চাটগাঁইয়া যখন সিলেটে বন্ধুর বাড়ি আইছইন
1 min read[আবু তালহা তোফায়েল]
প্রবাদ আছে- “এক দেশের গালি, অন্য দেশের বুলি।” বিগত ১০ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) চট্টগ্রাম থেকে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে “ইমন, ফারহান ও মুন্না” সিলেটে আসলেন। সকাল ৭টার ট্রেনে সিলেটে পৌঁছলে তাদেরকে রিসিভ করে তাদের বন্ধু আব্দুল্লাহ আল ফারহান। সারাদিন সিলেট শহরে ঘুরাঘুরি আর খাওয়া পিনায় চলে যায়। হযরত শাহ জালাল রহঃ এর মাজার শরিফ, কিংব্রিজ, জালালাবাদ পার্ক, উসমানী শিশু উদ্যান, তার ও খুটিবীহিন জঞ্জালমুক্ত সিলেট শহরে সারাদিন ঘুরে তাদের মন হাওয়ায় দোলছে; সত্যি সিলেট ২য় লন্ডন। রাত্রে ফেরা হলো দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা এবং রুপময় ও রুপকন্যা খ্যাত গোয়াইনঘাট উপজেলার ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের খলামাধবে অর্থাৎ তাদের বউপজেলারন্ধু ফারহানের বাড়িতে। ও হ্যাঁ, বলে রাখি যে, তাদের বাড়িটা কিন্তু ১টা পর্যটন স্পট থেকে কম নয়৷ শতশত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য খোঁজে পাওয়া যায়; জমিদার বাড়ি। অনেক পুরোনো দু’তলা বাড়ি, পুরোনো পুকুরঘাট, ইয়া বড়বড় পাথরের খন্ড, সারা বাড়ি ইট পাথরের টুকরোতে ভরপুর।
রাত গেলো চট্টগ্রাম আর সিলেটের ভাষায় কথা বলাবলি। সকালের খাবার শেষে রুপকন্যা জাফলংয়ে। জাফলংয়ের সৌন্দর্যের কে বা নাই জানে? কে কতটুকু বলে শেষ করবে? কে কতটুকু বলবে? যাই বলবে,তাই জাফলংয়ের সৌন্দর্যের অল্প বর্ণনা করবে। সারাদিন জাফলংয়েই কেটে দিলো, পাশে তামাবিল যাওয়ার সময় মিলেনি; রাত ৮টা। সারাদিন ঝর্ণার পানি, পাহাড়ের ডাউকি থেকে নেমে আসা পিয়ান নামকরণের এই নদীর মিটা পানিতে হাবুডুবু আর সীমান্তের হিমেল হাওয়া এবং ডাউকি ও ভারতের এই দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যে আর খোদার ভরপুর খনিজ সম্পদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভোর সবাই। মাতুহারা, ব্যাপক উল্লাসে, আবেগাপ্লুত হৃদয় দোলছে তীব্র বাতাসে, আনন্দে দিশেহারা, হৃদয়টা যেনো পড়ে আছে এই এতো এতো সৌন্দর্যের মাঝে।
যাইহোক রাতে ফিরা হলো গোয়াইনঘাটের পাঁচপাড়ায় অর্থাৎ ফারহানের নানু বাড়ি। ওরা অবাক (?) ফারহানের নানুবাড়ি পর্যন্ত চলে আসলাম! এখানে তো আসল মজাই রয়ে গেলো। রাত্ বাজে আনুমানিক ১০টা-।
(এবার গল্পের মাঝে চলে আসি আমি ক্ষুদ্র এই গল্পের লেখক আবু তালহা তোফায়েল।)
