জুমা-পাঞ্জেগানা ও তারাবিহ’র জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিন: ৪০ জন বিশিষ্ট আলেমের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দেশে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে ‘পাঞ্জেগানা ও জুমার জামাতে মুসল্লীদের মসজিদে উপস্থিতি এবং আসন্ন মাহে রমযান উপলক্ষে তারাবিহ’র জামাত আয়োজন’ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম, মুফতি ও খতীবগণের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আহ্বানে ও সভাপতিত্বে বারিধারাস্থ তাঁর কার্যালয়ে আজ (১৬ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় এই বৈঠক শুরু হয়।

সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থাকা ৪০ জন শীর্ষস্থানীয় আলেম, মুফতী, মুহাদ্দিস ও খতীবগণ উপরোক্ত আলোচ্য বিষয়ে পৃথক পৃথকভাবে নিজেদের মতামত উপস্থাপন করেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি ও শরীয়তের নির্দেশনা ও ব্যাখ্যার উপর উন্মুক্ত পর্যালোচনা হয়। সবশেষে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রম নিম্নোক্ত ৪টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যথা-

১। শরিয়তের দৃষ্টিতে যারা মাজুর বা অপারগ, তারা জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে হাজির হবেন না। বিশেষত: যাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোন লক্ষণ বা উপস্থিতির সন্দেহ হয়, তারা অবশ্যই নিজ নিজ ঘরে নামায আদায় করবেন।

২। মাজুর বা অপারগ ছাড়া সকল সুস্থ মুসলমান সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য-বিধি ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে উপস্থিত থাকার উপর শরীয়তের নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। তাই আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের কাছে এই জোর দাবি জানাচ্ছে যে, জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে মসজিদে সুস্থ মুসল্লিগণের উপস্থিতি বাধামুক্ত করা হোক। আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করি, আসন্ন রমজানুল মোবারকের বরকতে আল্লাহ তালালা দেশ ও জাতিকে করোনাসহ সকল বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি দান করুন।

৩। আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরামগণ যে সকল ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং যারা ঝুঁকি নিয়েও মানবতার সেবায় নিয়োজিত আছেন, সকলের প্রতি আন্তরিক মোবারকবাদ ও শোকরিয়া জ্ঞাপন করছে। আল্লাহ তাআলা তাঁদের সকলকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

৪। আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরাম দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, আসুন আমরা সবাই তওবা-ইস্তগফার ও দান-সদকার প্রতি মনোযোগী হই এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সকল স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহায় হোন। আমীন।

ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী আলেমগণ হলেন- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার পরিচালক শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, জামিয়া নূরিয়া কামরাঙ্গীর চর মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জামেয়া শায়েখ যাকারিয়া’র পরিচালক আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়ার শায়খুল হাদীস ও প্রধান মুফতী আল্লামা মুফতী মানসুরুল হক, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক আল্লামা মুফতি আরশাদ রহমানী, মার্কাজুদ-দাওয়া আল-ইসলামিয়ার শিক্ষা সচিব আল্লামা মুফতি আব্দুল মালেক, মারকাজ শায়েখ যাকারিয়া রিচার্স সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, আকবর কমপ্লেক্স মিরপুরের পরিচালক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন, আশরাফুল উলূম মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, ইসলামবাগ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মানিক নগর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ইসহাক, সহকারী পরিচালক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, জামিয়া কামরাঙ্গীর চর মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, লালমাটিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মারকাজু ফিকরিল কুরআনীর পরিচালক মুফতী খুরশিদ আলম কাসেমী, টঙ্গী দারুল উলূম মাদ্রাসার পরিচালক ও শায়খুল হাদীস মুফতি মাসউদুল করীম, মালিবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও শায়খুল হাদীস মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, মিরপুর আল-ইহসান মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, জামিয়া সুবহানিয়ার প্রধান মুফতি মুহিউদ্দীন মাসুম, জামেয়া মাদানিয়া বারিধারার সহকারী পরিচালক হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, মুহাদ্দিস মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি ইকবাল হোসাইন কাসেমী, মুফতী হাবীবুল্লাহ মাহমূদ কাসেমী, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মাসউদ আহমদ, জামেয়া আহসানুল উলূম-ঢাকার শায়খুল হাদীস মুফতি হামিদ জহিরী, বরিশাল মাহমূদিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী, রামপুরা সালামবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা শহীদুল ইসলাম, মাওলানা সাঈদুল হক, মাওলানা মাহমুদ হাসান, মুফতী শরীফ উল্লাহ, মুফতী কাজী ইকবাল হোসাইন, মুফতী মাহমুদুল হাসান, মুফতী মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *