ঢাকায় মোদিবিরোধী মিছিলে জনতার ঢল: বিক্ষোভ সমাবেশে আল্লামা কাসেমী যা বলেছেন
1 min readনিজস্ব প্রতিবেদক :: ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলমানদের ওপর বর্বর নির্যাতন, জাতিগত গণহত্যা, মসজিদ, মাদ্রাসা, মুসলমানদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও তাণ্ডবের প্রতিবাদ এবং আগামী ১৭ মার্চ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের নামাজ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা।
সমমনা ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর দেশব্যাপী পূর্বঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে আজকের বিক্ষোভ মিছিলে সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শীর্ষ ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
জুমার নামাযের পর সমমান ইসলামী দলসমুহের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে আল্লামা নূর হোসাইন কাসমীর নেতৃত্বে হাজার হাজার জনতার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত গণমিছিলটি পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে পানির ট্যাংকিতে এসে শেষ হয়। এ সময় কাকরাইল মোড় পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে’র মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, সমমনা ইসলামী দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও তৌহিদী জনতা, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আগামী ১২ তারিখ আসরের পরে ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে একযোগে মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করা হবে।
এ সময় জমিয়ত মহাসচিব উপস্থিত জনতার প্রতি এই কর্মসূচীতে সকলে একমত আছেন কিনা প্রশ্ন রাখলে উপস্থিত জনতা সমস্বরে সম্মতি জানান।
আল্লামা কাসেমী বলেন, আগামী ১২ মার্চ ঢাকা ভার্সিটি, বুয়েটসহ দেশের সকল ভার্সিটির ছাত্রসহ দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতাকে মোদি প্রতিহতের এই শান্তিপূর্ণ মানবন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সেদিন পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
জমিয়ত মহাসচিব আরো বলেন, যে কোন মূল্যে এই খুনি মোদিকে বাংলার জমিনে আসতে দেওয়া হবে না, হবে না, হবে না। বাংলার তৌহিদী জনতা মাঠে নেমে এসে যে কোন মূল্যে মোদিকে প্রতিহত করবে, ইনশাআল্লাহ।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, আজকের এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ বাহীনির সদস্য এবং জাতির বিবেক সাংবাদিকে ভাইদেরকে আমাদের এই কর্মসূচীতে সহযোগিতা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সবশেষে দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নতি, শান্তি এবং মোদি প্রতিহতের আন্দোলনে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে জমিয়ত মহাসচিব মুনাজাত পরিচালনা করেন।
এর আগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমা আদায় শেষে মসজিদের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে তৌহিদী জনতার স্রোত নামে। হাজার হাজার জনতার অংশগ্রহণে অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্ষোভ মিছিলটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণের প্রতিবাদে স্লোগানে স্লোগানে ফেটে পড়ে।
বিক্ষোভ মিছিলের শেষে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমমনা ইসলামী দলসমূহের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন এবং ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমন বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আগামী ১২ মার্চ বৃহস্পতিবার আছরের নামাযের পর সারাদেশব্যাপী সর্বস্তরের জনতার অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। এ সময় নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ১২ তারিখের মধ্যে মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিলের ঘোষণা না আসলে সে দিন আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমীর পরিচালনার অনুষ্ঠানটি বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- খেলাফত আন্দোলনের সভাপতি আমিরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা আবদুর রব ইউসূফী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড.আহমদ আব্দুল কাদের, খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হক, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা মোস্তফা তারেকুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফ মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারি সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তাফাজ্জুল হক মিয়াজীপ্রমুখ।