সাক্ষাৎ হলো- সালাম,কালাম। শুকরিয়া; ১টু ভিড়লাম- ওয়াও এতো মানবপ্রেমী হৃদয়বান মানুষ! খেতে বসলাম। চলে আসলেন আব্দুল্লাহ সালমান, এহসান উল্লাহ ও হুসাইন আহমদ মারুফ। জমে গেলো ২.৩০ মিনিটের হেব্বি আড্ডা। বলতে গেলে অবিস্মরণীয় একটি রাত, একটা মুহুর্ত। অবশ্যই উভয় পক্ষের কথা বুঝার স্বার্থে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হচ্ছে। যখন “ইমন, ফারহাইন্না ও মুন্না” নিজেদের মাঝে তাদের চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলে, তখন হাবা হয়ে বসে থাকা ছাড়া কিছু করার থাকেনা। কথায় আছে যে, “চট্টগ্রামের বাসিন্দারা বাংলা ভাষাকে নিহত করছে”। সত্যিই তাই। তাদের ভাষা বুঝার কোনো ক্ষমতা নেই। যখন আমাদের মাঝে কথা হয়, তখন তারা হাবা হয়ে বসে থাকে। তারপর আসলো তোমরা এটাকে কী বলো? ওঠাকে কী বলো? উদাহরণ হিশেবে নিম্নে কয়েকটি শব্দ তোলে ধরছি চট্টগ্রাম, শুদ্ধ ও সিলেটি ভাষায়;
[চট্টগ্রাম = বাংলা = সিলেটী ভাষা]
ছই = শীম = উরি
ফইর = পুকুর = ফুরকি
ডেইলে = গার্ডওয়াল = গার্ডওয়াল
তু-ই হন্ডে যায়তে লাইগ্গু= তুমি কোথায় যাচ্ছো= তুমি কুয়ায় যাইরায়
তৈ আই কিত্তাম= তো আমি কি করবো= তে আমি কিতা খরতাম
আরা গুইত্তাম গেইদি, এডে বোত মজা পাই= আমরা যেখানে ঘুরতে গেছি, সেখানে অনেক মজা পেয়েছি= আমরা যেখানো ঘুরাইতাম গেছি, ওখানো অনেখ মজা ফাইছি
কেনে ছলর= কেমন চলছে= খেমন ছলের
কিছু হায়তে= কিছু খাবে= কুন্তা খাইবায়নি
গোয়াছি= পেয়ারা= সফরি
হড়ো= টক= টেংগা
শুই তাইক্কি= শুয়ে আছি= হুতি রইছি।
আরা এহন জায়ুঙো= আমরা এখন চলে যাবো= আমরা এবলা যাইতামগি।
এভাবেই ভাষা নিয়ে অনেক মজা হয়। যাইহোক রাতটি সবারি স্মরণ থাকবে। সালমান,এহসান ও মারুফ চলে গেলো। রাত শেষে সকালবেলা নাস্তা শেষে হাওরাঞ্চলে ৩০-৪০ মিনিট। সেখানে শত বছরের পুরোনো হাওরের গাছের সাথে ফটো সেশন যথেষ্ট হয়েছে। ১টা গাছের বৈশিষ্ট্য না বল্লেই নয়; ইউরোপ কান্ট্রির শীতকালীন সময়ে যেভাবে পাতাবিহীন গাছপালা, ঠিক সেভাবেই এই গাছটি- যথেষ্ট ফটো সেশন হয়েছে।
সকালের খাবারের পর ফের ফারহানের বাড়ি চলে যাই। বিকাল ৩টায় আবার বেরিয়ে পড়ি জৈন্তাপুর ও সাত রঙের চায়ের মিশন সম্পন্ন করতে হবে। পরদিন সকালের ট্রেইনের টিকিট হাতে। সারী নদীর নীল পানি আর লালাখালের সৌন্দর্য গাঁথা মায়াবী যায়গায় কিছু সময় পার করে পাশেই রাস্তার মাঝে জৈন্তা রাজ্যের রাজ প্রসাদ তাদেরকে দেখাতে চলে যাই।
সেখান থেকে জৈন্তাপুর বাজারে, জৈন্তার ঐতিহ্যবাহী সনাতন বাড়ি গুলো ঘুরে জৈন্তাপুরে আরেক মনোরম দৃষ্টিনন্দন দর্শনার্থীদের হৃদয় জুড়া যায়গা “ফুলবাগানে” চলে যাই অশান্ত হৃদয়কে প্রশান্ত করার জন্য।
