কানাইঘাটে প্রশাসনিক থানা নিয়ে চলছে নানান তালবাহানা
1 min readফয়ছল কাদির, সিলেট জেলা প্রতিনিধি:– (সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে সদয় দৃষ্টি কামনা করছি)
সিলেট জেলার কানাইঘাট থানার ৯নং রাজাগঞ্জ, ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী,৭ নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নবাসীর পক্ষে সালাম-আদাব ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। দু:খ ভারক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আপনাদের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। আধিকাল কাল থেকে আমরা এই ৩টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ শান্তিপ্রিয় ভাবে কানাইঘাট থানার অধিনে ছিলাম এবং আজও আছি। দুরত্বের কথা বিবেচনা করে আমাদের এলাকার সচেতন জনসাধারণ এই ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে একটি নতুন থানা নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছিলেন, যাহা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
সম্প্রতি কয়েক দিন থেকে বিভিন্ন মাধ্যেমে একটি গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে, আমাদের এই ৩টি ইউনিয়নকে কানাইঘাট থেকে কেটে নিয়ে পার্শ্ববর্তী সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের বিয়ানীবাজার উপজেলায় চারখাইয়ে “চারখাই” নামের একটি নতুন থানা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধিন। ইতিমধ্যে নাকি চারখাই নামের সেই থানার ভুমি পরিদর্শন করে গেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যা শুনে আমরা অত্যান্ত মর্মাহত ও বাকরুদ্ধ।
প্রশ্ন হচ্ছে মাত্র একটি রাস্তার জন্য জেলা কিংবা উপজেলা সদরে যেতে আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে আমরা পর্যন্ত যেসব শোষণ-শাসন, হয়রানী-নির্যাতন-নিপিড়নের শিকার হয়েছি, তা কি জানেন সংশ্লিষ্ট সেই সব কর্মকর্তারা ?
‘যেখানে লাশ আটক করে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হতো’। ‘মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে আমরা নদী পার হতে পারতামনা টাকা না দিয়ে’।‘ চুন থেকে পান খসলেই আমাদের করা হতো অমানষিক নির্যাতন-নিপিড়ন’। ‘প্রতি সপ্তাহে সামান্য কারণেই খেয়া পারাপার কিংবা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতো’। ‘আমার এলাকার নিরিহ জনসাধারণকে আটক করে বিনা কারণে মারধর করা হতো অমানুষের মতো’। ‘কারো কাছে বিচার চাইতে গেলে আচরণ করা হতো কুকুরের মতো’, ‘যেমনটি পালিত কুকুরের সাথেও করেনা তার মুনিব’। ‘প্রায় আমরা স্বাধীন দেশে থেকেও ছিলাম পরাধিন’,‘আমাদেরকে জৈন্তাপুরী ভুত হিসাবে সম্বোধন করা হতো’।
যখন শত চেষ্টার পর আমাদের গাজী বুরহান উদ্দিন রাস্তাটি সিলেট টু কানাইঘাট পর্যন্ত নির্মাণ করা হলো, সেই থেকে আমরা পেয়েছিলাম আমাদের স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত। নির্যাতন-নিপিড়নের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলো আমার এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষজন।
কিন্তু মাত্র ১৫ বছরের ব্যবধানে নতুন করে ওরা আবার আমাদের জিম্মি করার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের এই ৩টি ইউনিয়নকে কানাইঘাট থানার অধিন থেকে কেটে নিয়ে ‘চারখাই’ নামের নতুন থানার অন্তর্ভক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা আর চাইনা প্রভু-দাসত্ব্যর জীবন। নদী পার হলে কেউ আমার ভাইকে নির্যাতন-নিপিড়ন করে আটক করে লাশ আটকিয়ে টাকা আদায় করুক।
এই ৩টি ইউনিয়নকে নিয়ে নতুন থানা নির্মাণ ও বাস্তবায়নের দাবীতে শিগ্রই রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন ক্রিড়া সংস্থার পক্ষ থেকে গণসাক্ষরকৃত স্বারক লীপি প্রদান করা হবে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার, সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর। আমরা ‘চারখাই’ নামের নতুন থানার অর্ন্তভ‚ক্ত হতে চাইনা।
হুমকি-ধামকি, লোভ-লালসা দেখিয়ে কোন লাভ হবেনা, আমরা প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাবো তবুও মাথা নত করবোনা। আমাদের এই ৩টি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো জনসংখ্যা আর থানা সদরের দুরত্বের কথা বিবেচনা করে একটি নতুন থানা বাস্তবায়নের। কিন্তু এই দাবী আজও যখন বাস্তবায়ন করা হয়নি। তখন আমরা আমাদের কানাইঘাট থানার অধিনে থাকতে চাই। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সদয় দৃষ্টি আকর্শন করে বলতে চাই, আমরা শান্তিপ্রিয় জনসাধারণ আমাদেরকে কানাইঘাটের সাথে থাকতে দিন।
কেন আমরা ‘চারখাই’ নামের নতুন থানার অন্তর্ভক্ত হতে চাইনা, আপনারা আমাদের সেই নির্যাতন-নিপিড়নের ইতিহাসটা একটু তদন্ত করে দেখুন।
মো: আব্দুল হালিম সাগর (সাংবাদিক)
সভাপতি: রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন ক্রিড়া সংস্থা।
থানা: কানাইঘাট, জেলা: সিলেট।