হাটহাজারী মাদরাসায় উচ্চতর হাদীস গবেষণা বিভাগে প্রজেক্টরের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস শুরু
1 min readজুনাইদ আহম্মদ-
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর কিসমুত তাখাসসুস ফী উলূমিল হাদীস ( উচ্চতর হাদীস গবেষণা) প্রজেক্টরের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় জামেয়ার সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জামেয়ার উচ্চতর বিভাগের ক্লাসে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হলো।
ক্লাসের শুরুতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী মাল্টিমিডিয়া স্ক্রিনে ‘ইলালুল হাদীসের’ উপর লিখিত কিতাবগুলো দেখে বর্তমান সময়ের প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, মাল্টিমিডিয়ার যত সিস্টেম রয়েছে সব গুলােই মৌলিকভাবে নিস্কলুষ, খারাপ কিছু নয়। তবে মানুষের অপব্যবহারের কারণেই সমাজে খারাপ প্রভাব পড়ছে। এই সমস্ত খারাপ অগ্রযাত্রাকে রুখে দিয়ে মাল্টিমিডিয়ার সদ্ব্যবহারের মাধ্যেমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে ৷
পৃথিবীতে যত প্রকার ইলম এবং ফন তথা শাস্ত্র রয়েছে তন্মধ্যে শাখাগতভাবে সবচেয়ে বিস্তৃত ইলম ও ফন হল ‘উলূমুল হাদীস’। এই শাস্ত্রের ব্যাপ্তিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে অত্র বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা ডক্টর নুরুল আবছার আযহারী ইমাম হাযিমী রহ. এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,
إعلم أن علم الحديث يشتمل على أنواع كثيرة تبلغ مائة ، كل نوع منها علم مستقل لو أنفق الطالب فيه عمره لما أدرك نهايته.
অর্থ: ইলমুল হাদীসের প্রায় শতটি প্রকার রয়েছে, আর প্রত্যেকটি প্রকারই হল একেকটি স্বতন্ত্র শাস্ত্র, যদি কেউ এর একটি প্রকার অর্জনে গোটা জীবনও ব্যয় করে তবুও এর শেষ সীমা খুঁজে পাবে না ৷ (কিতাবুল উজালাহ)
এই একশত প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ও বিস্তৃত এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকার হল- ইলমুল ইলাল। যা আহলে ইলমদের মাঝে কারো অজানা নয় ৷ ইল্লতযুক্ত হাদীসগুলা থেকে ইল্লত খুঁজে বের করার জন্য একেকটি হাদীসকে প্রথমে তাখরীজ করে সমস্ত সনদ বের করতে হয় এবং প্রত্যেক সনদের রাবীগণের দিরাসাহ করতে হয়, আয়িম্মাতুল জারহি ওয়াত তাদীলের সকল বক্তব্য নকল করতে হয় ৷ আরো বিভিন্ন বিষয় লক্ষ্য করার পর একটি হাদীসের উপরে হুকুম লাগানো হয় ৷ এই সমস্ত কাজ খাতা-কলমে কিংবা হোয়াইট বোর্ডে লিখে করাটা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অপরদিকে এই সমস্ত কাজ মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমে করা হলে খুবই সহজ ।
তিনি আরও বলেন, শুধু আমাদের জামিয়াতেই নয় বরং বিশ্বের অন্যান্য জামিয়াতেও মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমের ব্যবহার নিয়মিত হচ্ছে।
এসময় হাদীস বিভাগের প্রধান মুশরিফ(তত্বাবধায়ক) শাইখুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মুফতী জসীম উদ্দীন,জামিয়ার সহ-শিক্ষাপরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী, মুফতী আব্দুল্লাহ নাজীব, মাওলানা ডক্টর নুরুল আবসার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ক্লাসে প্রযুক্তির ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে ছাত্ররা জামিয়া কর্তৃপক্ষের উচ্চতর হাদীস বিভাগের সিনিয়র উস্তাদ মুফতী আব্দুল্লাহ নাজীব ও মাওলানা ডক্টর নুরুল আবসারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।