সেখান থেকে কি ফিরতে মন চায়? লেখা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে তাই ফুলবাগান ফলবাগান সম্পর্কে কিছু লিখবোনা, ঘুরে দেখবেন, নিজেই উপলব্ধি করে নিবেন, আমাদের মত অশান্ত হৃদয়ে পাগলা হাওয়ায় উড়লে প্রশান্ত করে নিবেন। সরাসরি সাত রঙের চা খেতে। আল্লাহর কি কুদরত! একি গ্লাসে পানির মাঝে ৭টা রঙ, আবার সাত রঙের সাতটা স্বাদ। এখান থেকে সরাসরি সিলেট শহরে, রাতে পড়শীতে খাবার খেয়ে হোটেলে রাত যাপন। অলরেডি ১২+ হয়ে গেছে। পরদিন ভোরে কিংব্রিজের নিচে সুরমা নদীর তীরে বসে শৈত্য প্রবাহের অন্ধকারাচ্ছন্ন রিমঝিম দিনে গরম চা খেয়ে সরাসরি রেল স্টেশনে। সবকিছুই না দেখায় রয়ে গেলো৷ পরবর্তীতে আসার জন্য আশ্বাস দিয়ে গেলো তারা। আহ! রেলস্টেশনের কথা নাই বলি। একবুক ভালোবাসা দিতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু বিদায়ের প্রহরে এক সাগর ব্যথায় ব্যথিত হয়েছি, এটা চূড়ান্ত সত্য। তা থেকে উপলব্ধি করতে পারবেন, অন্তত এক চিমটি ভালোবাসা ছিলো তুমাদের প্রতি৷ আর যখন মুন্না বলছিলো, তুমাগো খুব খুব খুব মিস করবো—-😭
ফারহাইন্না যখন ফারহানকে বলছিলো, কি বলে বোঝাব, রক্তের বাধন নয় তবু রক্তেই মিশে গেছো। ইমন যখন বল্লো সিলেটের এই ৭২ ঘন্টায় বাড়ির কথা ভুলে গিয়েছিলাম। আরেকটা পরিবার আরেকটা নানাবাড়ি ও আরেকটা নানা, ভাই ও মামা পেয়েছি, তাতেই বাড়ির কথা স্মরণ হওয়ার সুযোগ-ই নেই।
যাইহোক- বিদায়বেলায় তাদের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বলে গেলো-
চট্টগ্রামের ভাষায় :: চাঁদগাঁয়ে:- আসসালামু আলাইকুম।
আগে আর পরিচয় দি,আর নাম মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, ডাক নাম ইমন,নিবীর, যিয়েন ডাহন। আই একজন চাঁদগাঁয়ে,প্রথমবার সিলেটত গেইলাম,ইডের অবস্থা লই কিছু লিখ্যুম ভায়ব্বি।
আই সিলেট্যেরে লই কি লেখ্যুম? ইতারারে লই লেহিলি পুরৈতুনু,ত কিছু লেহিবের চেষ্টা গৈয্যুম।
যেত্যে আই সিলেটত পৌছি, এত্যে পৈল্লের বার ইসেপ্ফে মনত ডর ডর লাইগ্গি,সিলেটর মানুষ হৈল্লে না হৈল্লে; যেত্যে আর ওয়াজ্যে ফারহানর লই দেহা অই,এই দেহা অনর পরত্তুন সিলেটত যতদিন আছিলাম, অতদিন পৈয্যুন্ত যেগিন পাই এগিন আশাও নোগরি,আর মনর ডর তো দূরুর হতা, আসলে আর ওয়াজ্যে ইতের লই ও ১ম দেহা অয়্যিদে,ইতের মন বোত বড়,ইয়েন ইতের লই দেহা অনর পর বুঝা গেয়্যিদে,শুধু ইতে ন, সিলেটত যায়েনে যেগুনুর লই দেহা অয়্যি বিয়াগ্গুনুরে ভালা লাইগ্গি। আর ইতারার মেমানদারির হতা কি হৈতাম,ইতারার মেমানদারী বোত ভালা লাইগ্গি, হনোকিছুর হমতি ন লাহে ইতারা,যদিও আারা চাঁদগাঁয়ে অক্ষল ও হম নো। ইতেরার ভাসার হতা কি হৈতাম! আরার ভাসা যেন হঠিন ইতারার ভাসাও হম নো,হঠিন আছে,মজাও আছে,তার মৈদি হয়েক্কান হতা হৈ,” আারা নো হৈনা?” #তৈ_আই_কিত্তাম?
