভিয়ে দিতে চতুরমুখী ষড়যন্ত্র করে আসছে। হক্ব-বাতিলের দ্বন্দ্ব আজ নতুন নয়। বাতিল যতই শক্তিশালী হোকনা কেন হক্বের প্রকৃত শক্তির সামনে তা নিতান্তই দূর্বল।নবী-রাসুলগণ থেকে শুরু করে প্রতি যুগে যুগে দ্বীনের ঝান্ডাধারী হক্কানি ওলামায়ে কেরাম বাতিলের মোকাবিলায় লড়াই আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন। বর্তমানে ইসলাম ও মুসলমানদের এই নাজুক পরিস্থিতিতে হক্কানি ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে সকল তাওহীদি জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জানবাজি রেখে ইসলাম বিরোধী সকল অপশক্তির ব্যাপারে সদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।
গতকাল ১১ ই মার্চ বুধবার নোয়াখালী জামিয়া ওসমানীয়া চাটখিল ও জামিয়া হোসাইনিয়া মিরওয়ারিশপুর মাদরাসার পৃথক খতমে বুখারী ও দুআ মাহফিল অনুষ্ঠানে দাওরায়ে হাদীস সমাপনকারী ছাত্র ও আগত মুসল্লিদের নসিহতকালে এসব কথা বলেন তিনি।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন,সম্প্রতি ” হিজাব পড়া কোনো ধর্মীয় অনুশাসন অথবা ধর্মীয় বিষয় নয়, বরং অপসংস্কৃতি ” বলে মন্তব্য করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে মেনন।
অনতিবিলম্বে মেননকে শরিয়তের অন্যতম বিধান পর্দা সম্পর্কে দেয়া এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
হিজাব (পর্দা) ইসলামের অন্যতম একটি ফরজ বিধান উল্লেখ জুনায়েদ বাবুনগরী আরও বলেন, একজন নারীর ইজ্জত আবরু রক্ষায় শরয়ি পর্দার বিকল্প নেই। একজন নারী শরয়ি পর্দা মতো চললে সমাজে ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ইত্যাদির ন্যায় অপরাধ ও অনৈকিতা থাকবে না। সমাজ হবে শান্ত ও সুশৃঙ্খল।
পর্দাহীনতার কারণেই আজ নারী নির্যাতন চরম আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশু থেকে শুরু করে সত্তর বছরের বৃদ্ধাও আজ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শুধু নির্যাতন নয়; নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো- বেপর্দা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা।
তিনি আরো বলেন,বর্তমানে কাফের কাদিয়ানি ফিতনা,হেযবুত তওহীদ ফিতনা সহ নাস্তিক-মুরতাদরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাই দেশীয়, আন্তর্জাতিক সকল ইসলাম বিরোধী অপশক্তির ব্যাপারে আমাদেরকে সদা সোচ্চার থাকতে হবে।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন,ভারতে মুসলমানদের উপর একের পর এক ষড়যন্ত্রে হচ্ছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী জালিম মোদি সরকার ভারতের মুসলমানদের ওপর অমানবিক জুলুম নির্যাতন করছে।
কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর জুলুম করেছে। মুসলমানদের পাঁচশত বছরের ঐতিহ্য বাবরী মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে বিশ্বমুসলিমের কলিজায় আঘাত করেছে। সম্প্রতি মুসলিমবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল পাশ করেছে। তার এহেন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ৯০% মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ ফুঁসে ওঠে তার বাংলাদেশে আসার বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। আন্দোলন আর গণজোয়ারের পরিপ্রেক্ষিতে এই জালিম মোদি বাংলাদেশ সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। তৌহিদি জনতার ঈমানি আন্দোলন কখনো বৃথা যায় না।
খতমে দরসে বোখারী শরীফে প্রথমে সনদসহ বোখারী শরীফের সর্বশেষ হাদীস পাঠ করা হয়। পঠিত হাদীসের উপর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী দীর্ঘ সময় আলোচনা পেশ করেন৷
সাহাবা যুগ থেকে শুরু করে সর্বযুগে হাদীস সংরক্ষনের ইতিহাস এবং ভারত
উপ মহাদেশ সহ বিশেষ করে বাংলাদেশে দরসে ইলমে হাদীসের ইতিহাস তুলে ধরে বোখারী শরীফের গ্রন্থকার ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল বোখারী রহ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী ও বোখারী শরীফের গ্রহণযোগ্যতা উল্লেখ করেন।এবং বোখারী শরীফের সর্বশেষ হাদীস ও সর্বপ্ৰথম হাদীসের সনদ, হাদীস, অধ্যায়, রাবী বা বর্ণণাকারীর সামঞ্জস্যতা তুলে ধরে আলোচনা পেশ করেন।
বিকেলে চাটখিল জামিয়া ওসমানিয়া মাদরাসায় দরসে খতমে বুখারী শেষ করে জামিয়া হোসাইনিয়া মিরওয়ারিশপুর মাদরাসায় পৌছলে মাদরাসার ছাত্ররা রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে আহলান সাহলান মারহাবান বলে আল্লামা বাবুনগরীকে উষ্ণ অভর্থনা জানান। এ সময় আল্লামা বাবুনগরী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে তাদের অভ্যর্থনার জবাব দেন।
বোখারী শরীফের দরস শেষে দেশ ও জাতীর কল্যাণ কামনা করে দুআ করেন আল্লামা বাবুনগরী।এ সময় তিনি করোনা ভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে হেফাজতের জন্য মহান প্রভুর দরবারে বিশেষভাবে দুআ করেন।
খতমে দরসে বোখারী ও দুআ মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন,মাওলানা ইউসুফ,মাওলানা মুয়াজ্জম হোসাইন, মাওলানা নিজামুদ্দিন,মাওলানা মুহাম্মদ আলী,মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান,মাওলানা রফিকউল্লাহ প্রমূখ।