নবীগঞ্জে মোটরসাইকেলসহ যুবকের লাশ উদ্ধার
1 min readআশাহীদ আলী আশা।।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সকাল অনুমান ৮ঘটিকার সময় নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত পাহাড়পুর গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে মোঃ জায়েদ মিয়া (২২) এর মৃতদেহ পরিত্যক্ত অবস্থায় এলাকাবাসী দেখতে পায়। পরে লাশটিকে চিনতে পেরে নিহতের পরিবারে লোকজনদের জানায়া। তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন।
এব্যাপার নিহতের পরিবারের সাথে কথা হলে জানানো হয়, জায়েদ শেরপুরবাজারে একটি পানদোকানের ব্যাবসা করে। সে প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে গেলে রাতে আর বাড়িতে আসেনি। রাতে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোনে থাকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে সকালে এলাকাসীর মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, জায়েদ মারা গিয়েছে। তার লাশ বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের রাস্তার পাশে পরে আছে।
তবে জায়েদকে যে অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেছে তাতে নিঃসন্দেহে তাকে খুন করা হয়েছে। কারণ তার মাথায় ও মাথার পেছনে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে কুপানো হয়েছে ফলে পরিবারের ধারণা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। তবে কে-বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা’তাদের কোনো ধারণা নেই এমকি করো প্রতি সন্দেহও নেই বলে জানায় নিহতের ভাই। যার ফলে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট জায়েদ হত্যার পেছনে কে-বা কারা রয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সুষ্টু বিচারের দাবী জানায় জায়েদের পরিবার।
স্বজনরা আরও বলেন, জায়েরে বিয়ের আলাপ চলছে! আগামীকাল ৬ মার্চ শুক্রবার তার বিয়ের দিন তারিখ ধার্য্য করার জন্য কনে পক্ষের বাড়ি যাওয়ার কথা রয়েছে। যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা সেই কনের সাথে জায়েদের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এবং উভয় পরিবারের সর্বসম্মতিক্রমে তার বিয়ের আলাপ চলছে।
উল্লেখ্য, সন্ধ্যা হলেই আতংকিত ভূতুরে নিরবচ্ছিন্ন অনিরাপদ এলাকায় পরিনত হয় হাওরের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের সড়ক। এমন অবস্থা বিরাজমান থাকলেও কোনো প্রকার সিকিউরিটি নেই রাস্তায়। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে বাতিবিহীন ভূতুরে শহরে পরিণত হয় বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট সড়ক। এতে মাদকসেবীরা নিরাপদে মাদক সেবনের অন্যতম রাস্তা হিসাবে বেছে নিয়ে রাস্তার মধ্যভাগে সেতুর পাশে বসে মাদক সেবন করছে এবং রাতের আধাঁরে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে আসা মালবাহী ট্রাক থামিয়ে অনেকেই চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করছে এমনও অভিযোগ রয়েছে।
এলাকার প্রায় ৫টা গ্রামের ২০হাজারেরও বেশি মানুষের যাতায়াত দিনেদুপুরে হলেও সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তার আশপাশে বাড়িঘর না থাকায় ভয়ে কোনো মানুষের যাতায়াত সম্ভব হয় না। অহরহ অতর্কিত হামলা, চুরি, লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও রাস্তায় কোনো প্রকার টহল জোরদার করা হচ্ছেনা বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার সাধারণ মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই বলেন রাত ১২ টার পর এই রাস্তা দিয়ে আসলে ঘটনাগুলো প্রায় দেখতে পাওয়া যায়। এর জন্য অনেকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মানববন্ধন করে বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ততা প্রশাসনের নিকট টহল জোরদারের দাবী জানানো হলেও কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারভেজ আলম ও নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লাশ দেখে মনে হয় এটি একটি পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘানের আমরা চেষ্টা করছি। অপরাধী যেই হোক না কেন,তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।