ভারতের মাটি আমাদের; কেউ আমাদের এই দেশ থেকে সরাতে পারবে না
1 min read
সীমান্ত ডেস্ক : জমিয়তে উলামা হিন্দের জেনারেল সেক্রটারি, জানেশীনে ফেদায়ে মিল্লাত, আওলাদে রাসুল মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ আসআদ মাদানী উত্তাল দিল্লির বিক্ষোভে হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এই মাটি- এই ভূমি-ভারতবর্ষ আমাদের ছিল আছে থাকবে। কোন অপশক্তি আমাদের এখান থেকে সরাতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের কোন অবস্থাতেই ঘাবড়ানো চলবে না। সমস্ত কাঠিন্যের ভেতর সর্বাবস্থায় ঐক্যবদ্ধভাবে ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ধৈর্য্যধারণ করতে হবে। দিলকে ফেরাতে হবে আল্লাহর দিকে। আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। আমাদের কোন শংকা যেন গ্রাস না করে সেদিকে সবাই খেয়াল করবেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভারতের রাজধানী দিল্লির মোস্তফাবাদ এলাকায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ মুসলমানদের দেখতে গিয়ে মসজিদুন নুরে যোহরের নামাযের পর তার এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
এসময় তিনি মোস্তফাবাদে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার মুসলমানদের সঙ্গে জমিয়তের একটি প্রতিনিধি দলসহ দেখা করেন ও তাদের ব্যথাতুর আকুতি শোনেন।
এছাড়াও আওলাদে রাসুলের নেতৃত্বে মোস্তফাবাদ সহ আশপাশের অন্যান্য আক্রান্ত এলাকা- করিম নগর, ক্রাওল নগর, ভজন পুরা ইত্যাদি থেকে সহিংসতায় আটকা পড়া ৩৩০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে। ঘোন্ডা মজপুরা এলাকার সাইয়্যিদুনা আবু বকর মাদরাসায় আটকা পড়া ছোট ছোট ১৫ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বাবুল উলুম জাফরাবাদ মাদরাসায়। বাবুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম, দিল্লি জমিয়তে উলামা হিন্দের সহ সভাপতি মাওলানা দাউদ আমিনী আশপাশের সকল আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের তার মাদরাসায় আশ্রয় গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষসূত্র।
এসময় কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের প্রতিহিংসার শিকার জ্বালিয়ে দেওয়া ফারুকিয়া মসজিদও সরেজমিন পরিদর্শন করে জমিয়তে উলামা হিন্দের প্রতিনিধি দল। সেখানে মসজিদের পাখা, কার্পেট, জায়নামায, বাতি, ট্যাঙ্কি, কুরআন শরীফ রাখার তাকসহ কয়েক ডজন কুরআন শরীফ পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এমনকি মসজিদের ছাদে এখনো পর্যন্ত আগুন জ্বলছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এছাড়াও জমিয়তের বিভিন্ন প্রতিনিধি দল দিল্লির এলাকাগুলোতে আটকা পড়া ও আক্রান্তদের পাশে থেকে তাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা এবং প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের ব্যবস্থাপনায় নিয়েছে শক্ত অবস্থান।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) সমর্থকবিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলেও ধীরে ধীরে এটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবারও (২৭ ফেব্রুয়ারি) অন্তত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও দুই শতাধিক মানুষ।
সহিংসতার ঘটনার তিনদিন পর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
জমিয়তে উলামা হিন্দের এ প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন, জমিয়তে উলামা হিন্দের সেক্রেটারি মাওলানা হাকিমুদ্দীন কাসেমী, মাওলানা জিয়াউল্লাহ কাসেমী, মাওলানা কারী মুহম্মদ আরেফ কাসেমী, মাওলানা ইয়াসিন জাহাযী, মাওলানা জামাল কাসেমী, মাওলানা ইরফান কাসেমী, চাদনি চক জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আব্দুস সুবহান কাসেমী, আমিনিয়া কাশমিরী গেটের শায়খুল হাদিস মুফতী যাকাওত কাসেমী, মাওলানা গুয়ূর আহমদ কাসেমী, মাওলানা মোস্তফাবাদের কারী এরশাদ আহমদ, মাওলানা আখলাক সহ প্রমুখ।