আর ইতারা হয়দে,,#তো আমি কিতা খরিতাম? এরেহম আরো আছে।
ইতারা আরার ভাসা ওনি মজা লয়, আর আরা ইতারার গিন ওনি মজা লই, আর হানার হতা কি হয়তাম? আসলে হনো এক্কান যাগাত নতুন যায়লি হানা লৈ টেনশন অয়,এডে কি হৈয়ুম,আরো ঘরর হানা হাইর মনো অয়্যি,হানা বোত মজা। ইতারার এডে এক্ষান এসপেসিয়াল ঐলদি ইতারা যেহনো তরহারিত মাছ মিয়েই দে, মজা লাগে,,আর কি বলে এডে আতহরা দি গরুর গুস্ত রাঁন্দে,পোয়াত ও আছে। আবার সাত রঙর চা ও আছে এন্ডে। এবার আয় জাগার হতাত- জাগার হতা কি হৈয়ুম? বোত সুন্দর সুন্দর জাগা আছে এন্ডে। যার মৈদ্দি জাফলং, সাদা পাথর,জয়ন্তীপুর,কিং বিরিজ,বিচ্নাগান্দী ইত্যাদি, এডের মৈদ্দি জাফলং ঐন্যুরহম,বোত মজা গৈজ্জি এন্ডে। কি লেখ্যুম হৈ হৈ বোত লেহি পেলায়, এবার রাহি, যায়তে যায়তে আরেক্কান হতা হৈ যায়,আরার চিটাং অত আয়বেন কিন্তু, আরা চাঁদগাঁয়ে অক্ষল হনো কিচ্ছুদি হম নো। আরা কিরহম ইয়েন এডে নুয়াইলি বুইঝতেননো; আয়ু মেজ্জান্যে গুস্ত হায়বের দত রইলু, আর অনেরা হইয়ুন্দে এডে আয় অনেরার বন্নায় ন গৈরতাম। কি বন্নায় গৈয্যুম। অনেরা বন্নায় গরিবের মত কিছু ন গরোন,তা ছাড়া আরা এক মুখে অতরো হতা ন হৈ, আরা ঐ ওইচ ন যে ওইচ বিভিন্ন হর-চুর ছিলেতে ব্যবার অয়,আরা ঐলদি ঐ ওইচ যিবে চিরিস ইসেবে ব্যবার অই। এতাল্লায় হৈদি আরা এক মুহে দুই হতা ন হৈ, দুয়া গৈয্যুন, এবার রাহি আসসালামু আলাইকুম।
বাংলায় :: আসসালামু আলাইকুম, প্রথমে আমার পরিচয় দিয়ে রাখি। আমার নাম মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, ডাক নাম ইমন,নিবীর; যেটা ভালো লাগে ডাকতে পারেন। আমি একজন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। প্রথমবার সিলেটে যাই৷ ওখানের অবস্থা নিয়ে কিছু লিখবো ভাবচছি- আমি সিলেট নিয়ে কি লিখব? সিলেট সম্পর্কে লিখতে বসলে শেষ হবেনা,তাও কিছু লিখার চেষ্টা করছি এবং নিম্নে তোলে ধরছি;
– যখন আমি সিলেটে গিয়ে পৌঁছাই, তখন প্রথম বার হিশেবে মনে একটা ভয় কাজ করছিলো, সিলেটের মানুষ কীরকম হতে পারে! যখন আমার বন্ধু আব্দল্লাহ আল ফারহান এর সাথে দেখা হয়, দেখা হওয়ার পর থেকে সিলেটে যতদিন ছিলাম ততদিন পর্যন্ত যতটুকু আশা করিনি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। (আলহামদুলিল্লাহ)
আর ভয় তো দূরের কথা,আসলে আমার বন্ধুটার সাথেও প্রথম দেখা হয়,ওর মন অনেক বড়, তা ওর সাথে দেখা হওয়ার পর বুঝতে পারি। শুধু ও না সিলেটে গিয়ে যাদের সাথেই পরিচয় হয়েছে তাদের সবাইকে ভালো লাগছে।
আর ওদের মেহমানদারীর কথা কি বলবো? অনেক ভালো লাগছে, যদিও আমরা চাঁদগাঁয়ারাও কোনো দিকে কম না,ওদের ভাষার কথা কি বলবো? আমাদের ভাষা যেমন কঠিন আবার মজাও তেমনি ওদের ভাষাও মজার। এর মধ্যে কয়েক টা কথা বলি,যেমন
আমরা চাঁদগাঁইয়া বাসাই বলি, তই আই কিত্তাম।
যেটা বাংলা বাসায় তো আমি কি করবো?
সিলেটি ভাষায় বলে তো আমি কিতা খরিতাম? এরকম আরো অনেক আছে,ওদের ভাষা শুনে আমরা মজা নেই,আমাদের ভাষা শুনে ওরা মজা নেয়। আর খাবারের কথা কি বলবো? আসলে কোনো যায়গায় নতুন গেলে খাবার কিরকম হবে তা নিয়ে চিন্তা হয়,কিন্তু সেখানে আমার ঘরের খাবার খাচ্ছি মনে হয়ছে। অনেক স্বাদ, সেখানে একটা স্পেশাল হলো,ওরা যেকোনো তরকারিতে মাছ দেয়। ভালোই লাগে, আর ওদের ওখানে কি বলে সাতকরা দিয়ে মাংস রান্না করে। স্বাদ ও আছে, আবার সেখানে সাত রঙের চা ও আছে।
এবার আসি জায়গার কথায়, জায়গার কথা কি বলবো? অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে সিলেটে। যার মধ্যে জাফলং, সাদা পাথর, জৈন্তাপুর, কিং ব্রীজ, বিছনাকান্দী ইত্যাদি। এসবের মধ্যে জাফলং অন্যরকম, অনেক মজা করছি সেখানে, কি লিখব বলে বলে অনেক লিখে ফেলছি। এবার রাখি। আরেকটু সিলেটিদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলে যায়, আমাদের চট্টগ্রামেও আসবেন কিন্তু আমরা চাঁদগায়ারা কোনো দিকদিয়ে কম না,আমরা কীরকম এটা এখানে না আসলে বুঝবেন না। আসেন মেজবানের মাংসের দাওয়াত রইল,
আর আপনারা বলছেন এখানে এসে আপনাদের নামে দুর্নাম না করতে, কি দুর্নাম করবো? আপনাদের দুর্নামের কিছুইতো দেখতেছিনা,তা ছাড়া আমরা কৃপণ না। এক মুখে দুই কথা বলি না,আমরা ঐ সুইচ না যে সুইচ বিভিন্ন খাপর চিলাতে ব্যবহার হয়। আমরা ঐ সুইচ যে সুইচ সিরিজ হিসেবে ব্যবহার হয়। এজন্য আমরা এক মুখে দুই কথা বলি না। দোয়া করবেন, এবার রাখি – আসসালামু আলায়কুম।
তাদের বন্ধু আব্দুল্লাহ ফারহান বিদায়ের এই বিরহ বেলায় বল্লো–
সিলেটি ভাষায়:- তোমরার কথা মনে ফইড়বো সবসময়। তুমরা আসলেই ওত সখাল সখাল মানুষের মাঝে মিশি যাও। তুমরার মনটা খুব বড়, উদার। সিলটর বহুত যাগা রইছে এবো, তুমরা আবার আইলে ঘুরাইমু ইনশাআল্লাহ। যেমন বিছনাখান্দি, হরিফুর গ্যাসফিল্ট, উতলার ফার, এডব্যাঞ্জার, তামাবিল, রাতারগুল, ফান্তুমাই, আরো বউত্তা রইছে। আর তুমরার খতা হখল সময় মনে ফইড়বো। তুমরার ছলা ফিরা হাসি মজা খরা ইতা ত মনই থাখবো৷ তুমরার কুটুমানা ফুরাফুরি খরতে ফারছিনা, তবে বন্ধু হিশাবে যা যা খরার খরতে ফারছিনা অইলে মজা খরছি, এই তিনদিন কিলা গেছে খইয়া শেষ খরতাম ফারতাম না। আমি বা আমরা মনে খররাম তোমরা খালি বন্ধু নায়, আরো অনেখ কিছু। তুমরা রখতর লগে মিশি গেছো। সিলেটি হখলতা খাওয়াইতাম ফারছিনা। তইলে আও আবার, বেশদিন আতো লইয়া আইবায়, যাতে হখল গুরাইল যায় খাওয়াইল যায়। আর কি খইয়া মনের খষ্ট বুজাইতাম। হখল শেষ খতা অইলো তুমরা আবার আইতেই অইবো- হু আইবায়। আর আমরা ছিটাগাং গেলে ত দেখা অইবো। বন্ধুর মাঝে সরি মাফ বলতে কুন্তা নাই, তাই সরি খইরাম না, তবুও আন্তরিকতার খাতিরে যা অইছে ভুল, তা সুন্দর খরি দেকিও আর যা ভালা অইছে তা তুমরার হকো কুন্তা নায়। সব ভালা আল্লার ফক্ক থাকি। ভালা থাইখবা হখল সময়, দোয়া নিরন্তর।
বাংলা ভাষায়:- সবসময় তুমাদের কথা স্মরণ থাকবে। আসলেই তোমরা খুবি মিশুক- খুব সহজে মানুষের সাথে মিশে যাও। তুমরা উদার মনের অধিকারী। সিলেটের অনেক পর্যটনস্পট দেখার বাকী রয়েছে, আবার আসলে ঘুরানো হবে ইনশাআল্লাহ। যেমন বিছানাকান্দি, পান্তুমাই, রাতারগুল, এডভ্যঞ্জার, হরিপুরের গ্যাসফিল্ড, উতলার পার, তামাবিলসহ বেশ কয়েকটা পর্যটনকেন্দ্র বাকী রয়েছে। আর তুমাদের কথা সর্বদা হৃদয়ে গাঁথা থাকবে, স্মরণে পড়বে। তুমাদের চলাফেরা, হাসি টাট্টা, মজা করা মনে থাকবেই তো, ভুলার মত নয়। তুমাদের মেহমানদারী পুরোপুরি করতে পারিনি, আর বন্ধু হিশেবে যতটুকু করার, তা তো করতেই পারিনি, সেটা আর বলার নেই; তবে মজা করেছি, এই তিনদিন কিভাবে কেটেছে, তা নিজেই বলতে পারিনা- যেনো হুট করেই ৭২ ঘন্টা চলে গেলো। আমি বা আমাদের পরিবারের সবাই এটা ভাবেনি যে তুমরা শুধু আমার বন্ধু, আরো অনেক অনেক কিছু; সবার রক্তের সাথে যেনো মিশে গেছো। আর সিলেটের অনেক খাবার, যা বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের আকর্ষণীয়, তা খাওয়াতে পারিনি,; আবার এসো; বেশিদিন হাতে নিয়ে আসতে হবে, যাতে সব ঘুরিয়ে দেখা যায়, সবকিছু খাওয়া যায়; আসলেই কি বলে হৃদয়ের ব্যাথাটুকু বুঝাবো? সবশেষে এটাই বলবো বা তোমাদের কাছে আবদার করবো, আবার এসো কিন্তু, হ্যাঁ আসতেই হবে। আর যদি আমরা চট্টগ্রাম যাই, তাহলে অবশ্যই দেখা হবে আবার। আর বন্ধুত্বের মাঝে তো সরি বা মাফ চাওয়া বলতে কিছু নেই; তাই সরি বলছিনা- আন্তরিকতার খাতিরে যা হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে তোমাদের হক্বে আমাদের অনেক ভুল হয়েছে, যথাযথ সম্মান মর্যাদা দিতে পারিনি, আর যতটুকু ভালো হয়েছে, সবি আল্লাহর অশেষ দয়ায় হয়েছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে। দোয়া করি সবসময় যেনো ভালো সুস্থ থাকো, দোয়া আর ভালোবাসা নিরন্তর।